নারায়ণগঞ্জ শহরের বন্দর খেয়াঘাট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক লাখ মানুষ নদীপার হয়। সাধারণত এই ঘাট দিয়ে যারা নিয়মিত যাতায়াত করেন তাদের একটি অংশ ডিঙ্গি নৌকায় নদী পার হন। ডিঙ্গি নৌকায় সময় ও ভাড়া বেশি লাগে। তবে এই যাত্রা আরামদায়ক এবং নিরাপদ। অন্যদিকে শহর বন্দরের বেশিরভাগ মানুষ ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে খেয়াপার হন কিন্তু এ সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে হয় যাত্রীদের। তথ্য বলছে, গত ৫ মাসে কলেজছাত্র, হোসিয়ারী শ্রমিকসহ মোট ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরা সবাই বন্দর সেন্ট্রাল ঘাট দিয়ে নদী পার হওয়ার আগে ট্রলারে উঠতে গিয়ে পা পিছলে শীতলক্ষ্যার কালো পানিতে তলিয়ে যায়। সবশেষ গত ৮ নভেম্বর শুক্রবার রাতে ট্রলারে উঠতে গিয়ে জয় নামে এক যুবক পানিতে পরে যায়। পরদিন শনিবার লঞ্চঘাটের সামনে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
বন্দরের আমিন আবাসিক এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, রাত্রে নয়টার পর একটা ট্রলারে একসাথে দেড়শ নারী-পুরুষ নদীপার হয়। এতো মানুষ একসাথে ট্রলারে উঠতে নামতে গেলে তো মরবেই। যখন যেই সরকার ক্ষমতায়, তখন তাদের লোকজন কোটি কোটি টাকায় ঘাট ইজারা নিয়ে ব্যবসা করে। আপনে একবার ঘাট নিতে পারলে কোটিপতি। বিআইডব্লিউটি-এ সরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও তারা ঘাট নিয়ে বাণিজ্য করে। কিন্তু আমাদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে পারেনা।
সেন্ট্রাল ঘাটের সামনে নৌ-থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দুর্ঘটনা প্রতিদিন হয়। মানে পানিতে পরে যাওয়া বা ট্রলারে উঠা-নামার সময় আঘাত পাওয়া ইত্যাদি। তবে আপনারা শুধু মারা গেলে সেটা জানতে পারেন। আমি শুনেছি এই ঘাট ২ কোটি টাকায় ইজারা হয়েছে। ইজারা পেয়ে ইজারাদার প্রতিদিন কয়েকলাখ টাকা বাড়ি নিয়ে যান। কিন্তু এখানে যাত্রীদের জন্য যা যা করা লাগবে সেটা কেউ চিন্তাও করেনা। এখানে শুধু ইজারাদার ছাড়াও আমাদের বিআইডব্লিউটিএ এবং আমাদেরও অনেক কিছু করার আছে। কিন্তু মানুষের জন্য কে কি করে?
এ বিষয়ে সেন্ট্রাল ঘাটের এক স্টাফ বলেন, ঘাটে অনেক কাজ রয়েছে। এগুলো করবে বিআইডব্লিউটিএ। কিন্তু তাদের দিয়ে তো ছোট্ট একটা কাজও করানো যায়না। তারা ইজারা দিতে পারলেই কাজ শেষ। আমরা ইজারা এনে তারপর আবার এখানে আমাদের টাকায় কিভাবে কাজ করাবো। তবুও আমরা অনেক টাকা খরচ করি। এটা তো আর দেখানো যায়না। এখন মানুষ যাতে ট্রলারে উঠতে গিয়ে নদীতে না পরে সেই ব্যবস্থা করতে হবে সরকারের। আমরা তো এতো বড় কাজ করতে পারমুনা।
এ বিষয়ে জানতে বিআইডব্লিউটিএর পোর্ট অফিসারকে একাধিবার ফোন করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।








































আপনার মতামত লিখুন :