নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের একমাত্র পুত্র অয়ন ওসমানের নেতৃত্বে তৎপর হয়েছেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ। আওয়ামীলীগের এটি ছাত্র সংগঠন হলেও গত বছর তাদের নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছেন বর্তমান অন্তবর্তী সরকার। অন্যদিকে আগামী ১৩ নভেম্বর ঢাকায় লকডাউন কর্মসূচী সফল করতে চলতি নভেম্বর মাস শুরুতে নারায়ণগঞ্জে ছাত্রলীগের মর্শাল মিছিল শুরু হয়। ৮ নভেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা কাশিপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ মিছিল বের করে। ওই মিছিলে অয়ন ওসমানের নেতৃত্বে আগামী দিনে আন্দোলনের স্লোগান দেয় মিছিলকারীরা। ইতোমধ্যে সেই মিছিলটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল করেছে অয়ন ওসমাসের বিশস্থরা।
১ নভেম্বর রাত দেড়টায় ফতুল্লার রঘুনাথপুর এলাকার ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাসপোর্ট অফিসের সামনে ছাত্রলীগের ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী মশাল হাতে নিয়ে একটি ঝটিকা মিছিল বের করে। এ সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ঝটিকা মশাল মিছিল থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর দ্রুত জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং মিছিলটি প্রতিহত করেন। পরে যুবদলের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে ফাহিম আহম্মেদ, নিরব হোসেন, ফয়সাল, অনিক আহমেদ অনিন এবং আবিরসহ পাঁচজন কর্মীকে আটক করে পুলিশের কাছে দেয়। খবর পেয়ে ফতুল্লা থানা পুলিশের টহল দলের উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দন চন্দ্র সরকার দ্রুত ঘটনাস্থলে যান এবং আটকদের হেফাজতে নেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্যানার, কয়েকটি মশাল, লাঠি এবং একটি পিকআপভ্যানও জব্দ করে। এ বিষয়ে ফতুল্লা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসান জানান, মিছিল করার সময় ছাত্রলীগের ৫ জনকে আটকের পর তাদের থানায় আনা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বর্তমানে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এরপর ৬ নভেম্বর বন্দর নাসিম ওসমান সেতু এলাকায় ঝটিকা মিছিল করে ঝটিকা মিছিল। পরদিন ৭ নভেম্বর ফতুল্লায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ হঠাৎ করেই ঝটিকা মশাল মিছিল করেছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের শহীদ রিয়া গোপ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনের সড়কে এ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ ১০-১২ জন তরুণ মশাল হাতে সড়কে নেমে “শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে” স্লোগান দিতে শুরু করে। মিছিলটি প্রায় দুই মিনিট স্থায়ী হয়। পরে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
মিছিল শেষে রাতেই ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন পলাতক সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমান। যিনি নারায়ণগঞ্জে একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র মামলার আসামি। ভিডিওটি প্রকাশের পর স্থানীয়ভাবে বিষয়টি ব্যাপক আলোচনা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের নামও উঠে এসেছে। তার নির্দেশেই মশাল মিছিলটি আয়োজন করা হয়। এর আগেও ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় একই ধরনের ঝটিকা মিছিল ও প্রদর্শনী করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
তবে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত করেছে বৃহস্পতিবার রাতে ফতুল্লায় ঝটিকা মশাল মিছিল করা হয় এবং তারা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি ও উত্তেজনা ছড়ানোর উদ্দেশ্যে সম্প্রতি এ ধরনের মিছিল বাড়ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক সময়ের এসব আকস্মিক মিছিল ও স্লোগান আওয়ামী লীগপন্থি কিছু গোষ্ঠীর তৎপরতা বৃদ্ধি এবং মাঠের পরিস্থিতি নিজেদের পক্ষে রাখার প্রচেষ্টারই অংশ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাতে হঠাৎ মশাল মিছিল দেখে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এলাকায় সাময়িকভাবে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “হঠাৎ দেখি কিছু ছেলে মশাল জ্বালিয়ে স্লোগান দিচ্ছে। পরে পুলিশ আসে, কিন্তু তারা ততক্ষণে চলে গেছে।








































আপনার মতামত লিখুন :