News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২

এমপি প্রার্থী হচ্ছেন মোহাম্মদ আলী


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৫, ১০:২৩ পিএম এমপি প্রার্থী হচ্ছেন মোহাম্মদ আলী

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনে প্রার্থী হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী। তার সাম্প্রতিক সময়ের কার্যক্রমে এমনটাই পরিলক্ষিত হচ্ছে। তিনি বিভিন্নভাবে নিজের অবস্থান জানান দিয়ে আসছেন। যদিও এখন পর্যন্ত স্পষ্টভাবে তিনি কিছু বলছেন না। তবে তার অনুসারীরা মোহাম্মদ আলীকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।

সবশেষ বুধবার শহরের জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ডের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের আয়োজন করা হয়। আর এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী।

সেই সাথে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর। তিনি তার বক্তব্যে নির্বাচনের আভাষ দিয়ে বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস লিখে যেতে চাই। সেজন্য আমরা যদি মুক্তিযোদ্ধা সংসদে থাকি তাহলে আমরা ভবিষ্যত প্রজন্মকে আমাদের ত্যাগের কথা জানিয়ে যেতে পারবো।

একই সাথে সমাবেশে অন্যান্য বক্তারাও বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর পক্ষ নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। সকলেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোহাম্মদ আলীর সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ আগে থেকেই নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনে আলোচনায় রয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী। কিন্তু নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে তার সম্ভাবনা যেন মিইয়ে যাচ্ছে। তার নির্বাচনের পথে ধাক্কা হিসেবে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর নাম আলোচনায় রয়েছে।

নির্বাচনের সমীকরেণে মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী বিএনপি দলীয় সমর্থন পেয়ে গেলেও তার বিপরীতে মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী স্বতন্ত্র হিসেবে মাঠে থেকে গেলে বড় ধাক্কা হিসেবে আবির্ভাব হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

অন্যদিকে বিভিন্ন সময় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিবন্ধিত ছোট ছোট রাজনৈতিক দল জোটবদ্ধভাবে ভোটে অংশ নিয়ে শরীক দলের প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারতো। কিন্তু এখন থেকে, জোটগত ভাবে নির্বাচনে অংশ নিলেও নিজ নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে, এমন বিধান করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিওর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়টি শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়ে গেলে মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীকে ধানের শীষ প্রতিক বাদ নিয়ে নিজ দলীয় প্রতিকে নির্বাচন করতে হবে যা সুবিধাজনক হবে না। তার বিপরীতে মোহাম্মদ আলী স্বতন্ত্রভাবে মাঠে থেকে গেলেও ভোটের ফলাফল তার হয়ে যাবে।

জানা যায়, আশির দশকে ব্যবসায়ী নেতা থেকে এমপি হওয়ার প্রত্যাশায় জাতীয় পার্টির চেয়াম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের হাত ধরে জাতীয় পার্টির নেতা হিসেবে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী। প্রয়াত হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ তৎকালীন সময়ে স্বৈরাচারের খেতাব প্রাপ্ত হয়ে ক্ষমতা হারানোর পর ১৯৯১ সালর ২৭ জানুয়ারী সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ- ৪ আসন (ফতুল্লা- সিদ্ধিরগঞ্জ) থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। সে সময় ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের মানুষের মুখে মুখে মোহাম্মদ আলীর স্লোগান থাকলেও নির্বাচনে জয়ী হন বিএনপির প্রার্থী বীরমুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম।

আওয়ামীলীগের প্রার্থী ফুটবলার আশরাফ উদ্দীন আহম্মেদ চুন্নুর থেকে কম ভোট পেয়ে নীরব ভুমিকা পালন করেছিলেন মোহাম্মদ আলী। পরে ক্ষমতাসীন দল বিএনপিতে যোগ দেয়ার জন্য সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন এই নেতা। তৎকালীন সময়ে জেলা বিএনপির সভাপতি রোকন উদ্দীন মোল্লা ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক মাজেদুল ইসলামের রাজনৈতিক প্রভাবের কাছে কোনঠাসা হয়ে পড়েন জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম। উপায় না দেখে স্বরনাপন্ন হন ভাগিনা মোহাম্মদ আলীর। তৈরী হয়ে যায় বিএনপিতে যোগ দেয়ার রাস্তা।

১৯৯৫ সালে ফতুল্লা ডি আই টি মাঠে বিশাল সমাবেশে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে এনে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিএনপিতে যোগদান করেন তিনি। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারীর বিএনপির এক তরফা নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী হয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এমপি হন মোহাম্মদ আলী। সংসদের মেয়াদ ১৭ দিনের হলেও সংসদ সদস্যের চিরস্থায়ী খেতাব অর্জন করেন মোহাম্মদ আলী। ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে ঋন খেলাপীর দায়ে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও হয়ে ওঠেন স্থানীয় বিএনপির প্রভাবশালী নেতা।

২০০১ সালে নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে মনোনয়ন পান জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে যোগ দেয়া সফর আলী ভূইয়া। সে সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর কারিশমায় নির্বাচনের ২৩ দিন আগে মনোনয়ন ভাগিয়ে দেন সদ্য বিএনপিতে যোগ দেয়া কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী শামীম ওসমানকে পরাজিত করেছিলেন গিয়াস উদ্দিন।

Islam's Group