নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কার্যকলাপের বাধা দেওয়ায় তিন ছাত্রদল ও যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে। গত ৩১ মে সন্ধ্যায় উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের কাহেনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, জামপুর ইউনিয়নের যুবদল কর্মী নিবিড় ভূঁইয়া, সাব্বির হোসেন ও ছাত্রদল কর্মী জিহাদ।
এ ঘটনায় গত ১জুন আহত নিবীড় ভুঁইয়ার বাবা মনির ভূঁইয়া ১০জনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগপত্র দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলেন, সোনারগাঁয়ের মোস্তফা মিয়ার ছেলে মো. আব্দুল্লাহ (২৪), পার্শ্বরচর এলাকার ইউসুফ (২৩), একই এলাকার মো. হৃদয় মিয়া (২৫), মজিবর মিয়ার ছেলে গোলাম হোসেন (২৩), মৃত কাশেম আলীর ছেলে মো. মোস্তফা মিয়া (৫০), আব্দুল মোতালেবের ছেলে সাকিব (২২), রুপক চৌধুরীর ছেলে আরাফত হোসেন মারিন (২০), হারুন মিয়ার ছেলে মো. ফাইজুল (২৪), বেলাবো এলাকার মো. গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মো. শামীম (২৪), শাহীন মিয়ার ছেলে সাজন (২৬)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা পেশাদার মাদক ব্যাবসায়ী ও কিশোর গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য। অভিযুক্তরা মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কার্যকলাপে বাধা প্রদান করায় বিবাদী বিবাদীদের সঙ্গে আমাদের বিরুদ্ধে সৃষ্টি হয়। অভিযুক্তরা আমিসহ আমার পরিবারের লোকজনদের খুন জখমসহ বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রদান করতে থাকে। গত ৩১ মে সন্ধ্যায় তার ছেলে নিবিড় ভুইয়া আমবাগ পুরান বাড়ী থেকে কাহেনা এলাকায় নিজ বাড়ীতে আসার পথে সোনারগাঁয়ের কাহেনা এলাকার তিন রাস্তার মোড়ে পৌছালে উপরোক্ত বিবাদীগণসহ অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জন বিবাদী ধারালো চাপাতি, রামদা, ছোরা, ছেনদা, চাইনিজ কুড়াল, লোহার রড, হকিস্টিক, এসএস পাইপসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার ছেলের গতিরোধ করে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে ৪নং বিবাদী মো. মোস্তফা মিয়ার হুকুমে তার ছেলেকে এলোপাথারিভাবে মারপিট শুরু করে। এসময় ১নং আসামি আব্দুল্লাহ’র হাতে থাকা ধারালো ছেনদা দ্বারা তার ছেলেকে কোপ মেরে মারাত্মক গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম করে, ৪নং আসামি গোলাম হোসেন ছেনদা দিয়ে তার ছেলেকে মাথায় কোপ মারে। আর ৮নং বিবাদী শামীম ধারালো চাপাতি দিয়ে তার ছেলের মাথায় কোপ মেরে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। ২নং বিবাদী ইউসুফ ছোরা দিয়ে তার ছেলের পায়ে কোপ মেরে মারাত্মক গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে।
বিবাদী সাকিব, আরাফাত হোসেন, ফাইজুলগংদের হাতে থাকা লোহার রড, লোহার এসএস পাইপ দ্বারা তার ছেলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে জখম করে। ৭নং বিবাদী ফাইজুল ইসলাম গলায় থাকা ৮আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন এবং বিবাদী সাকিব তার ছেলের কাছে থাকা নগদ ৫হাজার টাকা নিয়ে যায়। তার ছেলেকে সাহায্য করার জন্য তার প্রতিবেশি সাব্বির মিয়া এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা তাদের এলোপাথারিভাবে মারপিট করে। এসময় অভিযুক্ত সাকিব রামদা দিয়ে মাথায় পরপর দুটি কোপ দেয়। বিবাদী আরাফাত হোসেন লোহার রড দিয়ে সাব্বিরকে মাথায় বাড়ি মারে। বিবাদী মো. শামীমের হাতে থাকা হকিস্টিক দ্বারা জিহাদকে আঘাত করে গুরুতর জখম হয়। তার ছেলেসহ সাব্বির, জিহাদের ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে বিবাদীগণ খুন জখম করার হুমকি দিয়ে চলে যায়। তার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তার ছেলেসহ সাব্বির, জিহাদদের গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তার ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।
বাদী মনির ভূঁইয়া বলেন, জামপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হানিফের আপন ছোট ভাই আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে এ হামলা করা হয়। অভিযুক্তরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুল রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
আপনার মতামত লিখুন :