নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার জলাবদ্ধ নগরী লালপুর ও পৌষারপুকুর পাড় এলাকায় সড়ক পথে হাঁটার দিন শেষ হয়েছে। আপাতত সেখানে চলছে ভ্যান। জামায়াতে ইসলামী দুটি ভ্যান দিয়েছে মানুষ পারাপারের জন্য। তবে বৃষ্টি বাড়লে এখানে বিগত দিনের মত যুক্ত হতে পারে নৌকা।
পানির পরিমান হাঁটু পেরিয়ে কোমর পর্যন্ত ঠেকেছে কোথাও কোথাও। রিকশা চালকদের তিনগুন ভাড়ার প্রলোভন দেখিয়েও আনা যাচ্ছেনা লালপুরের রাস্তায়।
এলাকার বাসিন্দা ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী আফরিনা জানান, সকাল থেকে দেখি পানি প্রায় কোমর সমান হয়ে আছে। রাতে কোন বৃষ্টি না হতেও এত পানি। আগামী কয়েক মাস ধরে এভাবেই নোংরা পানি মাড়িয়ে চলতে হবে। গত কয়েকবছরে যেই সমস্যার সমাধান হয়নি সেগুলো সমাধান আদৌও হবে তা আমার বিশ্বাস হয় না।
ফতুল্লার লালপুর, পৌষারপুকুর পাড়, আলামিন নগর, উত্তর ইসদাইর এলাকার সকল পানি এসে জমা হয় পৌষারপুকুর সংলগ্ন রাস্তায়। আশেপাশের সকল উঁচু জমি থেকে এই এলাকাটি নিচু হওয়ায় বছরের ৮ মাস জলাবদ্ধতার ভোগান্তি বাসিন্দাদের সঙ্গী হয়েছে।
সরেজমিনে লালপুর, পৌষারপুকুর পাড় এবং আলআমিন নগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায় অন্তত ৩টি বৃহৎ জলাধার ঘিরে আছে পুরো এলাকা জুড়ে। সাধারণত একটি শহর বা শহরতলীতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা ও অতিরিক্ত পানি গ্রহণের দায়িত্ব পালন করে জলাধারগুলি। সেখানে দীঘির সমান জলাধারগুলো সেই দায়িত্ব পালন না করে উল্টো পানি উপচে প্রবেশ করছে বাড়িঘরে।
লালপুর এলাকার বাসিন্দা এবং আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ার খালিদ মাহমুদ বলেন, আশেপাশে যেই ৩টি বৃহৎ পুকুর বা জলাধার আছে সেগুলো এই এলাকার জন্য আশীর্বাদ। কিন্তু মানুষ এর অপব্যবহার করে অভিশাপে রূপ দিয়েছে। গত ১১ বছরে ৩টি পুকুরের একটিও পরিষ্কার করা হয়েছে কিনা সন্দেহ। পুরো পুকুরের উপরে তৈরী হয়েছে জঙ্গল। এর পরিমাণ এতটাই বেশী যে প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মানুষের এর উপর হেঁটে যেতে পারবেন। তার উপর স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিনিয়ত ময়লা ছুড়ে ফেলে পুকুরে। পলিথিন বর্জ্যে পুকুর এক প্রকার ভরাট হয়ে আছে। দৃশ্যত আমরা বিশাল পুকুর দেখতে পেলেও এটি পানি ধরে রাখার অবস্থায় নেই। যেটুকু অংশে তার পানি ধারন করার কথা ছিল সেখানে জঙ্গল জায়গা করে নিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :