News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়াতে গুলি, ছাত্রদল নেতা বহিস্কার


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ করেসপনডেন্ট প্রকাশিত: জুন ১১, ২০২৫, ১০:৫১ পিএম ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়াতে গুলি, ছাত্রদল নেতা বহিস্কার

রূপগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়াতে গুলি চালানো ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম বাবুকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বাবুকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি। বুধবার (১১ জুন) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বাবুকে প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির বিষয়টি অনুমোদন করেন। এছাগা ছাত্রদলের সব নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে জাহিদুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অনুরোধ জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকেলে উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া এলাকায় ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ যুবক মামুন হোসেন (৩৫) মাঝিপাড়ায় এলাকায় মামুনের গ্যাস সিলিন্ডারের বিক্রির ব্যবসা করতেন।

জানা যায়, সাবেক মন্ত্রী ও এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর অনুসারী ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন খোকাকে বিকেলে মাঝিপাড়ায় লোকজন দেখে আটক করে। সেখানে যুবদল নেতা বাদলের অনুসারীরা জড়ো হয়ে খোকাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে দলবল নিয়ে সেখানে হামলা করে সাবেক ছাত্রদল নেতা জায়েদুল ইসলাম বাবু ও তার লোকজন। বাবু জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমানের ভাতিজা। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময়ে বাবুর লোকজন খোকাকে ছাড়িয়ে নেয়। একের পর এক গুলি ছুড়তে থাকে।

মামুনের বড় ভাই বাদলের অভিযোগ, বাবু ও তার লোকজনদের গুলি ও হামলায় তার ভাই মামুন গুরুতর আহত হয়। তার দাবী বাবু ও তার বাহিনীর লোকজন ছাত্রলীগের ক্যাডারদের আশ্রয় দিচ্ছে।

জাহিদুল ইসলাম বাবু মর্তুজাবাদ গ্রামের মঞ্জুর হোসেনের ছেলে ও নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমানের ভাতিজা। তার ক্ষমতার জোরেই রূপগঞ্জে সব ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে বাবু।

মামুন ভুঁইয়াকে হত্যার ঘটনায় নিহতের ভাই মো. বাদল ভুঁইয়া বাদি হয়ে ১৬জনকে নামীয় ও অজ্ঞাত আরো ১২জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

আসামিরা হলো মর্তুজাবাদ গ্রামের মঞ্জুর হোসেনের ছেলে সন্ত্রাসী জাহিদুল ইসলাম বাবু, মাঝিপাড়া গ্রামের কবির হোসেনের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন খোকা, গোলাকান্দাইল গ্রামের নাসু ফকিরের ছেলে রাসেল ফকির, মাঝিপাড়ার টেকপাড়া গ্রামের রতনের ছেলে রোহান, আমলাবো গ্রামের রোমানের ছেলে শাফিন, ছোনাবো গ্রামের আক্কাসের ছেলে আরিফুল, আমলাবো গ্রামের নিক্সন, লাভরাপাড়া গ্রামের তাহের আলীর ছেলে বাদশা, গোলাকান্দাইল পূর্বপাড়া গ্রামের করিম ফকিরের ছেলে লোহান ফকির, ছোনাবো গ্রামের মকবুলের ছেলে ইমরান, মাঝিপাড়া টেকপাড়া গ্রামের ওসমানের ছেলে রাহাত, ভায়েলা মিয়াবাড়ির মোতাহারের ছেলে নিবির, মাছিমপুর গ্রামের সামছুল হকের ছেলে গুই রাকিব, ব্রাহ্মণগাও গ্রামের কালাই মোল্লার ছেলে সবুজ মোল্লা, মাঝিপাড়া গ্রামের মো. গাজীর ছেলে ইয়াছিন। এছাড়াও অজ্ঞাত আরো ১২জন রয়েছে। তারা আগ্নেয়াস্ত্র, দা, ছেনি, লাঠিসোটা নিয়ে মাঝিপাড়া নয়াবাজার এলাকায় মামুন ভুঁইয়াকে আটক করে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে সন্ত্রাসী জাহিদুল ইসলাম বাবু পর পর দুটি গুলি করে। সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি পিটিয়ে মৃতভেবে রাস্তায় ফেলে সন্ত্রাসীরা ফাকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে এলাকা ত্যাগ করে। পরে এলাকাবাসী উদ্ধার করে মামুনকে প্রথমে ইউএসবাংলা হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মামুন ভুঁইয়া মারা যান।

বুধবার আসর নামাজের পর মাঝিপাড়া মাদ্রাসা মাঠে জানাযা নামাজ শেষে সামাজিক কবরস্থানে লাশ দাফন করে।

Islam's Group