News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

শহরতলীতে বাড়ছে রাজনৈতিক সহিংসতা


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৫, ১০:৫৬ পিএম শহরতলীতে বাড়ছে রাজনৈতিক সহিংসতা

নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে অস্থিরতা বেড়েই চলছে। রোজা পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সহিংসতা কমে এলেও হঠাৎ করেই তা আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। অভ্যন্তরীন কোন্দলের পাশাপাশি ভিন্ন মতাবলম্বী রাজনৈতিক দলগুলোর উপরেও চলছে হামলা। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বেসামাল আচরণে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একের পর এক ঘটনায় দলের ইমেজ নষ্ট হলেও মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের লাগাম টেনে ধরার যেন কেউ নেই।

কোরবানি ঈদের পর থেকেই নারায়ণগঞ্জে একের পর এক রাজনৈতিক সহিংসতা লেগেই আছে। সোনারগাঁ, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজারে রাজনৈতিক সহিংসতার খবর উঠে এসেছে গণমাধ্যমের পাতায়। প্রায় প্রতিটি ঘটনার সাথেই জড়িয়েছে বিএনপি কর্মীদের নাম। বিগতদিনে এই ধরনের খবরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে দেখা গেলেও এখন সেই স্থান বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল দখলে যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে।

গত ৮ জুন রাতে যুবলীগ নেতার অনুসারীদের সাথে ছাত্রদল নেতার অনুসারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উপজেলার বারদী ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি গ্রামের ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের সাথে ছাত্রদল নেতা ইউনুসের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের লোকজন হতাহত হয়। ভাংচুর করা হয় বাড়িঘর। রক্তাক্ত জখম করা হয় বেশ কয়েকজনকে। এই সংঘর্ষকে পারিবারিক বিরোধ বলেও দাবী করেছেন কেউ কেউ।

১০ জুন দুপুরে রূপগঞ্জের ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন খোকাকে জনগনের হাত থেকে ছাড়িয়ে নিতে এলোপাতারি গুলি চালায় সাবেক জেলা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বাবু। এই ঘটনায় মামুন ভুঁইয়া নামে এক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাতেই তিনি মারা যান। ঘটনার পর ছাত্রদল নেতাকে বহিস্কার করে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটি। পরিবারের তরফ থেকে মামলা দায়ের করা হলেও এখনও তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

অন্যদিকে এই ঘটনার পর রূপগঞ্জ বিএনপির দুই পক্ষ ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। একদিকে বাবু সহ মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে বাবু যেই বলয়ের সাথে যুক্ত থেকে রাজনীতি করতো তারা আত্মপক্ষ সমর্থনে নানান খোড়া যুক্তি উপস্থাপন করে যাচ্ছে। রাজনীতির এমন চিত্রে হতাশ হয়েছেন সাধারণ ভোটার ও কর্মীরা।

সবশেষ ১৪ জুন দুপুরে আড়াইহাজারের মাহমুদপুর ইউনিয়নের গহরদী এলাকায় জামায়াতের গণসংযোগে অতর্কিত হামলা চালায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। স্থানীয় বিএনপি নেতা শাহজাহান শিকারী ও ইউসুফ শিকারীর নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ৫ জন আহত হয় বলে জানিয়েছে জামায়াত। ঘটনার পর প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে জামায়াতের জেলার নেতৃবৃন্দ। সেই সাথে প্রশাসনকে এই বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেয়ার আহবান জানান তারা।

একের পর এক ঘটনায় বিএনপি সমালোচিত হলেও এসবের লাগাম টেনে ধরার যেন কেউ নেই। দলের একটি পক্ষ এসব অপকর্মের বিপক্ষে অবস্থান নিলেও আরেকটি পক্ষ এসব কর্মকান্ডের সমর্থন করে যাচ্ছে। এই সমর্থন যে দিন দিন বিএনপিকে ভোটারদের কাছ থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে তা বুঝেও নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থের জন্য চালিয়ে যাচ্ছে। জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দরাও নিশ্চুপ। নেই কোন বিবৃতি কিংবা দলের নেতাকর্মীদের সংযত হওয়ার বার্তা। ক্রমাগত অস্থিরতা জেলার রাজনীতিকে কোন পথে নিয়ে যাবে তা দেখার অপেক্ষায় ভোটাররা।

Islam's Group