বিচারহীনতার দায় শামীম ওসমানের

২০০১ থেকে ২০২৪। মাঝে ১৬ বছর ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু এ সময়েও চাষাঢ়া আওয়ামী লীগ অফিসে মামলায় সাক্ষ্য দিতে গড়িমসি করেন শামীম ওসমান। বর্বর সেই রক্তের বন্যার বদলা বিচারেও না হওয়াতে ক্ষোভ নিহত পরিবারের। তাঁরা বলছেন, রক্তের বন্যার পর নিহত পরিবারের ধারণা ছিল দ্রæত বিচার শেষ করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের কাঠগড়ার সঙ্গে ফাঁসির দড়িতে ঝুলানো। গত ২৪ বছরেও নৃশংস সেই বোমা হামলার বিচার হয়নি। এর পেছনে সংশ্লিষ্টদের সাক্ষ্য প্রদানে গাফিলতি রয়েছে চরমে।

২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন উপস্থিত হননি অনেক সাক্ষী। ওই সময়ে শামীম ওসমান সহ অপর সাক্ষীদের প্রথমবারের মত সমন পাঠানো হয়। শুনানী ধার্য করা হয় ওই বছরের (২০১৭) ১৩ নভেম্বর। কিন্তু সেদিনও শামীম ওসমান হাজির হননি। ২০২০ সালের ১১ মার্চ মামলায় পূর্ব নির্ধারিত সাক্ষ্য গ্রহণের ধার্য দিনে ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সেদিনও শামীম ওসমান যাননি। এছাড়া ওই বছরের ২৩ মার্চ সাক্ষ্য দেয়ার নির্ধারিত তারিখ থাকলেও করোনার জন্য উপস্থিত হতে পারেননি। আদালত সাক্ষী দেওয়ার জন্যই তিন বার সমন জারি করেন।

২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন শামীম ওসমান। সেদিন তিনি বলেন, ‘১৬ জুনের ঘটনায় প্রধান ভিক্টিম হিসেবে আমার যে সাক্ষ্য নেয়া হয়েছিল, আমি দেখলাম তার সাথে ঘটনার কোনো মিল নাই। ঘটনার পরে আমি সাক্ষ্যতে যে জবানবন্দী দিয়েছিলাম এখন দেখি বিচার চলাকালে সেই কথা কিছুই নাই। আমাদের বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। ফলে আমি চাই এ ঘটনায় যারা প্রকৃত দোষী তাদের যেন বিচার হয়। আমি আদালতের কাছে অনুরোধ করেছি যিনি মামলা তদন্ত করেছেন তাকে আদালতে তলব করা হোক। এ মামলায় অনেকের নাম আছে যারা অপরাধী না। যারা প্রকৃত অপরাধী তারা এ মামলা থেকে সেভ হয়ে গেছে। আদালত আমার বক্তব্য শুনে কনভেন্স হয়েছেন। আদালত পরে ওই আদালতের এপিপিকে নির্দেশ দিয়েছেন পিটিশন দেওয়ার জন্য।’

২০০১ সালের ১৬জুন বোমা হামলার ১২ বছর পর ২০১৩ সালের ২মে ৬জনকে অভিযুক্ত ও ৩১জনকে অব্যাহতি প্রদান করে চার্জশীটটি দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। অভিযুক্ত ৬জন হলেন নারায়ণগঞ্জে ক্রসফায়ারে নিহত যুবদল ক্যাডার মমিনউল্লাহ ডেভিডের ভোট ভাই শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান (ইতোমধ্যে অপর এক মামলায় মৃত্যুদন্ড কার্যকর), জঙ্গী নেতা ওবায়দুল্লাহ রহমান, ভারতের দিল্লী কারাগারে আটক সহোদর আনিসুল মোরসালিন, মুহিবুল মুত্তাকিন ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এর ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু।