News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

ভয়াবহ বোমা হামলায় জড়িত সহোদর


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৫, ০৮:৩৩ পিএম ভয়াবহ বোমা হামলায় জড়িত সহোদর

নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে বোমা হামলার বিচার শেষ হওয়ার আগেই ফাঁসিতে ঝুলতে হয়েছে ওই মামলার প্রধান আসামী জঙ্গী নেতা মুফতি হান্নানকে। ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে কাশিমপুর কারাগারে ওই ফাঁসি কার্যকর হয়। ব্রিটিশ হাইকমিশনারের উপর বোমা হামলার মামলায় আলোচিত এ জঙ্গী নেতার ফাঁসি হলেও চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বোমা হামলায় বিচার শেষ না হওয়ায় ও তার কী সাজা হবে সেটা জানতে না পারাটা আক্ষেপ ওই ঘটনায় আহতদের।

৭ খুনের মামলায় ভারতে পলাতক নূর হোসেনকে দ্রুত দেশে আনা হলেও চাষাঢ়া আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলার দোষ স্বীকার করা সহোদরকে এখনো ভারতের দিল্লী কারাগার থেকে দেশে আনা সম্ভব হয়নি। সাত খুন মামলার বিচার কাজ শেষ হয়েছে মাত্র পৌনে ৩ বছরে। সাক্ষী ছিল ১২৭জন। মাত্র ৩৮টি কার্য দিবসেই শেষ হয় সাক্ষ্য গ্রহণ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারিক আনুসাঙ্গিক কাজ। কিন্তু বহুল আলোচিত চাষাঢ়া আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলায় ২০ জনের নিহতের বিচার হয়নি ২৪ বছরেও। ৭খুনের প্রধান আসামী নূর হোসেনকেও ভারত থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় দেড় বছরের মাথায়। আর ২০ হত্যার অন্যতম দুই আসামীকে বছরের পর বছর ঘুরলেও আনা হয়নি ভারতেরই কারাগার থেকে।

২০০৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারী ভারতের রাজধারী দিল্লীর একটি রেলস্টেশন হতে হরকাতুল জিহাদের দুই জঙ্গি সহোদর আনিসুল মোরসালিন ও মুহিবুল মুত্তাকিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বাড়ি বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায়। তারাও বোমা হামলার ঘটনা স্বীকার করেছেন। বর্তমানে দিল্লী কারাগারে বন্দী রয়েছে। কিন্তু তাদের এখনো দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। ২০০৫ সালের ১ অক্টোবর গ্রেপ্তার হয় হরকাতুল জেহাদের অন্যতম নেতা মুফতি আবদুল হান্নান। গ্রেপ্তারের পর সে র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার নিকট দেওয়া জবানবন্দিতে চাষাঢ়া বোমা হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

এদিকে সাত খুনের মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেনই ওইসব হত্যাকান্ডের খলনায়ক। সাত খুনের পর নূর হোসেন ভারতে পালিয়ে যায়। ২০১৪ সালের ১৪ জুন রাতে কলকাতার দমদম বিমানবন্দরের অদূরে কৈখালি এলাকার একটি বাড়ি থেকে নূর হোসেন ও তাঁর দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে বাগুইআটি থানার পুলিশ। পরে ওই বছরের ১৮ আগস্ট নূর হোসেন, ওহাদুজ্জামান শামীম ও খান সুমনের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে বারাসাত আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় বাগুইআটি থানা পুলিশ। ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ দমদম কারাগার কর্তৃপক্ষ নূর হোসেনকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করতে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। ১৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ আদালতে উপস্থাপন করা হয় নূর হোসেনকে।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দিন দুপুরে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) পোশাকধারী একদল সদস্য অপহরণের পর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট ও কবি চন্দন সরকারসহ সাতজনকে নৃশংসভাবে হত্যার পর লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়। দুদিন পর একের পর এক তাঁদের লাশ ভেসে উঠলে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে।

পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ দেড় বছরের অধিক সময় ধরে বিচারকাজ সম্পন্ন করে নারায়ণগঞ্জের জজ আদালত তৎকালীন র‍্যাব কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ, কমান্ডার এম এম রানা ও মেজর আরিফ হোসেন এবং সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাউন্সিলর নূর হোসেনসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।

সিদ্ধিরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন ও আওয়ামী লীগের আরেক নেতা প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের বিরোধের জেরে ওই সাত খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে আদালত এরই মধ্যে প্রমাণ করতে পেরেছেন। অর্থের বিনিময়ে র‍্যাব সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের ব্যবহার করেছিলেন নূর হোসেন।

Islam's Group