নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মাসুদুজ্জামানকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ব্যবসায়ীক পার্টনার ও সাবেক এমপি সেলিম ওসমানের প্রধান দোসর বলে আখ্যায়িত করেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।
তিনি বলেছেন, আমরা কয়েকদিন আগে নারায়ণগঞ্জে দেখলাম একজন লোক কয়েক হাজার মানুষকে আপ্যায়ন করেছেন। সবাই বলে ১৫ হাজার লোক আসলে ৪ থেকে ৫ হাজার লোককে আপ্যায়ন করেছেন। তার লোকগুলো বেশির ভাগই গার্মেন্টের লোক। তারপরও আমি তার কিছু আমলনামা বলছি বিগত ১৫ বছর তিনি সেলিম ওসমানের প্রধান দোসর ছিলেন। শুধু নারায়ণগঞ্জ নয় সারা বাংলাদেশের মানুষ জানে, বাংলাদেশে একটি নতুন ব্যাংক খুলেছে সিটিজেনস ব্যাংক। আওয়ামী লীগের আমলে ব্যাংকের অনুমোদন কারা পায়? আওয়ামী লীগের দোসর তারাই তো পায় নাকি? ওই যে ওইদিন খাওয়ালেন সে তো সিটিজেন ব্যাংকের মালিক। তার সাথে আওয়ামী লীগের কিছু লোক ওই ব্যাংকের শেয়ার আছে। ব্যাংকের আসল মালিক হলো ওই আপ্যায়ন করা ব্যক্তি, আর আমাদের বিরুদ্ধে যারা মামলা দিছে, জজকে বলে আমাদের জামিন বাতিল করছে, ছাত্র জনতার আন্দোলনে গুলি চালিয়েছে শেখ হাসিনার আমলের সেই সাবেক আইনমন্ত্রী হলো আসিনুল হক তার ব্যবসায়িক পার্টনার। আনিসুল হক যাদের ব্যবসায়িক পার্টনার হয় তারা কি আপনাদের স্বার্থ দেখবে? গরীবে গরীবের দু:খ বুঝে। আমরা গরীব আমরা আপনাদের দু:খ বুঝবো। যারা সুসময়ে এসে পথ ভাগায় নিবে তাদের বাড়িতে গিয়ে আপনাদের সাক্ষাতের সৌভাগ্যও হবেনা।
শনিবার ২১ জুন বিকেলে বন্দর উপজেলার ধামগড়ে ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরাম জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য তিনটি ক্যাটাগরি নির্ধারণ করেছেন। যার প্রথমটি হলো ১৬ বছর যারা আন্দোলন সংগ্রাম, জেল জুলুম সহ্য করেছে গত সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। দ্বিতীয়টা হলো এলাকায় যাদের ক্লিন ইমেজ রয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে জনপ্রিয়তা রয়েছে। তৃতীয়টা হলো নেতাকর্মীদের সাথে কমিটমেন্ট, দলের প্রতি ভালবাসেন। আজকে যে সকল ব্যবসায়ীরা এসে মনোনয়ন নিতে চান তারা কি এসব ক্যাটাগরিতে পরে। আমাদের নেতা বলেছেন মনোনয়নের পরীক্ষা গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেষ হয়ে গেছে। আজকে যারা জনগণকে ভুল বুঝানোর চেষ্টা করছেন তারা ব্যর্থ এই তিন ক্যাটাগরিতে পড়ে না তাদের নিয়ে চিন্তা করার এখন আমাদের সুযোগ নাই।
তিনি আরো বলেন, ওই সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানরা নারায়ণগঞ্জে সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করেছি। বন্দরের মানুষের জায়গা সম্পত্তি দখল করা হয়েছিল। কারা দখল করেছিলো আপনারা জানেন। আমরা সেই ধরনের নারায়ণগঞ্জ চাইনা। আমরা চাই নারায়ণগঞ্জের মানুষ বন্দরের মানুষ সুখে শান্তিতে বসবাস করবে।
তিনি বলেন বিএনপির নেতাকর্মীদের আমি বলতে চাই এটা আমার বক্তব্য না এটা আমাদের নেতা তারেক রহমানের নিদের্শনা, কোনো চাঁদাবাজ, কোনো সন্ত্রাসী, কোনো মাদক ব্যবসায়ী, জমিদখলকারীকে বিএনপিতে স্থান দেওয়া হবেনা। যারা বিএনপি আছেন তাদের প্রতি সর্তকবার্তা দিলাম। যদি কেউ এমন কিছু করে থাকেন তাহলে আজকে ভাল হয়ে যান, নয়তো আপনাদের জায়গা হবে জেল। বিএনপি করতে পারবেন না। মানুষের কোনো ক্ষতি করলে তার স্থান হবে জেল সে যত বড়ই নেতা হোকনা কেন। যারা অতীতে বিএনপি করেও আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে সুবিধা ভোগ করেছেন এখন আবার এসেছেন বিএনপির সুসময়ে একটা পদ নিয়ে হালুয়া রুটি খেতে তাদের স্থানও বিএনপিতে হবেনা।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।
ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মহসিন মিয়া সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি সদস্য ও মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহম্মেদ, বন্দর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (প্রস্তাবিত) তাওলাদ হোসেন, বন্দর থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ পনেজ, যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান রিপন, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর খান চঞ্চল, বন্দর থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।
আপনার মতামত লিখুন :