শামীম ওসমানের ঘনিষ্ট সহচর আব্দুল করিম বাবু গত ৫ আগষ্ট থেকে পলাতক। তিনি বেশ কয়েকবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ১৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করেছেন। আওয়ামীলীগ আমলে জেলার ডিস ব্যবসার একক নিয়ন্ত্রকও ছিলেন তিনি। এবং এর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন।
২০২৩ সালে শহরের ডিআইটিতে স্ত্রী ফারহানা করিমের নামে প্রায় আড়াই কোটি টাকায় বায়না সূত্রে একটি সম্পত্তি (বহুতল ভবন) ক্রয় করেন আব্দুল করিম বাবু। সম্পত্তিটির মালিক ছিলেন প্রয়াত রিয়াজ চৌধুরী। তাই তার স্ত্রী ও তিন সন্তানের কাছ থেকে সম্পত্তিটি ক্রয় করা হয়। তবে ওই সময় রিয়াজ চৌধুরীর এক ছেলের সাথে স্ত্রীর বিরোধ থাকায় এবং রাজউক থেকে সম্পত্তিটি বিক্রয়ের অনুমোতি না আনতে পারায় নাম জারি করা যায়নি। কারণ সম্পত্তিটি পূর্বে রাজউকের ছিল।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় এবং আওয়ামীলীগের পতন হয়। কয়েক দিন পরই স্ব-পরিবারে নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায় আব্দুল করিম বাবু। সেই সুযোগে রিয়াজ চৌধুরীর স্ত্রী স্থানীয় কিছু বিএনপি নেতাদের যোগসাজসে সম্পত্তিটি আবারো বেশি দামে অন্য ব্যক্তির কাছে বিক্রয় করার চেষ্টা শুরু করেন। তবে আব্দুল করিম বাবু আত্মগোপনে থাকলেও বায়না সূত্রে স্ত্রীর নামে ক্রয় করা সম্পত্তি ফিরে পেতে গোপনে তৎপরতা শুরু করেছেন। এজন্য তিনি বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতার সহযোগীতা নিয়েছেন বলেও জানা গেছে। এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি, সদর থানা বিএনপি ও মহানগর মহিলা দলের কয়েকজন শীর্ষ নেতা রিয়াজ চৌধুরীর স্ত্রীকে বিষয়টি সমাধান করার জন্য চাপ দিয়েছেন।
রিয়াজ চৌধুরীর ছোট ছেলে সাজু চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, আমার মা এবং বোনেরা আব্দুল করিম বাবুর স্ত্রীর কাছে তাদের অংশ বায়না সূত্রে বিক্রি করেছে। এর পরিমান প্রায় আড়াই কোটি টাকা। এখন তারা জমিও লিখে দিচ্ছেনা আবার টাকাও দিচ্ছেনা। আমি আমার অংশের জায়গা বিক্রি করিনি। ভবিষ্যতে এর জন্য আমার সমস্যা হবে। তারা তো টাকা আত্মসাৎ করে বসে আছে। আমি যতটুকু জানি তারা এই জমি আবার অন্য জনের কাছে বিক্রি করতে চায়। যদি অন্য কেউ এই জায়গা কিনে তখন তো তারাও দেখা যাবে প্রতারণার শিকার হবে। আর এই জমি যে ক্রয় করবে সেই সমস্যায় পড়বে। কারণ এক জায়গা তো একাধিক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা যায়না। তা ছাড়া আব্দুল করিম বাবু যদি টাকা বা জমি বুঝে না পায় তাহলে সে তো পরবর্তীতে আমাদের ক্ষতি করে বসবে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র জনতার উপর হামলা ও হত্যার অভিযোগে আব্দুল করিম বাবুর বিরুদ্ধে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে এখন পর্যন্ত একাধিক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মূলত এরপর থেকেই আত্মগোপনে আব্দুল করিম বাবু। আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে তার অধিকাংশ ব্যবসা দখল করে ফেলেছেন বিএনপির লোকজন। তাই রিয়াজ চৌধরীর স্ত্রীকে জমির বায়সা সূত্রে দেয়া আড়াই কোটি টাকা তিনি ফেরত চেয়েছেন বলে জানা গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :