শীতলক্ষ্যা নদীর তীরঘেঁষা প্রাচ্যের ডান্ডিখ্যাত নারায়ণগঞ্জ শহরে “অন্তর্ভুক্তিমূলক, জলবায়ু-সহনশীল নগর সেবার জন্য জনগণের অভিযোজন পরিকল্পনা” হাতে নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। এক্ষেত্রে প্রান্তিক ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার তাগিদ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে।
একইসঙ্গে নগরীতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার সময় পরিবেশগত প্রভাবের দিকে অধিক গুরুত্ব দেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন বক্তারা।
বুধবার (১৮ মে) দুপুরে নগরভবনের সম্মেলন কক্ষে ‘জলবায়ু সহনশীল নগর পরিসেবা’ বিষয়ক এক অবহিতকরণ কর্মশালায় বক্তারা এসব প্রস্তাব জানান।
সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন সিটি কর্পোরেশনের সচিব নূর এ কুতুবল আলম, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা ‘প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন’ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ইশরাত শবনম, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এএইচএম রাসেদ, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আসাদুজ্জামান সরদার, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক সোহেল আক্তার প্রমুখ। কর্মশালায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, তরুণ সমাজ, সাংবাদিক, স্থানীয় জনগণও অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিটি কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মঈনুল ইসলাম। সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক ‘নারায়ণগঞ্জ গ্রিন অ্যান্ড রেসিলেন্ট আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ প্রস্তুত করেছে, যার লক্ষ্য নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে টেকসই, জলবায়ু-সহনশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নগর অবকাঠামো পরিসেবা প্রদান। উন্নত পরিসেবার জন্য ‘নগর কর্মপরিকল্পনা, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পয়নিঃষ্কাশন মাস্টারপ্ল্যান’ করতে কাজ করছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। এ পরিকল্পনা প্রস্তুতে গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা’র অর্থায়ন ও গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশনের কারিগরি সহযোগিতায় বাস্তবায়নে কাজ করছে প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন ইন বাংলাদেশ।
বক্তারা বলেন, জলবায়ুগত পরিবর্তনের বড় প্রভাব পড়ে জনজীবনে। এজন্য জলবায়ুগত পরিবর্তনের কুফলগুলো চিহ্নিত করে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া সম্ভব। উন্নয়ন কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশগত সমীক্ষা করে এর আশু প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতার সাথে কাজ করতে হবে। প্রকৃতিভিত্তিক সমাধানে নজর দিতে
বিশেষ করে শীতলক্ষ্যা নদীসহ বিদ্যমান জলাধার গুলো রক্ষার বিষয়ে পরামর্শ দেন অংশগ্রহণকারীরা
আলোচনায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সুপেয় পানির সংকট, জলাবদ্ধতা, যানজট ও হকার সমস্যার বিষয়গুলোও উঠে আসে। একইসাথে সিটি কর্পোরেশনের সক্ষমতা বৃৃদ্ধিরও তাগিদ দেওয়া হয়।
প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইশরাত শবনম বলেন, “নারায়ণগঞ্জে জলবায়ু সহনশীলতা ও জনগণের অভিযোজন পরিকল্পনা নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের সাথে কাজ করা একটি সমন্বিত পদক্ষপে, যা নগরের দরিদ্র সম্প্রদায়ের জন্য ন্যায্য ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।
সভাপতির বক্তব্যে জাকির হোসেন বলেন, “শহরের জলবায়ু সহনশীলতা নিশ্চিত করতে জলবায়ু উদ্যোগ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি কিন্তু নারায়ণগঞ্জ শহরের বিদ্যমান সংকটগুলোর কারণে এ কাজটি করা সহজ না। তবে আমরা একটি বেটার নারায়ণগঞ্জ গড়ার ব্যাপার আশাবাদী আমরা।
আপনার মতামত লিখুন :