টেন্ডারের আগেই হাটে গরু উঠিয়েছেন বিএনপি নেতা

দরপত্র বিক্রির শেষ হওয়ার আগে হাট দখল করে বিক্রি উঠিয়ে বেচাকেনা শুরুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিটি কর্পোরেশন এলাকার সিদ্ধিরগঞ্জের ১০নং ওয়ার্ডের গোদনাইল ইব্রাহিম টেক্সাইল মিল (রেল লাইনের পূর্ব অংশ) এর খালি মাঠে এ ঘটনা ঘটেছে। সিদ্ধিরগঞ্জের ১০নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনিস সিকদারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে।

সোমাবার ২৬ মে সরেজমিনে গিয়ে সিটি কর্পোরেশন থেকে দরপত্র আহ্বান করা উক্ত স্থানে হাটের জন্য বাঁশ গাথা থেকে শুরু করে বেশ কিছু গরুও হাটে দেখতে পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বাজার কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, এখনো সিটি কর্পোরেশন থেকে কোনো হাটের টেন্ডার সম্পন্ন হয়নি। আজকেও হাটের দরপত্র বিক্রি হচ্ছে, আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত দরপত্র বিক্রি হবে। ২৮ মে টেন্ডার অনুষ্ঠিত হবে। তবে হাটের বাঁশ গাথা বা গরু উঠানোর বিষয়টি জানা নেই। টেন্ডার সম্পন্ন হওয়ার আগে এমনটি কেউ করতে পারেন না। আজকে আমরা ব্যস্ত রয়েছি আগামীকাল বিষয়টি আমি সিও সাহেবকে জানাবো।

তবে হাটে বাঁশ গাথা এবং গরু উঠানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন আনিস সিকদার। তিনি বলেন যে অভিযোগটি করেছেন সেটি মিথ্যা নয় সত্য অভিযোগই করেছেন। কিন্তু আগে সিটি কর্পোরেশনের সিডিউলে এই হাটটি ছিলো না। এটা মিলে জায়গা। প্রতিবছর এখানে হাট হতো। সিটি কর্পোরেশন থেকে গত এক সপ্তাহ আগে যে ১৮টি হাট নির্ধারণ করেছে তখন সেই হাটটি ছিলনা। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে কারণ জানতে চাইলো জায়গাটি ব্যক্তিগত মালিকানার। ওখান থেকে অনাপত্তি এনে না দিলে আমরা হাটটি টেন্ডার করতে পারিনা। কথা হলো মিলকে তো একটা টাকা দিতে হবে। সিটি কর্পোরেশন থেকে ফাও টেন্ডার করে টাকা নিয়ে যায়। আমি মিলকে টাকা দিয়ে এনওসি নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে তালিকায় তুলেছি। এবার সিটি কর্পোরেশন থেকে হাটের টেন্ডার অনেক দেরিতে দেওয়া হচ্ছে। পরে দেখা যাবে একটা হযবরল অবস্থা হয়ে গেছে। তাই আমরা আগে থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করে সকল কিছু সম্পন্ন করেছি। আমি না করলেও কেউ তো হাট করবেই। তো বাশঁ গাথা তো অপরাধ হয়নি। হাটে গরু গুলো চৌমহনি থেকে। বেপারী এসে গরু গুলো বাঁধতে পারছে যদি এসে বাঁধতে না পারতো তাহলে কি বেপারিরা আসতোনা। হাট করলে তো কেউ একটা টাকা গাট্টি করে নিয়ে বাসায় যায়না। সবাইকে দেয়। আমার এলাকায় হাট হলে আমার এলাকার পোলাপান কিছু পাবে। আমি তো কাউকে সিডিউল কিনতে বাধা দিছি এমন অভিযোগ তো কেউ করেনি। কাউকে হাটে আসতেও নিষেধ করিনি। আমি হাট টি জমিয়ে দিয়েছি, এটা যদি এখন আমার অপরাধ হয় তাহলে তো কিছু করার নাই। আমি ১০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমি যদি হাট নাও করি, যেই করুক তারা কি আমাকে কিছু দিবেনা?

উল্লেখ্য, ১০নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি পরিচয় দেওয়া আনিস সিকদার ছিলেন উক্ত ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আখতারুজ্জামান খোকনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। অভিযোগ উঠেছে আনিস সিকদার বর্তমানে মহানগর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তুর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। মুখে তিনি যতই ভাল কথা বলুক না কেন মমতাজ উদ্দিন মন্তুকে সাথে নিয়ে তিনি উক্ত হাটটি চতুরতার সাথে দখল করে নিয়েছেন। যাতে করে অন্য কেউ এই হাটের ইজারা নিতে সাহস না করে।