News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২

ওসমানদের ছায়া বাড়ছে মডেল মাসুদের উপর


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২৫, ১০:২৯ পিএম ওসমানদের ছায়া বাড়ছে মডেল মাসুদের উপর

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যাদের ব্যবহার করে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে ছড়ি ঘুরাতেন সেলিম ওসমান ও তার ভাই শামীম ওসমান তাদের একটি বড় অংশ এখন সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া মাসুদুজ্জামানের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে। সেলিম ওসমানের লাঙল আর শামীম ওসমানের নৌকার লোকজন ভর করছে মাসুদের উপর। এক কথা বলা চলে ওসমানদের ছায়া রয়েছে। দিন যত যাচ্ছে তত ছায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছেন তিনি।

২০১৪ হতে ২০২৫ এর ৫ আগস্ট পর্যন্ত সেলিম ওসমানের একনিষ্ঠ উপদেষ্টা ও সহযোদ্ধা ছিলেন মোহাম্মদ আলী। পুরো ১১ বছর তিনি ওসমানদের পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন। সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান যতবার বিপদগ্রস্ত হয়েছেন ততবারই টেনে তুলেছেন। পাশে থেকে সঙ্গ দিয়েছেন। আর এতে তিনি ব্যবহার করতেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে। তখনকার সময়ে বিতর্কিত খালেদ হায়দার খান কাজলের পক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়ে সাফাই গাওয়াতেন তিনি।

বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ২০১৪ সালের ২৬ জুন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের উপ নির্বাচনে আনারস প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম আকরাম ব্যাপক জোয়ার সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু তখনই মাঝে এসে আবির্ভাব ঘটে সেলিম ওসমানের। তিনি এসে পুরো নির্বাচনকে তালুবন্দী করেন। বিএনপি নেতাদের ডেকে ডেকে সেলিম ওসমানের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেন। এর পর থেকেই মোড় ঘুরে যায়। বিএনপির অনেকেই চলে যান সেলিম ওসমানের ডেরাতে। বাদ যায়নি মাসুদুজ্জামানও। তিনি নেমে যান সেলিম ওসমানের পক্ষে। তল্লা ও ১১নং ওয়ার্ডের পুরো দায়িত্ব নেন মাসুদুজ্জামান। মাঠে নামেন লাঙলের পক্ষে। নির্বাচনে জয়ী হন সেলিম ওসমান।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বার বার মোহাম্মদ আলী কণ্ঠে তুলেন ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান। একই সময়ে হৃদষ্টপুষ্ট হন মাসুদ। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের তৎকালীন মন্ত্রী আনিসুল হকের কৃপায় সিটেজন ব্যাংকের মালিক বনে যান।

২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মোহাম্মদ আলী আলোচনায় ছিলেন। কারণ ক্লাবের বর্তমান সভাপতি ও ভোটে নির্বাচিত সভাপতি প্রার্থী তানভীর আহমেদ টিটু এমপি শামীম ওসমানের শ্যালক। তাঁর পক্ষে কাজ করেন সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান। তবে এ দুইভাইকে এবার অনেকটাই ব্যাকফুটে রেখে সামনে ও আড়ালে থেকে পুরো কারিশমা দেখান মোহাম্মদ আলী। সরাসরি মাঠে নামেন টিটুর পক্ষে। বিনিময়ে জিতেছেন তিনি নিজে।

২০১৮ ও ২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ওসমান পরিবারের দুই সদস্য যথাক্রমে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের পক্ষে মাঠে নামেন মোহাম্মদ আলী। অনেকটা আড়ালে থেকেই ওসমান পরিবারের এই দুই সংসদকে জয়ী করার পক্ষে কাজ করেন তিনি। কখনও কখনও প্রত্যক্ষভাবেও কাজ করেছেন। ফলশ্রুতিতে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে জয়ী হয় তাদের।

নারায়ণগঞ্জে বিগত দিনে অনেক রাজনীতিকের উত্থান এ মোহাম্মদ আলীর হাত ধরে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই এর নির্বাচনেও কুশীলব হিসেবে কাজ করেন তিনি। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারীর বিতর্কিত নির্বাচনেও তিনি ছিলেন এমপি। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাত্র ১৭ দিনে আগে গিয়াসউদ্দিনকে বিএনপিতে জয়েন করিয়ে মনোনয়ন নিশ্চিত করে আলোচনার চূড়ায় উঠেন মোহাম্মদ আলী। তাঁর সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় লোকজন ও নেতাকর্মীদের রয়েছে সু সম্পর্ক।

মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, মাসুদ যার সাথে বসে মতবিনিময় করেছে সে আওয়ামী লীগ, গডফাদার ওসমান পরিবারের দালাল। সেই দালালকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এই মতবিনিময় করেছেন। উনি এমপি হওয়ার স্বপ্নে বেসামাল হয়ে আওয়ামী লীগের দালাল, ওসমানদের দালালদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে চায়।

মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, এগুলোর তার অর্থের দাম্ভিকতা। অর্থ ছাড়া তার আর কিছু নাই। আর যে অর্থ আছে সেগুলো হলো ব্যাংকের টাকা, সরকারের টাকা, সেই টাকা দিয়ে সে দাম্ভিকতা দেখাচ্ছে।

Islam's Group