News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২

ওসমানদের নির্বাচনের মুখ্য সমন্বয়ক বিএনপির মাসুদের পক্ষে নামলেন


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ১১:২২ পিএম ওসমানদের নির্বাচনের মুখ্য সমন্বয়ক বিএনপির মাসুদের পক্ষে নামলেন

২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল জাতীয় পার্টির এমপি নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের উপ নির্বাচনে প্রার্থী হন ছোট ভাই সেলিম ওসমান। প্রতিদ্বন্দ্বি সাবেক এমপি এস এম আকরাম। বিএনপির একটি সমর্থন ছিল আকরামের উপর। কিন্তু তখনই সেই পুরানো খেলায় মেতে উঠেন কিং মেকার খ্যাত মোহাম্মদ আলী। সেলিম ওসমানকে জয়ী করাতে মিশনে নামেন। বিএনপির সকলকে ডেরায় ডেকে নিয়ে নানা কৌশলে ম্যানেজ করান। বিএনপির প্রায় সকল স্তরের নেতাদের ম্যানেজ করে নামিয়ে দেন সেলিম ওসমানের পক্ষে। শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়। ২৬ জুন উপ নির্বাচনে সেলিম ওসমানের জয়ের পর ফের চালকের আসনে বসে যান সেলিম ওসমান। জমজমাট হয়ে উঠে রাজনীতিতে আধ্যাতিক এ পীর সাহেবের দরবার। তাঁকে আসীন করা হয় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার হিসেবে। পথচলায় পাশাপাশি থাকেন সেলিম ওসমান ও মোহাম্মদ আলী। কণ্ঠে তুলেন ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান’। এবার সেই মোহাম্মদ আলী মাঠে নেমেছেন সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া মাসুদুজ্জামানের পক্ষে যিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের তৎকালীন মন্ত্রী আনিসুল হকের কৃপায় সিটেজন ব্যাংকের মালিক বনে যান। যার কণ্ঠে সব সময়ে ওসমানদের জয়গান ছিল তিনি এখন মাসুদের জয়গান গাইতে শুরু করেছেন।

১৩ অক্টোবর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে এক মতিবিনিময় সভায় মাসুদুজ্জামানকে অতিথি করে নেওয়া হয়। সেখানেই মোহাম্মদ আলী স্লোগান ধরেন মাসুদের পক্ষে। তাকে আগামীতে এমপি বানানোর স্বপ্নের কথা তুলে ধরেন।

ওসমান পরিবারের পক্ষে থাকা এ মোহাম্মদ আলী এদিন পাল্টা কথা বলেন। জানান বিগত সময়ে তিনি জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া কিংবা তারেক রহমানের পক্ষে কথা বলতে পারেনি। অথচ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মোহাম্মদ আলীর কণ্ঠে সব সময়ে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ বন্দনা ছিল।

২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মোহাম্মদ আলী ফের আলোচনায় আসেন। কারণ ক্লাবের বর্তমান সভাপতি ও ভোটে নির্বাচিত সভাপতি প্রার্থী তানভীর আহমেদ টিটু এমপি শামীম ওসমানের শ্যালক। তাঁর পক্ষে কাজ করেন সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান। তবে এ দুইভাইকে এবার অনেকটাই ব্যাকফুটে রেখে সামনে ও আড়ালে থেকে পুরো কারিশমা দেখান মোহাম্মদ আলী। সরাসরি মাঠে নামেন টিটুর পক্ষে। বিনিময়ে জিতেছেন তিনি নিজে।

২০১৮ ও ২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ওসমান পরিবারের দুই সদস্য যথাক্রমে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের পক্ষে মাঠে নামেন মোহাম্মদ আলী। অনেকটা আড়ালে থেকেই ওসমান পরিবারের এই দুই সংসদকে জয়ী করার পক্ষে কাজ করেন তিনি। কখনও কখনও প্রত্যক্ষভাবেও কাজ করেছেন। ফলশ্রæতিতে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে জয়ী হয় তাদের।

নারায়ণগঞ্জে বিগত দিনে অনেক রাজনীতিকের উত্থান এ মোহাম্মদ আলীর হাত ধরে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই এর নির্বাচনেও কুশীলব হিসেবে কাজ করেন তিনি। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারীর বিতর্কিত নির্বাচনেও তিনি ছিলেন এমপি। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাত্র ১৭ দিনে আগে গিয়াসউদ্দিনকে বিএনপিতে জয়েন করিয়ে মনোনয়ন নিশ্চিত করে আলোচনার চূড়ায় উঠেন মোহাম্মদ আলী। তাঁর সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় লোকজন ও নেতাকর্মীদের রয়েছে সু সম্পর্ক।

জানা যায়, 'এককালে ওসমান পরিবারের সাথে মেয়র আইভী বলয়ের দ্বন্দ্বের সমাঝোতাকারী হিসেবে কাজ করেন মোহাম্মদ আলীকে। নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর তিনি অভিভাবক হিসেবে আবির্ভূত হন। চেষ্টা করেন ওসমান ও চুনকা পরিবারের মাঝে সমঝোতার। যার অংশ হিসেবে নাসিকের এক বাজেট অনুষ্ঠানে সেলিম ওসমান, আইভী ও মোহাম্মদ আলী ছিলেন একই মঞ্চে। এছাড়া সিটি নির্বাচনে দ্বিতীয়বার বিজয়ী হয়ে দায়িত্বগ্রহন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ আলী। সেবার আইভী তার প্রশংসা করে বলেন, 'মোহাম্মদ আলী ভাই বিগত দিনে আড়ালে অন্তরালে অনেক কাজ করেছেন। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও মোহাম্মদ আলী অনেক কাজ করেছেন। আমাকে সাহস যুগিয়েছেন। আমার বাবার সঙ্গে ছিল তাঁর ভালো সম্পর্ক। দুই পরিবারের বাসায় যাতায়াত ছিল। মোহাম্মদ আলী একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি অনেক সাহসী কাজ করেছেন।

Islam's Group