নারায়ণগঞ্জ সদরের তোলারাম মোড় এলাকায় পারিবারিক বিরোধের জেরে এক নারী ও তার স্বামী-ছেলেকে মারধর ও নির্যাতনের ও গরম পানি ঢেলে দগ্ধের ঘটনার মামলায় প্রধান অভিযুক্তদের মধ্যে লিতুন সুকুমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সকালে শীতলক্ষ্যা কদমতলী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভুক্তভোগী আবিদা সুলতানা ঝুনু (৪২) সদর মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় জানান, তার দেবর ওয়াসিম সুকুম, রিপন সুকুমসহ কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে তাদের উত্তরাধিকারস‚ত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি নিয়ে বিরোধে লিপ্ত। এই বিরোধের জেরে গত ৩০ আগস্ট বিকেলে অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধভাবে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়।
অভিযোগে বলা হয়, ওই সময় অভিযুক্ত নুরুন নাহার বাসা ভাড়ার টাকা চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে অন্যান্য আসামিদের ডেকে আনে। এরপর তারা আবিদা সুলতানা, তার স্বামী খোকন সুকুম (৫৩) ও ছেলে অঙ্গন সুকুম (১৭)-এর ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। হামলাকারীরা লাঠি ও ইট দিয়ে তাদের পেটাতে থাকে।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত ওয়াসিম সুকুম ইট দিয়ে খোকন সুকুমের মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে, এবং কামরুল নামের এক সহযোগীও এলোপাতাড়ি আঘাত হানে। সন্তান অঙ্গনকে রক্ষা করতে গেলে আবিদা সুলতানাকেও মারধর করা হয়। এ সময় রিপন সুকুম তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগে উল্লেখ আছে। এছাড়া লিতুন সুকুম (২২) স্থানীয় এক দোকান থেকে গরম পানি ভর্তি কেটলি এনে তা অঙ্গনের শরীর ও মায়ের হাতে ঢেলে দেয়। এতে অঙ্গণের শরীরের প্রায় ১৩ শতাংশ অংশ দগ্ধ হয়। অভিযুক্তরা পালানোর সময় আবিদার গলায় থাকা ৮ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন (ম‚ল্য প্রায় ৮০ হাজার টাকা) ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করা হয়। স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে খোকন সুকুমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও অঙ্গন সুকুমকে জাতীয় বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়। চিকিৎসক খোকনের মাথায় সাতটি সেলাই দেন এবং সিটি স্ক্যান করার পরামর্শ দেন।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, “পারিবারিক বিরোধের জেরে সংঘটিত হামলা ও নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগী আবিদা সুলতানা ঝুনু একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা ঘটনাটি তদন্ত শুরু করি। ইতোমধ্যে অভিযুক্তদের মধ্যে একজন, লিতুন সুকুমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিনের পারিবারিক দ্বন্ধ থেকেই এ হামলার সূত্রপাত।
আপনার মতামত লিখুন :