রাজনীতির মাঠে ফেরার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতা না হোক, অন্তত ঝটিকা মিছিল কিংবা বিক্ষোভ মিছিলের মাধ্যমে ইউনুস বিরোধী জোরালো অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। সেই ধারা নারায়ণগঞ্জেও অব্যাহত রেখেছে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে বন্দর, ফতুল্লা, সোনারগাঁও ও আড়াইহাজারে ঝটিকা মিছিল করে নিজেদের অবস্থান জানানি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা তাকিয়ে আছে উচ্চ আদালতের দিকে। তারা আগাম জামিনের জন্য অপেক্ষায় আছেন। আগাম জামিন শুরু হলেই রাজনীতির মাঠে ফিরার জোড়ালো চেষ্টা করবে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ।
বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা অপেক্ষায় আছেন উচ্চ আদালত আগাম জামিন দেয়া শুরু করে কিনা। মাঝখানে আগাম জামিন কিছুদিন দেয়া হলে চেম্বার জজ আদালত সেই জামিনে স্টে অর্ডার দিয়েছেন। ফলে আওয়ামী লীগের মাঠে ফেরার রাস্তা আবারো বন্ধ হয়ে যায়।
নেতারা বলছেন, হাইকোর্ট আগাম জামিন দিলে সেই জামিন নিয়ে নিম্ম আদালতে আত্মসমর্পন করে জেলে গেলেও কিছুদিন কারাভোগ শেষে হয়তো আবারো হাইকোর্ট থেকে জামিন পাবেন। অনেকেই নানা গ্রাউন্ডে নি¤œ আদালত থেকে জামিনও পেতে পারেন। কিন্তু হাইকোর্ট আগাম জামিন না দেয়ার কারনে সেই চেষ্টা আওয়ামী লীগ নেতাদের বৃথা যাচ্ছে।
এদিকে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের যেসব নেতা আইন পেশায় রয়েছেন তাদের অনেকের পক্ষে হাইকোর্টের নো এরেস্ট নো হ্যারেস্ট অর্ডার থাকলেও তারাও আত্মসমর্পন করতে সাহস পাচ্ছেন না। এর কারন হিসেবে অনেকেই জানান, কিছুদিন পূর্বে মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক পিপি এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে নিন্ম আদালতে আত্মসমর্পন করতে এসে বিএনপি জামাতের আইনজীবীদের হাতে নাজেহাল হয়েছেন। জামিননামা দাখিল করলেও পরবর্তী তারিখে তিনি আত্মসমর্পন না করে পলাতক হয়ে যান। যে কারনে আওয়ামী লীগের আইনজীবীরাও আত্মসমর্পন করতে সাহস পাচ্ছেন না। অনেকে মনে করছেন আত্মসমর্পন করলেও কারাভোগ করতে হবে সেটা অনেকাংশে নিশ্চিত। দেড় দুই মাস কারাভোগ করে পরবর্তীতে হাইকোর্ট থেকে জামিন পেতে হবে। এমন আইনি জটিলতার কারনে রাজনীতির মাঠে ফেরার সাহস করতে পারছেন না আওয়ামী লীগ নেতারা। কারাভোগের সম্ভাবনার পাশাপাশি হামলার শিকার হওয়ার সম্ভাবনাও আছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পলাতকের সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা পালিয়ে যায়। জেলার সাতটি থানা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাকর্মী থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও আত্মগোপনে আছেন দীর্ঘ ৮ মাস যাবত। পবিত্র ঈদ উল ফিতরও পালন করেছেন আত্মগোপনে। পরিবার পরিজন ছেড়ে আত্মগোপনে আছেন নেতাকর্মীরা। এমন আত্মগোপনে থেকে কিছু সংখ্যক নেতাকর্মীরা হটাত হটাত ঝটিকা মিছিল করার চেষ্টা করছেন। তবে জেলা জুড়ে আগের মত গ্রেপ্তার সেভাবে দেখা যাচ্ছেনা। অপারেশন ডেবিল হান্ট অভিযান শুরুর দিকে জেলা জুড়ে বিভিন্ন থানায় ব্যাপক গ্রেপ্তার চললেও সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে নাই। ফলে ধীরে ধীরে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বাড়ি ফেরার স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে মামলা মোকদ্দমা রয়েছে তারা গ্রেপ্তার ভয়ে বাড়িতে ফিরতে পারছেন না। যেসব নেতাকর্মীরা কোনো মামলায় আসামি হননি সেইসব নেতাকর্মীরা ধীরে ধীরে এলাকায় ফিরছেন।
আপনার মতামত লিখুন :