News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গাজী পর আনিসুলকে নাজেহাল, লাঞ্ছনার উদাহরণ ভালো না


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০২৫, ১০:১৫ পিএম গাজী পর আনিসুলকে নাজেহাল, লাঞ্ছনার উদাহরণ ভালো না

দেশের অন্যান্য স্থানের মত নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়াও ক্ষমতাচ্যুত মন্ত্রীদের উপর ডিম নিক্ষেপ-কিল-ঘুষি প্রচলন শুরু হয়েছে। বিগত সময়ে নারায়ণগঞ্জে আসামীদের উপর ক্ষোভ থাকলে স্লোগানে উপর প্রকাশ করা হত। গত বছর ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর নারায়ণগঞ্জ রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়ে উঠে। বিগত ১৬ বছর যারা ক্ষমতায় ছিলো তারা এখন পলাতক ও কারাজীবনে অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে। একই সময় মন্ত্রী হয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় বিশেষ নিরাপত্তায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পাট বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী আনাগোনা ছিলো। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার নয় মাসের ব্যবধানে দুইজনই বিক্ষুদ্ধ লোকজনের হাতে নাজেহাল শিকার হয়েছে। এমন কান্ডে পরবর্তি শাসকদের জন্য শিক্ষা হিসেবে গণনা করছেন রাজনীতিবিদরা।

চারবারের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীকে গত ২৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জে হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে আদালতে হাজির করা হয়। ওই সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন উত্তেজিত হয়ে তার ওপর ডিম ছুড়ে মারেন ও কিল ঘুষি মেরে নাজেহাল করে। এর মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আসামীর উপর ক্ষোভ প্রকাশ শুরু হয়। এরপর একাধিক গাজীকে আদালতে হাজির করা হলেও দ্বিতীয় দফায় কোন ঘটনা ঘটেনি।

প্রায় সাড়ে ৫ মাসের মাথায় ৫ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি হত্যা মামলায় আদালতে প্রথম হাজির করা হয় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে। ওই সময় বিশেষ নিরাপত্তায় আদালতে তোলা হয় ও ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। আদালত থেকে বের হলে তাকে ভুয়া ভুয়া ও বিচারের দাবিতে স্লোগান দেয় বিক্ষুদ্ধ লোকজন।

এর কয়েক দিন পর ২৫ ফেব্রুয়ারি হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে করা তিন মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজিরা করা হয়। ওই সময়ে পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়। এতে তার সাথে কোন রকমের ঘটনা ঘটেনি।

আড়াই মাসের বেশি সময়ের পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিহত হাফেজ মো. সোলাইমান (১৯) হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জের আদালতে হাজির করা হয় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিন কাদিরের আদালত থেকে বের হরে প্রাঙ্গণে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের কিল ঘুষি শিকার হন তিনি। এতে করে আনিসুল হককে দৌড়ে নিয়ে প্রিজন ভ্যানে তুলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, দুপুরে আদালতে তোলার সময় বাইরে বিএনপন্থি আইনজীবীরা আনিসুল হকের ফাঁসি চেয়ে স্লোগান দেন। শুনানি শেষে এজলাস থেকে বের হওয়ার সময় বারিন্দায় তাকে কিল-ঘুষি দেন তারা। এ সময় আনিসুল হকের মাথায় হেলমেট ছিল। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা সাবেক এ আইনমন্ত্রীকে নিয়ে দৌঁড়ে আদালতের বারান্দা ত্যাগ করেন এবং একইভাবে তাকে দ্রুততার সঙ্গে প্রিজন ভ্যানে তোলেন। প্রিজনভ্যানে থাকা অবস্থায়ও বাইরে আদালত প্রাঙ্গণে ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, আনিসুল হকের ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন একদল বিক্ষুদ্ধ লোকজন।

আনিসুল হকের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান বলেন, এজলাস থেকে বের হওয়ার পর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে আসামিকে প্রিজন ভ্যানে তোলে। কিন্তু সেখানে কেউ চর-থাপ্পর দিয়েছে- এমনটা আমার নজরে পড়েনি। তবে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির বলেন, আনিসুল হককে উৎসুক জনগণ মারধর করেছে। এতে বিএনপন্থি আইনজীবীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

Islam's Group