রিফাইন্ড আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আইভি, আব্দুল হামিদের নাম আসছিলো। সুতরাং, এগুলো সেই ম্যাক্রো পরিকল্পনারই অংশ। এই পুরোটাই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনার অংশ। আওয়ামী লীগ দাঁড়ালে এদের হাত ধরেই দাঁড়াতে পারে, এই ইঙ্গিত তারা পেয়েছিলো। আব্দুল হামিদ তো চলে গেল। আর কেউ যেন যেতে না পারে, তাই আইভিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সাব্বির আহমেদ বিবিসি বাংলা’র মন্তব্যে করেন।
গত ৭মে বুধবার মধ্যরাতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সময়ের সাবেক রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ থাইল্যান্ড যান। তার দেশ ছাড়ার ঘটনার বিরুদ্ধে ৮মে বৃহস্পতিবার দিনভর সামাজিক মাধ্যমে নানা রকম বক্তব্য তুলে ধরতে দেখা যায় এনসিপি'র নেতাদের। ওই রাতেই নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা সেলিনা হায়াত আইভীকে গ্রেফতারের জন্য তার বাসায় পুলিশ যায়। রাতভর নাটকীয় শেষে শুক্রবার ভোরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তিনি কাশিমপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
এরপর বৃহস্পতিবার মধ্য রাতেই এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে কয়েকশত নেতা-কর্মী নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায়। পরে গভীর রাতে সেই অবস্থান কর্মসূচিতে এনসিপির শীর্ষ নেতারা এবং ইসলামপন্থী বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা যােগ দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন বলছেন, তার ধারণা এ সব কিছুই একে অপরের সাথে সম্পর্কিত এবং 'সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার' অংশ। তার মতে এর অংশ হিসেবেই 'যমুনার সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও সেখানে আওয়ামী লীগ বিরোধী সমাবেশ করতে দেয়া হয়েছে' বলে মনে করেন তিনি। রিফাইন্ড আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থাকবে, এমন যাদের নাম বিভিন্ন সময়ে এসেছিলো... তাদেরকে সরিয়ে আওয়ামী লীগকে শূন্য বা নেতৃত্বহীন করে দেওয়া এবং এনসিপিকে দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের আওয়াজ তোলা ওই পরিকল্পনার অংশ। এগুলোর কোনোটিই বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত বা হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া ঘটনা নয়," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
এদিকে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, সরকার এ আন্দোলনে তাদের নামায়নি বা সহায়তাও করছে না। বরং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকারের প্রতি সন্দেহ ও আস্থাহীনতা থেকেই তারা রাজপথে এসেছেন। তার মতে সরকারের প্রথম দায়িত্বই ছিলো গণহত্যার বিচার ও আহত ও নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন। কিন্তু সরকার তা পারেনি নিজেদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে। সে কারণেই আওয়ামী লীগের অনেকে দেশ ছেড়ে যেতে পেরেছেন। বড় নেতাদের অনেককে ধরা হয়নি। এমনকি সারাদেশে জেলা উপজেলায় দলটির নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এসব কারণেই আমাদের রাস্তায় আসতে হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :