সাত খুন মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেন যখন এলাকায় দোর্দান্ড দাপট নিয়ে চলতেন তখন জেলা তরুণ দলের সভাপতি ছিলেন টিএইচ তোফা। ওই সময়েই নূর হোসেনের সঙ্গে গভীর সখ্যতা ছিল তাঁর। একটি টিউবওয়েল স্থাপনের প্রায় দেড় লাখ টাকা অনুদান আনার পর থেকেই সম্পর্কটা গাঢ়ো হয়। বছরের পরিক্রমায় সেই তোফা এখন নূর হোসেনের প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত গিয়াসউদ্দিনের উপর ভর করেছেন। তাঁর নাম ভাঙিয়ে বিভিন্নস্থানে শুরু করেছেন চাঁদাবাজী।
এবার সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মার্কেটের নির্মাণাধীন কাজে বাঁধা দিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা তরুণ দলের সভাপতি টিএইচ তোফার বিরুদ্ধে। যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি দুইজন ব্যক্তিকে তরুণ দল নেতা তোফাকে উদ্দেশ্য করে বলতে শোনা গেছে, আপনি গিয়াসউদ্দিন স্যারের নাম বলে চাঁদা চাচ্ছেন। আমি গিয়াসউদ্দিন স্যারকে ফোন দিতেছি। অযথা লোকটার নাম বিক্রি করে বদনাম করছেন। লোকটায় (গিয়াসউদ্দিন) এসবের ভেতর থাকে না।
ভিডিওটির ঘটনাস্থল (নাসিক) ১ নং ওয়ার্ডের মাসজিদ গলি এলাকায়।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, লন্ডন প্রবাসী অধ্যাপক সেলিম মিয়ার মালিকানা জমিতে মার্কেটের কাজ চলমান রয়েছে। জমি মালিকের অবর্তমানে জিহাদ-হামজা নামের দুই ব্যক্তি নির্মানাধীন কাজের দেখবালের দায়িত্ব রয়েছে। রবিবার বিকেলে তরুণ দল নেতা টিএইচ তোফা কাজ বন্ধের জন্যে হুমকি প্রদান করে।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে থাকা নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল কাদের জানান, আমার ছোট ভাইরা লন্ডন প্রবাসী সেলিম সাহেবের মার্কেটের কাজ দেখবালের দায়িত্ব রয়েছে। আজ বিকেলে দেখলাম হঠাৎ টিএইচ তোফা কাজ বন্ধের জন্য হুমকি দিচ্ছিলো। তিনি এসেই প্রথমে বলেছে গিয়াসউদ্দিন সাহেব কাজ বন্ধ করতে বলেছে। তখন আমি গিয়াসউদ্দিন সাহেবকে বিষয়টি জানানোর জন্য ফোন দিয়েছিলাম কিন্তু তিনি রিসিভ করেনি। আমরা যতটুকু জেনেছি গিয়াস সাহেব তোফাকে পাঠায়নি। উনার নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। তোফা পুরো হীরাঝিল এলাকার মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে।
অভিযোগের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা তরুণ দলের সভাপতি টিএইচ তোফা জানান, আমি কাজ বন্ধ করতে যাইনি। ওই জায়গা রাস্তা বন্ধ করে সীড বাসানো হচ্ছিল। এ ঘটনায় আমাদের নেতা গিয়াসউদ্দিন সাহেবের কাছে আশপাশের বাড়িওয়ালারা নালিশ করলে গিয়াস সাহেব আমাকে পরিদর্শনে পাঠায়। আমি ওইখানে গিয়ে বলেছিলাম রাস্তা ছেড়ে কাজ করতে। অন্য কিছু না। ম‚লত আমাদের দলের কেন্দ্রীয় এক নেতা গিয়াস সাহেবের কাছে বিষয়টি জানালে আমি তিনি আমাকে পাঠায়। আমি আল্লাহ তায়ালাকে হাজির নাজির করে বলছি। কোনো চাঁদা চাওয়া হয়নি।
সাত খুনের ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জ জেলা তরুণ দলের সভাপতি টিএইচ তোফা নূর হোসেনের সাথে আর্থিক লেনদনের বিষয়টি অস্বীকার করলেও বিভিন্ন বিচার শালিস ও এলাকার উন্নয়নের ব্যাপারে নূর হোসেনের অফিসে তার যাতায়াত ছিল বলে সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছিলেন। এমনকি নূর হোসেনের কাছ থেকে একটি গভীর নলকুপ ও এলাকা একটি মসজিদ ও মাদরাসার উন্নয়নের ব্যাপারে তার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা আনার কথাও তিনি তখন স্বীকার করেছেন। তবে তিনি কোথায় মসজিদ মাদরাসার উন্নয়নে ব্যয় করেছেন তা বলতে পারেননি তখন।
আপনার মতামত লিখুন :