ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর হত্যা সহ বিভিন্ন মামলার আসামি নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির নেতাদের পলাতক থাকলেও এবার তাদের ঢাকায় প্রকাশ্যে দেখা মিলেছে। এর আগে জাতীয় পার্টির বিভাগীয় মহাসচিব ও স্বেচ্ছাসেবক পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার দেখা মিললেও এবার নতুন করে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সানাউল্লাহকেও দেখা গেছে।
শনিবার ২৮জুন দুপুরে তারা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি.এম কাদের এর বনানী কার্যালয়ে গিয়ে দেখা করেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুম এর ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে তাদের একটি ছবি পোস্ট করতে দেখা গেছে। ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, জাতীয় পার্টি জিন্দাবাদ, পল্লীবন্ধু অমর হউক, জি.এম কাদের জিন্দাবাদ। আজ বনানী চেয়ারম্যান কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির মাননীয় চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের স্যার এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।
ছবিতে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা ছাড়াও, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সানাউল্লাহ সানু, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা জাতীয় পার্টির সভাপতি কাজী মহসিন, জেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন রূপু, মহানগর ছাত্র সমাজের সভাপতি শাহআলম সবুজ, ও লিয়াকত হোসেন খোকার ভাগিনা রানাকে দেখা গেছে।
হঠাৎ করে নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দের দলীয় চেয়ারম্যানের সাথে সাক্ষাতের প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হয়নি।
তবে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন, জাতীয় পার্টি বর্তমানে একটি কঠিন সময় পাড় করছে। শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ে আবারো ভাঙ্গনের মুখে পড়তে যাচ্ছে দলটি। এ নিয়ে সপ্তম বারের মত দলটি ভাঙ্গণের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। লিয়াকত হোসেন খোকা বর্তমান চেয়ারম্যান জি.এম কাদের এর প্রতি আস্থা রেখে তার নেতৃত্বেই সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। দলের ভেতর থেকে লিয়াকত হোসেন খোকাকে দলের মহাসচিব করার দাবি উঠেছে। সেই দাবিকে আরো জোড়ালো করতেই নারায়ণগঞ্জ জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের ঢাকায় যাওয়া বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে ২২মে এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা ঢাকার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। সা¤প্রতিক সময়ে ঢাকায় তাকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে মিছিল করতে দেখা গেছে। সোনারগাঁয়ে জুলাই বিপ্লবে ছাত্র জনতার উপর হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে খোকার বিরুদ্ধে।
২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থেকে এমপি নির্বাচিত হন খোকা। জাতীয় পার্টির রাজনীতি করলেও ওসমান পরিবারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।
জাতীয় পার্টির প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসিম ওসমানের কর্মী ছিলেন খোকা। ওসমান পরিবারের আশীর্বাদে ২০১৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে বিনা ভোটে এমপি হন খোকা।
২০২৪ সালের পাঁচ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সকল নেতাকর্মী ও সাবেক এমপিরা পালিয়ে গেলেও এখনও বহাল তবিয়তে আছেন লিয়াকত হোসেন খোকা।
মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় পাঁচ আগস্টের পর থেকে সোনারগাঁয়ে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি খোকাকে। সোনারগাঁয়ে মামলার আসামি হওয়ায় ঢাকায় রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন খোকা। ইতিমধ্যে ঢাকায় জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকটি মিছিলে সামনের সারিতে দেখা গেছে খোকাকে।
আপনার মতামত লিখুন :