‘প্রস্তুত হোন’ আজমেরি ওসমানের বার্তা

 বর্তমান বাংলাদেশ বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রস্তুত হওয়ার আহবান জানিয়েছেন ওসমান পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম আজমেরি ওসমান। বিদেশের মাটি অবস্থান করে নিজের নামে ফেসবুক একাউন্টে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে একটি বার্তা দিয়েছেন। ওই বার্তাটি বতর্মান তার নেতা-কর্মীরা শেয়ার করে ‘প্রস্তুত হোন’ নিদের্শনা অপেক্ষায় রয়েছেন। বার্তাটি জানা যায়, প্রিয় সহযোদ্ধারা, আজ যখন মহান স্বাধীনতার চেতনাকে ভুলুণ্ঠিত করার অপচেষ্টা চলছে, তখন আমরা চুপ করে থাকতে পারি না। যারা ৭১-এর পরাজিত শক্তি, আজ তারা আবার মাথা তুলে দাঁড়ানোর দুঃসাহস দেখাচ্ছে। কিন্তু তারা জানে না বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মানেই গণমানুষের শক্তি, এই শক্তিকে কখনও পরাজিত করা যায় না। আমি আপনাদের, আমার প্রাণপ্রিয় কর্মীদের, প্রস্তুত থাকার আহŸান জানাই। খুব শীঘ্রই আমরা এই অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো জনগণের পক্ষ নিয়ে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সামনে রেখে। এই লড়াই হবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, মিথ্যার বিরুদ্ধে, বাংলাদেশ বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে। প্রস্তুত হোন। সময় এসেছে আবার প্রমাণ করার আওয়ামী লীগ মাঠে নামলে অপশক্তির ঠাঁই নেই। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু! 

গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নারায়ণগঞ্জ থেকে ওসমান পরিবার পালিয়ে যায়। বিশেষ করে পতনের দুইদিন আগে কলেজ রোড বাড়ি থেকে বিশেষ গাড়িতে পরিবার নিয়ে পালিয়ে যান প্রয়াত নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরি ওসমান। আর আগে তিনি ছাত্র-জনতা আন্দোলনের বিরুদ্ধে শহরে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। যার কারণে ৫ আগস্ট বিকালে আজমেরী ওসমানের দেওয়ান মঞ্জিল বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে কয়েক হাজার আন্দোলনকারী। এ সময় তাঁর বাড়িতে সাতটি মোটরসাইকেলে আগুন ও দুটি হ্যামার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তিনটি মোটরসাইকেল লুট করে নিয়ে যায়। একই সাথে সপ্তম তলায় তাঁর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। ওই ঘরের আসবাবপত্র, এসিসহ সব ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। তবে হামলাকালে ওই বাড়িতে কেউ ছিলেন না। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আজমেরী ওসমান ও তাঁর পরিবারের লোকজন আগে রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে পালিয়ে যান। অন্যদিকে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের কালীরবাজার এলাকায় নাসিম ওসমানের মালিকানাধীন চারতলা ভবনে ভাড়া দেওয়া হোয়াইট হাউস রেস্টুরেন্টে হামলা চালানো হয়েছে। একপর্যায়ে ওই ভবনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। 

এর আগে পালিয়ে থাকা ৬ মাসের পর আজমেরি ওসমানের দেখা না মিলে পোস্টার সাটানো মাধ্যমে। গত ২১ জানুয়ারি ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা, শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই’ পোস্টার ছিলো আজমেরি ওসমানদের বার্তা। বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের ব্যানারে তাকে দেখা মিলে নাই। গণঅভ্যুত্থানের মুখে পতন হওয়া পর দ্বিতীয় বার আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আজমেরি ওসমান অয়নের ছবি দেখা যায়। পোস্টারে শেখ হাসিনাতেই আস্থা রাতের বেলা পোস্টার সাটানোা হয়। যা দিনের বেলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এরপর গত ২৭ মার্চ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে আজমেরী ওসমানের ব্যানারে "জয় বাংলা" ¯েøাগানে মিছিল বের করে। আজমেরি বাহিনীর অন্যতম মুকিতে নেতৃত্বে মিছিলে বেশিভাগ অনুসারীরার ছিলো মাস্ক পরিহিত অবস্থায়। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পুরো ওসমান পরিবার দেশে বিদেশে পালিয়ে যায়। বিগত ১৬ বছর ওসমান পরিবারের কাছে জিম্মি ছিল নারায়ণগঞ্জ। ওসমানদের ভাই-ভাতিজাদের বিশাল ওসমানীয় সম্রাজ্য বাহিনী ছিল আলোচিত। প্রয়াত নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমান ও শামীম ওসমানের পুত্র ওয়ন ওসমানের অধীনে কিশোর গ্যাং ছিলো ভয়াবহ গ্যাং। 

এর দুই মাস পর গত ২০ মে কাশীপুর ইউনিয়নের ভোলাইল এলাকায় আজমেরী ওসমানের অনুসারী কয়েকজন তরুণ-যুবক মর্শাল মিছিল করে। এ সময় ঝটিকা মিছিল থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধেও ¯েøাগান দেন তারা। খবর পেয়ে কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীরা ওই মিছিলকারীদের ধাওয়া দেন। এ সময় ১৫ বছর বয়সী জিহাদ নামক এক কিশোরকে আটকে পুলিশে সোপর্দ করে বিএনপির লোকজন। এতে ২২ মে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশিকুর রহমান বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করা হয়।

অন্যদিকে গত ১৭ জুন অন্তর্বর্তী সরকার বিরোধী আন্দোলনে বন্দরে আওয়ামী লীগ সমর্থনে আজমেরি ওসমান অনুসারিরা মিছিল বের করে। গভীর রাত ২টায় তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু (নাসিম ওসমান সেতু) বন্দর মদনগঞ্জের সড়কে আজমেরি ওসমানের অনুসারিরা মিছিলটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। আজমেরি ওসমানের বিশস্ত বন্দর রূপালীর সুকমলের নেতৃত্বে ১০/১২ জন মাস্ক পড়ে মিছিলে অংশ নেয়। ব্যানারে আজমেরি ওসমানের সৌজন্যে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা, শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই’ ¯েøাগানে আজ নারায়ণগঞ্জ যুবসমাজের অহংকার শ্রদ্ধেয় আজমেরী ওসমান এর পক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জে মিছিল করেন তার অনুসারীরা। এভাবেই সমগ্র বাংলাদেশের জনগণ জেগে উঠছে স্বৈরাচার, অবৈধ ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে ¯েøাগান দেয়।