বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চর ধলেশ্বরী গ্রাম। চারদিকে নদী বেষ্টিত এই গ্রাম একটি দীপের মতোই সুন্দর। স্বচ্ছ পানি, গাছ পালা, মাছ, ফসল সবই আছে। গ্রামের বাসিন্দাদের সংখ্যাও দুই হাজারের কম নয়। তবে চর ধলেশ্বরী প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে গ্রামবাসীর চাপা কান্না যা গত কয়েক দশকে বন্দরের জনপ্রতিনিধি কিংবা সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের কানে যায়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়ন থেকে চর ধলেশ্বরী গ্রামে যেতে একমাত্র বাহন হচ্ছে ছোট্ট কোষা নৌকা। কারণ এই গ্রামের সাথে এখনো সরাসরি সড়ক বা সেতু স্থাপন হয়নি।
আছিয়া বেগম তার দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে নৌকা দিয়ে চর ধলেশ্বরী গ্রাম থেকে নদীপার হচ্ছেন। যাবেন পাশের সাবদী গ্রামে তার মায়ের বাড়িতে। আছিয়া বলেন, অহন তো বেড়াইতে যাইতাসি কোনো সমস্যা নাই। যখন কেউ অসুস্থ হয় তখন কষ্ট হয়। সন্ধ্যার পর নৌকাও পাওয়া যায়না। ওই পারের মানুষ মন চাইলেই যেখানে খুশি চলে যায়। আমরা তা পারিনা, আমাদের এই হলো কষ্ট। আমাগো একটা রাস্তা কইরা দেন। আর কিছু চাইনা।
জানা গেছে, বহু-বছর আগে পাশের এলাকা থেকে একটি সড়ক খালের উপর দিয়ে চর ধলেশ্বরী গ্রামের সাথে যুক্ত করতে কাজও শুরু হয়েছিলো। তবে সেটি অর্ধেক এসে থেমে যায়। যতটুকু হয়েছে তাও নিচু হওয়ায় পানিতে তলিয়ে আছে। তাই সড়ক পথে যাতায়তের যেই স্বপ্ন এই গ্রামের মানুষ দশকের পর দশক ধরে দেখছে তা অপূর্ণই রয়ে যায়।
এদিকে দুই হাজার মানুষের বসবাস হলেও এই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে এখনো কাঁচা রাস্তা। সন্ধা নামলে সেই রাস্তাগুলো পরিণত হয় ভূতুরে রাস্তায়। বিশুদ্ধ পানির সংকট, সরকারী সহায়তা না থাকাসহ মোটা দাগে আরো অনেক কঠিক সমস্যা দেখানো যাবে চর ধলেশ^রী গ্রামের। তবে এই গ্রামের মানুষ এখন একটু পরিবর্তন চায়।
আলী আকবর নামে এক যুবক বলেন, আমি বুদ্ধি হওয়ার পর আমাদের গ্রামে কোনো উন্নয়ন দেখি নাই। আমাদের গ্রামে নৌকা দিয়ে আসতে হয় তা নিয়ে আক্ষেপ নাই। কিন্তু আমাদের যা আছে সেইটুক তো আপনারা চেয়ারম্যান, মেম্বার আর এমপিরা গুছায় দিতে পারতেন। কিন্তু কেউ করে নাই। চেয়ারম্যান আছিল তেলচোর। এমপি তো আমাগো পুরা গ্রামই গিল্লা খাইতে চাইছিলো। আল্লায় রক্ষা করছে। এখন আমরা চাই যাতে আমাগো গ্রামের রাস্তাঘাট আগে ঠিক হয়, সড়কে বাতি আর পানির ব্যবস্থা। এরপর যদি বড় কোনো উন্নয়ণ হয় তাহলে আরো ভালো।
আপনার মতামত লিখুন :