কদম রসুল সেতুর পশ্চিমাংশের মুখ পুনঃনির্ধারণ করে, যথাযথ সমীক্ষা জনিত ত্রুটি নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল সকালে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন প্রশাসকের পক্ষ থেকে স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন।
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন ভবানী শংকর রায়, জিয়াউল ইসলাম কাজল, জাহিদুল হক দীপু, ধীমান সাহা জুয়েল, হাফিজুল ইসলাম, আবু নাইম খান বিপ্লব প্রমুখ।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়কে সংযুক্ত করার প্রয়োজনে এর উপর কদম রসুলসেতু নির্মাণের সংবাদটি আমাদেরকে আনন্দিত করেছে। কিন্তু এই সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া দীর্ঘ দিন থেকে শুরু হলেও এই সেতু ব্যবহারকারী নাগরিকদের সাথে এ প্রকল্প নিয়ে মতবিনিময় বা তাদের অভিমত জানার জন্য কখনো কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় নাই। যা এমন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অত্যন্ত জরুরি ছিল বলে আমরা মনে করি। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের এখন এমনি কয়েকটি প্রকল্প চলমান রয়েছে, যা সম্পর্কে নাগরিকবৃন্দ পুরোপুরি অবগত নন।
এখানে উল্লেখ্য যে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বহু প্রকল্প, মেগা-প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে যা, কেবল মাত্র নিজেদের ব্যক্তি বিশেষের অর্থ লুটপাটের উদ্দেশ্যে গ্রহণ করা হয়েছে বলে পরবর্তীতে প্রমাণ হয়েছে। সে সব প্রকল্প বিভিন্ন জায়গায় উপকারের চেয়ে ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছে।
কদম রসুল সেতুটির প্রকল্প নকশায় দেখাগেল এর পশ্চিমাংশের মুখটি শহরের অত্যন্ত ব্যস্ততম সড়ক ফলপট্টি এলাকায় নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনে এসে নেমেছে। এইটি এভাবে বাস্তবায়িত হলে তা নারায়ণগঞ্জের মানুষের জন্য একটি ভয়াবহ দুর্ভোগের কারণ হবে বলে আমরা মনে করি। এমনিতে এক-নং রেল গেট থেকে পুরো সিরাজ উদদ্দৌলা সড়কটিতে সব সময় অস্বাভাবিক ট্র্যফিক জ্যাম থাকে। এখানে শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বড় স্কুল নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল, পাশে নারায়ণগঞ্জ কলেজ, এর সাথে দিগুবাবু বাজারে প্রদেশের মুখ, সর্বপরি এইটি শহরের রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল ও লঞ্চঘাটের সংযোগ সড়ক হওয়ায় এখানে প্রতিনিয়ত যেমনি ভয়াবহ যানজট থাকে, আবার বিভিন্ন সময় এখানে রেললাইনের কাছে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এমনি একটি ব্যস্ততম সড়কে কদম রসুল সেতুর মুখ যদি যুক্ত হয় তা হলে সে সেতু থেকে যানবাহন সড়কে নামার ক্ষেত্রে যেমনি সংকটে পড়বে অন্যদিকে এই পুরো এলাকাটিই সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে। এত বড় সেতুর নকশা তৈরির ক্ষেত্রে নগরের এই বাস্তবতা ও সংকটটি গভীর ভাবে বিবেচনায় নেয়া উচিত ছিল বলে আমরা মনে করি। এই প্রকল্পে যথাযথ সমীক্ষারক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে বলে আমরা মনে করছি। এই সেতু দিয়ে ঘন্টায় কত যান চলাচল করবে এবং তার ধারণ সক্ষমতা সংশ্লিষ্ট সড়কের কতটুকু রয়েছে তা এই প্রকল্পের নকশা তৈরির ক্ষেত্রে সঠিক ভাবে গুরুত্ব পেলে, এত বড় ভুল হতো না বলে আমরা মনে করি।
আমরা অতি দ্রুত যথাযথ সমীক্ষার মাধ্যমে এই ত্রুটি সমাধা করে গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটির পশ্চিমাংশের মুখটি পুনঃনির্ধারণের দাবি জানাচ্ছি। অপরিকল্পিত উন্নয়ন জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি করা ছাড়া কোন সুফল বয়ে আনে না। যেনতেন ভাবে প্রকল্প সম্পন্ন করে নারায়ণগঞ্জের মানুষের দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি করার যে কোন উদ্যোগ আমরা মেনে নেব না।
আপনার মতামত লিখুন :