News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

বদলায়নি জাকির খান


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম বদলায়নি জাকির খান

নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ব্যক্তি হিসেবে আলোচনা সমালোচনায় রয়েছেন জাকির খান। ঢাকায় অষ্টম শ্রেণীতে লেখাপড়া চলাকালে জাতীয় পার্টির ছাত্র সমাজে রাজনীতি জড়ান তিনি। ক্ষমতার টার্গেটে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হয়ে বর্তমান মহানগর বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচিত লাভ করেছেন। ৫১ এর বেশি সময়ে জাকির খান জীবনে ১৯ বছর ছিলেন পলাতক। তিন সরকার আমলে তিনবারে প্রায় সাত বছ জেলে ছিলেন। আগে যেভাবে তার চরিত্র দেখা গেছে বর্তমান ডিজিটাল সময়ে একই রূপ দেখা মিলেছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জবাসী। বুকের বোতাম খোলা শার্ট আর অসুস্থকর হাত নাড়াচাড়ায় জাকির খান এখনো বহাল থাকায় তার ভবিষ্যত রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নতুন প্রজন্ম।

বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশে জাকির খান কিভাবে নিজেকে জাগ্রত করে তুলবেন এখন সেই নজর ধরে রেখেছেন। ৫১ বছরের জাকির খানকে বখাটের শার্টে নয় প্রবীণ রাজনীতিবিদদের পাঞ্জাবীতে দেখা মিলেনি। নারায়ণগঞ্জ বিএনপি কয়েক নেতা জানিয়েছেন, জাকির খান বড় হলেও তার ছোট শিশু-কিশোরদের মত আচরণ রয়েছে। রাজনীতি মামলায় জাকির খান জেলে থাকতে হয়নি। বরং হত্যা ও ভাংচুরের মামলায় জেলে ছিলেন কয়েকবার।

১৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি সময় তাকে পাঞ্জাবী অবস্থা দেখার ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু বোতাম খোলা শার্ট নিয়ে বের হয়ে শহরে শো-ডাউনে নারায়ণগঞ্জবাসী তাকে গ্রহণ করতে পারেনি। বরং রাজনীতি দল ও সাধারণ মানুষ তাকে আগের চেহারায় দেখতে পেয়েছে। জাকির খানের ওই শো-ডাউনে বিএনপি শীর্ষ নেতাদের অনুপস্থিতিতে সুবিধা ভোগী মানুষদের ভিড় দেখা গেছে। এর ফলে আগামী দিনে জাকির খান বিএনপি রাজনীতি কেমন সক্রিয় হবেন সকলের মুখে প্রশ্ন উঠেছে।

জাকির খান ১৯৭৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ দেওভোগ আখড়া দৌলত হোসেন খান ও আছিয়া খানমের ঘরে জন্মগ্রহণ করে। চার সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় হলেন জাকির খান। ১৬ বছরের জাকির খান ঢাকায় লেখাপড়ায় অষ্টম শ্রেণী ছিলেন বলে জানা যায়। ১৯৮৯ সালে জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী এমপি নাসিম ওসমানের হাতে ধরে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে ছাত্রসমাজে ছাত্র রাজনীতি নেতা বনে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর জাকির খানের সঙ্গে নাসিম ওসমানের বিরোধ বাধে। পরে জাকির খান বিএনপি নেতা কামালউদ্দিন মৃধার নেতৃত্বে ১৯৯৪ সালে বিএনপিতে যোগ দেন।

এরপর থেকে জাকির দুর্ধর্ষ রাজনীতি ধারাবাহিকতায় মাফিয়া ডন হিসেবে রূপ ধারণ করতে শুরু করে। বিএনপি ক্ষমতার শেষ প্রান্তে ১৯৯৫ সালে দেওভোগ এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করার অভিযোগ উঠে জাকির খানের বিরুদ্ধে। ১৯৯৬ সালে বিএনপি সরকারের শেষ দিকে জাকির খান শহরের খাজা সুপার মার্কেটে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড পেয়ে জেলে যান। পরে দেওভোগ ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতা হিসেবে রাষ্ট্রপতি সাধারণ ক্ষমায় তিনি সহ বাকি আসামীরা মুক্ত হন। মুক্ত হওয়ার পিছনে সে সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মতিন চৌধুরীর অবদান থাকায় নাতি হিসেবে শহরে পরিচিত হয়ে ওঠেন জাকির খান। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় শুরুতে এক ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে জাকির খানের ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয় এবং তিনি জেলে যান। আওয়ামী লীগের ৪ বছর জাকির খান জেলে থাকে।

২৬ বছর বয়সে ১৯৯৯ সালে জেল থেকে বের হয়ে জাকির খান জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হন। আওয়ামী লীগের শাসনামলের শেষ দিকে ২০০০ সালে শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ থেকে টানবাজার ও নিমতলী পতিতালয় উচ্ছেদ করলে জাকির খানের পরিবারের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙ্গে যায় বলে সেসময় খবর ছড়ায়। বিশাল গাড়ী বহর নিয়ে অস্ত্রের মহড়া শুরু করলে ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আবার কারাবন্দি হন তিনি। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরও প্রায় ৫ মাস তিনি জেলে থাকেন। ২০০৩ সালে ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায়ী সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা ও ২০০৪ সালে ক্লিন হার্ট অভিযান চলাকালে দেশত্যাগ করেন জাকির খান। পলাতক জীবনে দেওভোগে একটি বড় অংশ জাকির খান নিজস্ব বলয়ে বাহিনী গড়ে তুলেন। বিসিক ও দেওভোগ সহ একাধিক স্থানে মোটা অঙ্কের টাকায় দীর্ঘ বছর ধরে নেতাকর্মীদের আগলে ধরে রেখেছেন।

Islam's Group