নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সীমানা পুনর্গঠনের ফলে নতুন সমীকরণ তৈরি হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জকে সোনারগাঁয়ের সঙ্গে যুক্ত করায় সবচেয়ে বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে চলে এসেছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এমপি প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে সোনারগাঁয়ে সক্রিয় ছিলেন। শুরুতে নিজ নির্বাচনী আসন ছেড়ে অন্য আসনে কাজ করায় অনেকে তাকে নিয়ে হাসাহাসি করলেও এখন প্রমাণ হয়েছে গিয়াস আগেই দূরদর্শিতা দেখিয়েছিলেন। অন্যদিকে, এই পরিবর্তন মান্নানের জন্য কঠিন লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান এতদিন সোনারগাঁকেন্দ্রিক রাজনীতিতেই নিরঙ্কুশ প্রভাব বজায় রেখেছিলেন। কিন্তু সিদ্ধিরগঞ্জে তার কোনো যোগাযোগ না থাকায় সেখানে কার্যত নতুন করে মাঠ গড়ে তোলা তার জন্য কষ্টকর হয়ে উঠবে। বিপরীতে সিদ্ধিরগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে গিয়াস উদ্দিনের একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে। তাছাড়া সোনারগাঁয় মান্নানের যেসব প্রতিপক্ষ আছেন তারা এখন গিয়াসের পক্ষে কাজ করছেন। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি রেজাউল করিম ও তার অনুসারীরাও গিয়াসকে সমর্থন দিচ্ছেন। এ অবস্থায় মান্নানের জন্য রাজনৈতিক মাটিতে টিকে থাকা সহজ হবে না।
এর আগে ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে পরাজিত করে গিয়াস উদ্দিন সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও তার সামনে সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গিয়াস ও মান্নানের পাল্টাপাল্টি শোডাউন এ লড়াইকে আরও সরগরম করে তুলেছে। দুজনেই হাজারো গাড়িবহর ও কর্মী-সমর্থকের শক্তি প্রদর্শন করেছেন, যা সোনারগাঁর রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ ছড়িয়েছে। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে একসময় মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন গিয়াস। ফতুল্লার রাজনীতিতে তার দৃঢ় প্রভাব ছিল। কিন্তু কৌশলগতভাবে সোনারগাঁয়ে মনোনিবেশ করে তিনি রাজনীতির নতুন সমীকরণ তৈরি করেছেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, সভা-সমাবেশে অংশগ্রহণ এবং জনসম্পৃক্ততা তাকে দ্রুত সোনারগাঁয় গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।
সম্প্রতি এক সভায় গিয়াস বলেন, “সোনারগাঁয়ের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্ব রয়েছে। এখানকার মানুষের আন্তরিকতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমরা চাই সোনারগাঁ থেকে শক্তিশালী বিএনপি গড়ে উঠুক। কোনো ভেদাভেদ না করে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে হবে, যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটাতে হবে।”
আপনার মতামত লিখুন :