বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শত শত কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, অধিগ্রহণ করা হচ্ছে একরের পর একর কৃষি ভূমি। তারপরেও বর্জ্যের সুব্যবস্থাপনা আসেনি নারায়ণগঞ্জবাসীর কপালে। এখন আবার নতুন করে ৩০ একর কৃষি জমি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নিচ্ছে সিটি করপোরেশন। স্থানীয়রা এর বিরোধিতা করছে।
প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জে ১ হাজার টন বর্জ্য উৎপাদন হয়। বর্জ্যের অব্যবস্থাপনার কারণে নষ্ট হচ্ছে খাল, নদী ও পরিবেশ। বাড়ছে নগরবাসীর স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
সিদ্ধিরগঞ্জ, কদম রসূল ও নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা বিলুপ্ত করে ২০১১ সালে গঠিত হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির জন্মলগ্ন থেকে মূল সমস্যাগুলোর অন্যতম হয়ে উঠে বর্জ্যের অব্যবস্থাপনা। এ নিয়ে ময়লার রাজনীতিও কম হয়নি।
জালকুড়িতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প গ্রহণ করে ২০১৭ সালে সমস্যাটির সমাধান করতে চেয়েছে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানটি। যতদিনে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অপারগতা প্রকাশ করে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান, ততদিনে ২৩ দশমিক ২৯ একর কৃষি ভূমি অধিগ্রহণ ও ভূমি উন্নয়ন করা হয়ে গিয়েছিল।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়িতে অধিগ্রহণ করা জমিটি এখন (দশপাইপ) বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
এছাড়া দ্বিতীয় ডাম্পিং স্টেশনের জন্য ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ২৫ নং ওয়ার্ডের ধামগড় ও ল²ণখোলা মৌজায় ৬৯ দশমিক ৮৭ একর জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি পঞ্চবটিতে ১ একর জমি নির্ধারণ করা হচ্ছে বর্জ্য থেকে জৈবসার উৎপাদনের জন্য। কিন্তু প্রকল্পগুলোর ভালো কোন ফল পায়নি নারায়ণগঞ্জবাসী।
এখন আবার নতুন করে আবার জালকুড়িতে পুরাতন ডাম্পিংয়ের পাশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জন্য আরও একটি প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ‘আরবান ডেভেলপমেন্ট সিটি গভমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় জালকুড়ি মৌজার ১০০ টি ভিন্ন ভিন্ন আরএস দাগে ৩০৩০ শতাংশ কৃষি ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে, সিদ্ধান্তটির সমালোচনা করছে স্থানীয় লোকজন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দশপাইপের ডাম্পিং এর স্থানে তেমন কোন কার্যক্রম চলছে না। বর্জ্য অপসারণে ব্যবহৃত কিছু গাড়ি সেখানে রাখা হচ্ছে। এছাড়া বড় বড় জমিতে বেশ কিছু কাশফুল গাছ হয়ে আছে।
প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন ব্যক্তিদের একজন দোকানী মো. রিয়াজ। তিনি জানান, আগে যে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, সেটাই কাজে আসছে না। তাই নতুন করে জমি নেওয়ার কারণ দেখছি না। আমরা চাই এখন নতুন করে অধিগ্রহণ না হোক।
নগর-পরিকল্পনাবিদ মো. মঈনুল ইসলাম জানান, নারায়ণগঞ্জের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য জালকুড়িতে আগেই ২৩ দশমিক ২৯ একর কৃষি ভ‚মি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১০ একর জমিতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত হয়নি। এখন সেখানেই নতুন করে আরও ৩০ একর জমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে, সেটা খুবই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :