News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২

কাসেমীর জন্য ধাক্কা মোহাম্মদ আলী শাহআলম


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ১০:৪৫ পিএম কাসেমীর জন্য ধাক্কা মোহাম্মদ আলী শাহআলম

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ আগে থেকেই আলোচনায় রয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী। কিন্তু নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে তার সম্ভাবনা যেন মিইয়ে যাচ্ছে। তার নির্বাচনের পথে ধাক্কা হিসেবে আবির্ভাব হতে যাচ্ছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী ও বিএনপি নেতা মোহম্মদ শাহ আলম।

নির্বাচনের সমীকরেণে মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী বিএনপি দলীয় সমর্থন পেয়ে গেলেও তার বিপরীতে মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী ও বিএনপি নেতা মোহম্মদ শাহ আলম স্বতন্ত্র হিসেবে মাঠে থেকে গেলে বড় ধাক্কা হিসেবে আবির্ভাব হবে। হয়তো সেই ধাক্কা সামলানোর সক্ষমতা থাকবে না মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীর। তিনি যতই বিএনপি প্রীতি প্রদর্শন করুক বিএনপির নেতাকর্মীরা সহ সাধারণ জনগণ তাকে গ্রহণ করবে না।

সূত্র বলছে, দিন যাওয়ার সাথে সাথে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে। আর নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে সংসদ সদস্য পদে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাও নিজেদের জানান দিতে শুরু করেছেন। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় একের পর এক সভা সমাবেশ করে বেড়াচ্ছেন। একই সাথে নির্বাচনী সমীকরণও স্পষ্ট হয়ে উঠতে শুরু করছে।

তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপির জোটের সমীকরণে নারাযণগঞ্জ-৪ আসন এলাকায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীর সম্ভাবনা উঁকি মারছে। হয়তো তিনি নারায়ণগঞ্জ আসন এলাকায় মনোনয়নও পেয়ে যেতে পারেন। কিন্তু তিনি মনোয়ন পেয়ে গেলেও তাকে বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীদের মেনে নেয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

তার বিপরীতে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী ও বিএনপি নেতা মোহম্মদ শাহ আলম স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনী মাঠে আবির্ভাব হতে পারেন। তাদের দুইজনের একজন মাঠে থাকার থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের বিভিন্ন কর্মকান্ডে এমনটাই উপলব্দি করা যাচ্ছে। তারা যেন কোনোভাবেই মেনে নিতে নারাজ মনির কাসেমীকে। আর যদি তাদের দুইজনের একজন নির্বাচনী মাঠে ভোটের লড়াইয়ে নেমে গেলে লড়াইয়ে টিকে থাকা মনির হোসাইন কাসেমীর একেবারেই অসম্ভব হয়ে যাবে।

এদিকে বিভিন্ন সময় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিবন্ধিত ছোট ছোট রাজনৈতিক দল জোটবদ্ধভাবে ভোটে অংশ নিয়ে শরীক দলের প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারতো। কিন্তু এখন থেকে, জোটগত ভাবে নির্বাচনে অংশ নিলেও নিজ নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে, এমন বিধান করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিওর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়টি চূড়ান্ত হলে মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীকে ধানের শীষ প্রতিক বাদ নিয়ে নিজ দলীয় প্রতিকে নির্বাচন করতে হবে। যা মনির হোসাইন কাসেমীর জন্য সুবিধাজনক হবে না।

এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের শুরু থেকে নারায়ণগঞ্জ-৪ সংসদীয় এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীরাসহ প্রায় সকলেই নিশ্চিত ছিলেন এই আসনে ২০ দলীয় জোটের পক্ষে বিএনপির প্রার্থীকেই ধানের শীষের প্রতিক দেয়া হবে। কিন্তু চূড়ান্ত বাছাই পর্বে হঠাৎ উড়ে এসে জুড়ে বসেন জমিয়ত উলামার মনোনীত প্রার্থী মাওলানা মনির হোসাইন কাশেমী। সেই সাথে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে দিনভর নানা জল্পনার পর বিকেলে তার হাতে তুলে দেওয়া হয় ধানের শীষের মনোনয়ন পত্র।

অথচ তার বিরুদ্ধে ছিলো তৎকালিন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্যের সাথে আঁতাতের অভিযোগ। মূলত স্থানীয় ক্ষমতাসীনদের সমর্থনেই তার বেড়ে উঠা এবং একই সাথে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ারও ইচ্ছা পোষণ করেন। এমনকি বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরাসহ অনেকেই তাকে চিনতেনই না।

বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ ছিলো-বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটের শরিক দল জমিয়তে উলামা হলেও জমিয়ত নেতা মনির হোসাইন কাসেমীকে কেউই চিনতো না। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের শুরুতেও তার কোন আলাপ আলোচনাই ছিল না। সংসদীয় এলাকাতেও তার তেমন একটা পরিচিত নেই। অনেকের কাছেই তিনি অপরিচিত। তারপরেও তাকে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়।

কিন্তু এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বিএনপি স্থানীয় পর্যায়ের দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে পরামর্শ না করেই মনির হোসাইন কাসেমীকেই ২০ দলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়। জোটের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতিক পাওয়ার পরেও জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে তিনি কোন যোগাযোগ করেনি। এর আগেও তিনি যোগাযোগ করেনি। ফলে ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও মনির হোসাইন কাসের্মীকে প্রায় অনেকটাই বয়কট করেছিলেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মী।

এবারও সেই মনির হোসাইন কাসেমী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরব হয়েছেন। সেই সাথে যে কোনোভাবেই মনোনয়ন বাগিয়ে আনার চেষ্টায় রয়েছেন। একই সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের মন জয় করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সভা সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সহ বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রশংসা করে বেড়াচ্ছেন।

তবে তার বিপরীতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী ও বিএনপি নেতা মোহম্মদ শাহ আলম আবির্ভাব হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

তার আগে, ২০০৮ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মোহাম্মদ শাহ আলম আওয়ামী লীগের প্রার্থী সারাহ বেগম কবরীর সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে মাত্র ২ হাজার ১০০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন।

মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, আগামী নির্বাচনে দল আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করবো। দীর্ঘ ১৭ বছর আমি দলের জন্য পরিশ্রম করে আসছি। ২০০৮ সালে নির্বাচন করেছি আমাকে ষড়যন্ত্র করে পরাজিত কর হয়েছে এটা সকলেই স্বীকার করে। তারপর ২০১৮ সালে দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে কিন্তু জোটের স্বার্থে আমাকে ত্যাগ করতে হয়েছে। এবার আমি শতভাগ আশাবাদী দল আমাকে মনোনয়ন দিবে। আমি দলের পরীক্ষিত সৈনিক। আমি দলের জন্য কাজ করেছি।

Islam's Group