News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২

মৃদু তর্ক বিতর্ক থাকলেও কর্মীরা ব্যস্ত থাকছে দলীয় কর্মসূচিতে


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ১০:৫৭ পিএম মৃদু তর্ক বিতর্ক থাকলেও কর্মীরা ব্যস্ত থাকছে দলীয় কর্মসূচিতে

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই শিল্পপতি মাসুদুজ্জামান মাসুদ ও আবু জাফর বাবুল। তাদের দুজনেরই সমর্থকদের দাবি অতীতে বিএনপির জন্য তাদের ভূমিকা ছিল। এরপর দুজনই দীর্ঘ বছর ব্যবসায়ীক কারণে দল থেকে দূরে ছিলেন। বর্তমান সময়ে আবারো দুজন বিএনপিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। সম্ভাব্য এই দুই প্রার্থীর মধ্যে মনোনয়ন পাওয়ার যুদ্ধটা এখন বেশ জোড়ালো ভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। সমালোচকদের সমালোচনার মুখে গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় গিয়ে জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদ গ্রহণ করেন। যা শুধু নারায়ণগঞ্জই নয় পুরো দেশ জুড়েই আলোচিত হয়েছিল।

যোগদানের পর থেকে মাসুদুজ্জামান মাসুদ ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মাঝে চলে বক্তৃতায় কটাক্ষ ও তীর্যক মন্তব্য। যেটি এক পর্যায় কাদা ছুড়াছুড়িতে রূপ নেয়।

মাসুদুজ্জামান মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দদের উদ্দেশ্য করে বলেন, তাদের ইউনিয়ন পরিষদে মেম্বার নির্বাচন পাস করে আসার যোগ্যতা নেই। অন্যদিকে প্রতিউত্তরে মহানগরের নেতারা মাসুদুজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে বলেছে, এগুলো সব টাকার দাম্ভিকতা। যোগদান করে গডফাদার হয়ে অবর্তীন হয়েছে এমপি হওয়ার স্বপ্নে উম্মাদ হয়ে গেছে।

মহানগর বিএনপির এই অস্থির পরিস্থিতি নিয়ে জেলার শীর্ষ নেতারা এতোদিন মুখ না খুললেও সম্প্রতি সময়ে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ নিয়ে কথা বলেছেন। মহানগর বিএনপির মধ্যে এমন বাক্য বিনিময় ব্যক্তি ও দলের জন্য ক্ষতিকর মন্তব্য করে উভয় পক্ষ এসব থেকে বিরত থাকবেন বলেন আশা প্রকাশ করেছেন।

তবে দুই পক্ষের এই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় দুই দিনের মধ্যেই অনেকটা শান্ত হয়ে পড়ে।

এতোদিন এই দুই শিল্পপতির কেউ স্বশরীরে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ না নিলেও এখন দুজনেই স্বশরীরে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে শুরু করেছেন।

শুক্রবার ১৭ অক্টোবর বন্দরে কদম রসূল দরগা জিয়ারত ও দোয়ার মধ্য দিয়ে মাঠের রাজনীতি সক্রিয় হয়ে উঠেছেন প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবু জাফর বাবুল। দোয়া শেষে তিনি বন্দরের বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণে অংশ নেন। এ সময় তিনি বিএনপির কর্মীদের বুকে টেনে নেন।

অন্যদিকে একই দিন মাসুদুজ্জামান নগরীতে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণে স্বশরীরে মাঠে নামেন। এতোদিন তিনি তার পক্ষ থেকে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করলেও স্বশরীরে মাঠে নামেননি। ফলে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণকারীদের বেতন ভুক্ত কর্মচারী বলে আখ্যায়িত করেছেন।

শুক্রবার মাসুদুজ্জামান নিজেই ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নেন। পরবর্তীতে তিনি ডি.আই.টি মসজিদে জুমআ নামাজ আদায় করেন। সেখানে বক্তব্য রাখতে চাওয়া নিয়ে একটি বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে। তবে মাসুদুজ্জামানের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ভাবে সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করা হয়ে তিনি মসজিদে বক্তব্য রাখতে চাননি। তাই তাকে মানা করে দেওয়ার প্রশ্ন আসেনা।

সবশেষ শনিবার দুপুরে মহানগর যুবদলের উদ্যোগে আয়োজিত যুব সমাবেশে উপস্থিত হয়েছেন মাসুদুজ্জামান। সেখানে তিনি বলেছেন, দল যদি তাকে মনোনয়ন নাও দেন তাও তিনি মহানগর যুবদলের পাশে থাকবেন এবং দল থেকে যাকে ধানের শীষের প্রতীক দেওয়া হয়ে তাকে বিজয়ী করতে যুবদলকে সাথে নিয়ে কাজ করবেন।

অন্যদিকে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, দলের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত। দলের সিদ্ধান্তকে তিনি সব সময় শ্রদ্ধা ও সম্মান করেন। দল থেকে যাকে ধানের শীষ প্রতীক দিয়ে মূল্যায়ন করা হবে মহানগর বিএনপি তাকেই বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন। সে যদি আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম বা মাসুদুজ্জামান মাসুদও হয়। তবে তিনি দলের প্রতি প্রত্যাশা রেখেছেন অতীতে যারা দলের জন্য ত্যাগ শিকার করেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, জেল খেটেছেন মামলা হামলার শিকার হয়েছে দল অবশ্যই সেই ত্যাগ মূল্যায়ন করবেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দুই শিল্পপতি রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হওয়াতে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির জন্য অনেকটাই পজেটিভ হয়ে দেখা দিয়েছে। যদিও তাদেরকে ঘিরে মৃদু আলোচনা ব সমালোচনা বক্তব্য পাল্টা বক্তব্য শোনা গেছে। কিন্তু তবুও সেটি সার্বিক ভাবে বিএনপির জন্য ফলাফল দিতে শুরু করেছে। গত একবছরে বিএনপির নেতাকর্মীরা যেভাবে বির্তকিত কর্মকান্ডে নিজেদের জড়িয়ে ছিলেন, গত একমাসের বেশি সময় ধরে তেমন বির্তকিত কর্মকান্ডে তাদের জড়াতে দেখা যাচ্ছেনা। পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এই দুই শিল্পপতি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য অনুযায়ী নিজেদের জনগণের কাছা কাছি নিয়ে যেতে নানান সামাজিক কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন, যার মধ্যে ডেঙ্গু প্রতিরোধ, ৩১ দফার বাস্তবায়ন জনমত তৈরির মত নানার কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন নিজেদের মত করে। এতে করে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে হলেও দলের নেতাকর্মীরা বিএনপির জন্য কাজ করছেন মাঠে সক্রিয় হয়েছে, দলীয় কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত থাকছেন। এটি বিএনপির জন্য অবশ্যই ভাল ফলাফল বয়ে আনতে শুরু করেছে।

Islam's Group