নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের শীর্ষ সন্ত্রাসী শুটার মাসুদকে বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ রোববার রাতে সোনারগাঁও থানাধীন পেরাব এলাকা থেকে
গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১। পৃথক আরেকটি অভিযানে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় পুলিশ ক্যাম্পে সশস্ত্র হামলার ঘটনায় জড়িত মেঘনার শীর্ষ নৌ-ডাকাত আক্তারকে কুমিল্লার তিতাস থানা এলাকা থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিশেষ নৌকা ও অন্যান্য সরঞ্জামাদিসহ গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে অবস্থিত কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, নারায়ণগঞ্জের সোনারগায়ের কাপড় ব্যবসায়ী রাকিবকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামী শুটার মাসুদ সোনারগাঁও ও আড়াইহাজারের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময় অস্ত্রসহ শোডাউন এর মাধ্যমে এলাকাতে আতঙ্ক ছড়িয়ে নিরীহ জনগণের থেকে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, লুটপাট, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা সহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিল।
রোববার রাতে সোনারগাঁও থানাধীন পেরাব এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মাসুদকে ১টি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, ৬ রাউন্ড তাজা গুলি, ২ বোতল হুইস্কি ও ৫৮ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়। শুটার মাসুদ আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোবারক হোসেনের পুত্র।
উল্লেখ্য যে, মো. মাসুদ (২৮) শুটার মাসুদের নামে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় ১টি হত্যা, ৩টি হত্যা চেষ্টা, ১টি নাশকতা, ১টি ডাকাতি ও ১টি মাদকসহ মোট ৭টি মামলা রয়েছে।
কাপড় ব্যবসায়ী রাকিব হত্যাকান্ডের একটি সিসিটিভির ফুটেজ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাপক ভাইরাল হয়। এই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামি মো. মাসুদ (২৮) ওরফে শুটার মাসুদ ব্যবসায়ী রাকিবকে রাস্তার পাশে ঝোপের মধ্যে ফেলে নিজের কোমর থেকে পিস্তল বের করে পরপর দুটি গুলি করে ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র উঠিয়ে বীরদর্পে চলে যায়।
অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের মেঘনা নদী ও শাখা নদীতে অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা, নৌযানে চাঁদাবাজি করে আসছে নয়ন, পিয়াস, আক্তার বাহিনীর সদস্যরা। গত এক বছরে নদীতে কয়েক দফা গোলাগুলিতে স্থানীয় কয়েকজন তাদের হাতে খুন হন। তাদের ভয়ে এলাকার শতাধিক পরিবার গ্রাম ছাড়া হয়েছিল।
২৫ আগস্ট বিকেলে মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানা ও গুয়াগাছিয়া অস্থায়ী ক্যাম্পের পুলিশ যৌথভাবে মেঘনা নদীতে ১টি অভিযান পরিচালনার করার জন্য রওনা করেন। অভিযান পরিচালনাকালে সরকারী স্পিডবোড যোগে গজারিয়া থানাধীন গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের অর্ন্তগত জামালপুর এলাকার মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় পৌঁছামাত্র পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি বুঝতে পেরে
নয়ন-পিয়াস এবং গ্রেফতারকৃত আসামী আক্তারের নেতৃত্বে প্রায় ৪০-৫০ জন ডাকাত সদস্য ৪-৫ টি হাইস্পিডি ট্রলার যোগে এসে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল এবং চর্তুদিক হতে গুলি বর্ষণ করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি চালায়। পুলিশের বাধার মুখে পতিত হয়ে ডাকাত সদস্যরা দ্রæত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।
রোববার রাতে কুমিল্লার তিতাস থানা এলাকা হতে আক্তারকে আটক করতে সক্ষম হয়। মেঘনার শীর্ষ নৌ-ডাকাত মো. আক্তার সরকার (৫০) গজারিয়া থানাধীন গুয়াগাছিয়া এলাকার সরকারবাড়ির আব্দুল মজিদ সরকারের পুত্র। পরবর্তীতে আসামীর দেওয়া তথ্য মতে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানাধীন মোল্লাকান্দি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত পুলিশ ক্যাম্পে হামলায় ব্যবহৃত বিশেষ ইঞ্জিন চালিত নৌকা, ৫টি পিতলের তৈরি নৌকার পাখা, ২টি চুম্বক, ১টি বাইনোকুলার, ১টি ছোরাসহ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
মো. আক্তার সরকারের নামে মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন থানায় ৪টি হত্যা, ২টি ডাকাতি, ১টি অপহরণ, ১টি চাঁদাবাজি, ৪টি বিষ্ফোরক, ১টি মাদক, ১৪টি হত্যা চেষ্টাসহ মোট ২৭টি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।
আপনার মতামত লিখুন :