নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে এক নতুন উত্তেজনার সঞ্চার হয়েছে, যেখানে বিএনপির বিরুদ্ধে ইসলামী দলগুলোর ওপর রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক চাপে রাখার অভিযোগ উঠেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে দৃশ্যমান হামলা চালিয়ে আহত করছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। যেখানে তাদের সাথে আওয়ামী লীগের লোকজনকে পাশে দেখা গেছে। এমন অবস্থায় ইসলামী দল ও সংগঠনগুলোর অভিযোগ, বিএনপি তাদের দুর্বল ভেবে নানা রকম কৌশলে কোণঠাসা করে রাখার চেষ্টা করছে।
স¤প্রতি নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় ইসলামী দলগুলোর সমাবেশ ও কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া, মারধর ও নেতাকর্মীদের হুমকি-ধমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব বিষয় সামনে এনে ইসলামী দলগুলোর নেতারা বলছেন, বিএনপি এখন তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে না দেখে, রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলার বদলে দমন করার নীতি নিয়েছে।
জেলা জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় এক নেতা বলেন, "আমরা দেখি বিএনপির কতিপয় নেতারা এখন এক ধরনের সুবিধাবাদী আচরণ করছে। তারা চায়, নারায়ণগঞ্জে জামায়াত যেন রাজনীতির মাঠে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। ইতোমধ্যে জামায়াত সবগুলো আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর তাদের কারও কারও মাথাব্যথার কারন হয়েছে জামায়াত। এই কারণে তারা আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচিকে ভিন্নভাবে বাধা দিচ্ছে।"
তিনি আরও বলেন, “এটা দুঃখজনক, যারা একসময় সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে আমাদের পাশে চেয়েছে, তারাই এখন আমাদের প্রতিদ্ব›দ্বী হিসেবে দমিয়ে রাখতে চায়।”
জামায়াতের মহানগর শাখার এক নেতা বলেন, জামায়াত সহ ইসলামী দলগুলো সর্বদাই সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে আসছে। দুইদফা হামলা চালানোর পরেও জামায়াত কোন প্রতিশোধমূলক আচরণ করেনি। বরং শুভবুদ্ধির উদয়ের আহবান জানিয়েছে। এমন অবস্থায় ইসলামী দলগুলোর সহনশীল আচরণকে দুর্বলতা ভাবলে তা ভুল হবে। জুলাই আন্দোলনে জামায়াত তাদের শক্তিমত্তা দেখিয়েছে। সুতরাং জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী বিরোধী শক্তি নিজেদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করবে না এমনটাই চাওয়া আমাদের।
সূত্র বলছে, আড়াইহাজারে জামায়াতের কর্মসূচিতে দুই দফা হামলা, বন্দরে ইসলামি আন্দোলনের সভাপতিকে কুপিয়ে জখম এবং নারায়ণগঞ্জ শহরে সাবেক জেলা শিবিরের সভাপতিকে মারধরের ঘটনা বিএনপির সাথে ইসলামী দলগুলোর দূরত্ব বাড়িয়েছে। জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের সাথে বিএনপির বহু নেতাকর্মীদের সুসম্পর্ক থাকলেও কতিপয় সুবিধাভোগী বিএনপি নেতারা আওয়ামী স্টাইলে ইসলামী দলের নেতাকর্মীদের প্রতিপক্ষ বানাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র বিষেদগারের পাশাপাশি ইসলামী দলগুলোর নেতাকর্মীদের মারধরকে বৈধতাও দিচ্ছেন তারা। যা রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত বলে মনে করছেন অনেকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে যে জোটভিত্তিক ক্ষমতার ভারসাম্য রয়েছে, তাতে ছোট দলগুলোকে বাদ দিয়ে কেউই ক্ষমতার একক আধিপত্য বজায় রাখতে পারবে না। তাই বিএনপির এই কতিপয় নেতাদের এই আচরন নিবৃত করতে না পারলে ভবিষ্যতে তা বিএনপির জন্যেই আত্মঘাতী হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :