নারায়ণগঞ্জ নগরীর প্রবেশ মুখ চাষাঢ়ায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাব। এই ক্লাবকে এক সময় নারায়ণগঞ্জ নিয়ন্ত্রণের অঘোষিত আতুরঘর ভাবা হতো। এখানে বসেই আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সাবেক এমপি শামীম ওসমান, সাবেক এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা, শামীম ওসমানের সাঙ্গপাঙ্গরা। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতার ১৬ বছর এই ক্লাবটির দিকে কেউ চোখ তুলে তাকাতেও সাহস করেনি। নারায়ণগঞ্জে নিয়ন্ত্রণের সেই আতুরঘর সরকার পতনের আগের দিন এবং সরকার পতনের দিন দুই দফায় বিক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পড়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। বর্তমানে সেই ক্লাবের ভবনটি পরিত্যক্ত এবং ক্লাবের প্রাঙ্গণ আবর্জনার স্তুপ ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে।
সরেজিমনে ওই ক্লাবের প্রাঙ্গণ ঘুরে এমন অবস্থাই লক্ষ্য করা গেছে। নগরীর ফুটপাত দখল করে বসানো দোকানপাটের প্রতিদিনের আবর্জনা এখন ওই ক্লাব প্রাঙ্গণেই ফেলা হচ্ছে। পাশাপাশি এই ক্লাব প্রাঙ্গণটিকে এখন সাধারণ পথচারীরা টয়লেট হিসেবেও ব্যবহার করছে। প্রতিদিন শত শত পথচারী এই ক্লাবের ভেতরে প্রবেশ করে প্রসাব ত্যাগ করছেন।
প্রসঙ্গত, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সময় ৪ আগস্ট ক্লাবের ভবনে শামীম ওসমানের পুত্র অয়ন ওসমান বিশাল ফ্যাস্টুন দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা প্রথমে অয়ন ওসমানের ফ্যাস্টুন ছিড়ে ফেলে। পরে একে একে ক্লাবের প্রধান ফটক ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট শেষে অগ্নিসংযোগ করে। এদিন তারা ক্লাবের বোল্ড ভাঙ্গার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরদিন ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে আবারো বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা রাইফেল ক্লাবে হানা দেয়। এদিন তারা বোল্ড ভেঙ্গে অস্ত্রাগারে থাকা অস্ত্র গুলি লুট করে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পুরো ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবটি। ধীরে ধীরে এক সময়কার ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু রাইফেল ক্লাব ময়লা আবর্জনার ডাস্টবিনে পরিণত হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :