আইভীকে গ্রেপ্তারে বাঁধা ও পুলিশের উপর হামলায় ঘটনায় নগরীর দেওভোগ থেকে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার ১৪ মে সন্ধ্যা ৭ টার সময় দেওভোগের সিটি পার্ক সংলগ্ন হৃদম কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থেকে রিয়াদ নামে ওই ছাত্রলীগকর্মীকে আটক করা হয়। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির আহম্মেদ।
পুলিশের সূত্রে জানা যায়, রিয়াদ দেওভোগের কাটা-কাপড় মার্কেট সংলগ্ন এলাকার মোহাম্মদ বাবুল মিয়ার ছেলে। আওয়ামী লীগ আমলে তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নিষিদ্ধ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাতের কর্মী ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসি নাসির আহম্মেদ বলেন, আমরা ১৪ তারিখে আইভীকে গ্রেপ্তারে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার যেই মামলা হয়েছিলো সেই মামলার একজন আসামি গ্রেপ্তার করেছি। আসামীর নাম রিয়াদ। তিনি ছাত্রলীগকর্মী ছিলেন। আমরা যেদিন আইভীকে আটক করতে তার বাসায় যাই সেদিন সেখানে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিলো সেদিন রিয়াদও ছিলো। এই মামলার বাকি আসামিদেরও ধরার চেষ্টা করছি।
জানা যায়, ৮ মে বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার পর নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার একদল পুলিশ আইভীকে গ্রেপ্তার করতে তার নিজ বাসা দেওভোগের চুনকা কুটিরে প্রবেশ করে। ভেতরে ঢুকেই পুলিশ প্রথমে আইভীকে তার নামে ওয়ারেন্টের কথা জানান। তবে আইভী তাদের বলেন তাকে গ্রেপ্তার করতে হলে দিনে করতে হবে, রাতে নয়। এদিকে এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সাথে সাথে এলাকাবাসী, দলীয় অনুসারী, আইভীর তরীকা-পন্থী পীর ভাই ও পীর বোনসহ আত্মীস্বজন, সিটি করপোরেশনের অনেক কর্মচারী ও ঠিকাদারও তার পৈতৃক বাড়ি চুনকা কুটিরের বিশালাকৃতির প্রধান ফটকের সামনের সড়কে এসে জড়ো হন। এবং সাবাই একসাথে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুরো আইভীর বাড়িতে পুলিশ প্রবেশের খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরের বিভিন্ন এলাকার উৎসুখ জনতাও এসে ভীড় করেন সেখানে। গভীর রাতে এলাকার বিভিন্ন মসজিদে মাইকিং করে সবাইকে সড়কে জড়ো হতেও বলা হয়, যেনো পুলিশ আইভীকে ধরে নিয়ে যেতে না পারে। একই সাথে বাড়িতে প্রবেশের প্রধান প্রধান সড়কে বালু, পাথরের বস্তা ও বাঁশ দিয়ে আটকে দেয়া হয়।
রাত ৩ টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ্য কর্মকর্তাগণ ও অতিরিক্ত ফোর্স ঘটনাস্থলে আসলে এলাকাবাসীর বাধার মুখে পড়েন। অন্যদিকে ডিআইটি এলাকায় বিএনপির অঙ্গসঙ্গঠনের নেতাকর্মীরাও অবস্থান নিলে উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পায়। কিন্তু পুলিশ উচ্চপদস্থ্য কর্মকর্তারা খুব কৌশলে মাঝরাতে আইভী বাড়ির ভেতরে ঢুকতে সক্ষম হয় এবং ভোরের আলো ফোঁটার সাথে সাথে উত্তেজনার মধ্যেই তাকে বাসা থেকে বের করে গাড়িতে করে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের দিকে রৌণা হন তারা। কিন্তু আইভীকে বহনকারী গাড়িটি কালীরবাজারের গ্রীনল্যাজ ব্যাংকের সামনে আসলে সেই গাড়িতে ইট-পাটকেল ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা।
এদিকে এরপর আইভীকে গ্রেপ্তারে বাঁধা ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় এখন পর্যন্ত ছাত্রলীগকর্মীসহ আরো তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :