নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিএনপি কার্যালয়ের ভাড়া চাওয়ায় দোকান মালিক ও মৎসজীবী দলের নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন হত্যার ঘটনায় ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার রাতে নিহত জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী সেলিনা বেগম বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামিরা করা হয়েছে, তোতা প্রধান ওরফে তোতা মেম্বার (৭০), বেনু প্রধান (৭৫), আলম প্রধান (৪৫), রাসেল প্রধান (৩৫), খোকন প্রধান (৪০), সাদ্দাম (৩৫), জাহাঙ্গীর প্রধান (৪০), হানিফা (৪৫) ও হাসেম (৪৫)। এদের মধ্যে তোতা, খোকন, রাসেল, আলম ও সাদ্দাম বিএনপির নেতাকর্মী। তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার নাছির উদ্দিন। তিনি বলেন, নামীয় আসামিদের সাথে আরও ৮/১০ কে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর হোসেন ও হত্যায় জড়িত উভয়েই বিএনপির সহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমনের অনুসারী। জাহাঙ্গীর হোসেন মাহমুদপুর ইউনিয়ন মৎসজীবী দলেরর সহ সাধারণ সম্পাদক। ৫ আগস্টের পর জাহাঙ্গীর তার নিজ মালিকাধীন জায়গার উপর নির্মিত তিনটি দোকান ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তোতা মেম্বারের কাছে ভাড়া দেন। এর মধ্যে দুটি দোকানের ভাড়া পরিশোধ করলে জাহাঙ্গীর হোসেনকে কোন ভাড়া দিতো না। এনিয়ে একাধিকবার ভাড়া চাইলেও তা পরিশোধ করছিলেন না তোতা মেম্বার। বুধবার সকালে জাহাঙ্গীর তার দোকানে এসে পার্টিশন দিয়ে আলাদা করার চেষ্টা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে বাকবিতন্ডা ও পরে মারধর করে জখম করা হয় তাকে।
নিহতের ছেলে তাঁত কারখানার শ্রমিক মো রাসেল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আমার বাবা চাচাদের তিনটি দোকান একত্র করে কার্যালয় বসায় মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তোতা মিয়া প্রধান। দুই চাচাদের ভাড়া দিলেও আমাদের কোনো ভাড়া দিচ্ছিলো না সে। এইটা একাধিকবার বললেও কোন কাজ হয়নি। বুধবার সকালে আব্বু আমাদের দোকানের অংশ আলাদা করে পার্টিশন দেয়। এসময় তারা বাধা দিতে আসলে আব্বু তাদের কাছে দোকান ভাড়া চায়। পরে তারা দোকানের সাটার নামায়া ভেতরেই মারধর করে।
তিনি আরও বলেন, আমার চাচা আমাকে ফোন করে জানায় আব্বুকে মারধর করা হচ্ছে। আমি দৌড়ে দোকানে গিয়ে শুনি তাকে হাসপাতালে পাঠায়া দিছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি সে আর বেঁচে নাই। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমার আব্বু নিজেও সুমন সাহেবের সাথে রাজনীতি করতো।
আপনার মতামত লিখুন :