News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

টানবাজারে এখনো বন্ড সুতার দাপট


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৫, ১০:০৫ পিএম টানবাজারে এখনো বন্ড সুতার দাপট

বন্ড সুতা খোলা বাজারে বিক্রি নিষিদ্ধ। তবে এই সুতা কোনোভাবে সংগ্রহ করে খোলা বাজারে বিক্রি করা গেলে মুনাফা কল্পনাতীত। নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার এক সময় বৈধ সুতা ব্যবসায়ীদের আতুরঘর হিসেবে পরিচিত ছিলো। কিন্ত এখন এখানকার ব্যবসায়ীরাই মেতে উঠেছেন অবৈধ বন্ড সুতার বেচাকেনায়। কি কারণে নিষিদ্ধ এই ব্যবসায় সবার আগ্রহ তার উত্তর ব্যবসায়ীরাই দিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, সার্বিক পরিস্থিতি এবং অতিরিক্ত মুনাফার লোভেই সবাই বন্ড সুতার ব্যবসায় নাম লেখাচ্ছেন। তবে সফল তারাই হচ্ছেন যাদের রাজনৈতিক ছত্র-ছায়া এবং প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে সম্পর্ক ভালো।

টানবাজারের রফিক ট্রেডার্সের মালিক মেহেদী হাসান বলেন, বৈধ সুতা ১১ টাকায় কিনে ১২ কি ১৩ টাকায় বিক্রি। আর বন্ড সুতা ৫ টাকা পাউন্ড কিনলে ১৩ টাকায় বিক্রি করা যায়। টানবাজারে এখন ঘরে ঘরে বন্ডের সুতা। অনেকে ব্যবসায় টিক্কা থাকার জন্য বন্ড সুতা বিক্রি করতাছে। কারণ ব্যবসার পরিস্থিতি খুব একটা ভালোনা। ব্যবসায়ীদের মধ্যে যাদের লোভ বেশি আর যারা দ্রুত বড়লোক হতে চায় তারাই এখানে বন্ড ব্যবসা করে। বন্ড সুতা বিক্রি না করলে যে ব্যবসায় টিকে থাকা যাইব না, তাও কিন্তু না। বৈধ ভাবে ব্যবসা করলেই চলে কিন্তু সবাই অবৈধ পথেই মজা পায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, রাত্রে এক ট্রাক মাল সাইনবোর্ড মনে করেন ধরা খাইসে। কে ধরসে? পুলিশ। ওই সাথে সাথে টাকা যত লাগে দিয়া মাল ছাড়ায় নিয়া আসবো। এমন অনেক বাধা বিপত্তি পার কাইরা এই ব্যবসা করতে হচ্ছে। তবও অনেকেই করছে। বড় পার্টি ১০ ট্রাক মাল আইন্না ছোট ছোট দোকানগুলোতে দিয়া বিক্রি করাইতাছে। কোনো সমস্যা হইলে স্থানীয় নেতারা কমিশনের বিনিময়ে সমাধান করতাছে। তবে এটা খুব গোপনে হচ্ছে। সরকারি বাহীনি যদি হার্ডলাইনে যায় তাহলে সব থলের বিড়াল বের হয়ে আসবে। এটা হওয়া দরকার কারণ এটা যে শুধু আওয়ামীলীগ আমলে হইসে তা না, এখনো হইতাছে।

জানা গেছে, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে টানবাজারে বিশাল বন্ড সুতার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতেন ইয়ার্ণ মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা। মূলত লিটন সাহার মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীরাই বন্ড সুতা এনে খোলা বাজারে উচ্চমূল্যে বিক্রি করতেন। ওই সিন্ডিকেটের সদস্যদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সুব্রত সাহা, ও সানি  সাহা। তাদের প্রশাসনিক ভাবে সহযোগীতা করতেন নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সাবেক সাংসদ নাসিম ওসমানের মেয়ের জামাতা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেমরা জোনের সাবেক এডিসি ইফতেখায়রুল ইসলাম। যিনি সম্প্রতি চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছে।

তথ্য বলছে, সুব্রত ও সানি সাহারা এখন প্রকাশ্যে নেই। তবে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকই চলছে। তাদের পাশাপাশি ছোট বড় আরো অনেক ব্যবসায়ী বৈধ সুতার বিক্রির আড়ালে পরিচালনা করছেন বন্ড সুতার ব্যবসা। যার কারণে স্থানীয় পোশাক শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার। 

Islam's Group