নারায়ণগঞ্জের-৫ টি আসনে বিএনপি ও এনসিপি বাদে বাকি প্রায় সবগুলো দল তাদের প্রার্থী চুড়ান্ত করেছে। এনসিপি একটি আসনে প্রার্থী চুড়ান্ত করলেও বাকি চারটি আসনে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে একটি আসনেও প্রার্থী চ‚ড়ান্ত না করা বিএনপি মূলত নিজেদের একাধিক প্রার্থী নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছে। সবশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছিলো, তারাই ফের পাবেন নাকি নতুনদের হাতে উঠবে মনোনয়ন তা নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা।
দলীয় ভাবে এখন পর্যন্ত মনোনয়ন না দিলেও বিভিন্ন প্রার্থীদের নেতাকর্মী বা অনুসারীরা ইদানিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজ পছন্দের প্রার্থীর মনোনয়ন নিশ্চিত এমন বার্তা প্রকাশ করছেন। সেই সাথে অনুসারীদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন, নেতাই হচ্ছেন দলীয় ক্যান্ডিডেট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অমুক নেতাই হচ্ছেন ধানের শীষের প্রার্থী এমন বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন কর্মীরা। যা দেখে খানিকটা বিভ্রমের শিকার সাধারণ মানুষ। কারন একই আসনে একাধিক প্রার্থীর সমর্থকরা নিজ নিজ পছন্দের নেতার মনোনয়নের বিষয়ে নিশ্চয়তা দিচ্ছেন।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ তথা নারায়ণগঞ্জ ১ আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী থাকলেও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু এবং আরেক নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান আছেন মূল আলোচনায়। এই দুই প্রার্থীর অনুসারী বিএনপির নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের নেতারা আসন্ন নির্বাচনে মনোনয়ন পাচ্ছেন এমন বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। একই আসনে দুই প্রার্থী কিভাবে নিশ্চিত মনোনয়ন লাভের বার্তা পান তা নিশ্চিত নন কেউ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার তথা নারায়ণগঞ্জ ২ আসনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের অনুসারীদের দেখা গেছে তার মনোনয়নের ব্যাপারে নিশ্চয়তা প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উচ্ছাস প্রকাশ করতে। ছাত্রদল যুবদলের একাধিক নেতা ইংগিতে বা সরাসরি এসব বার্তা দিচ্ছেন ফেইসবুকে। যা দেখে কর্মী সমর্থকরা বেশ উচ্ছাসিত। তবে এই আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মাহমুদুর রহমান সুমন, সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর, মহিলা দল নেত্রী পারভীর আক্তার প্রার্থী হলেও তাদের কর্মীদের এমন অগ্রিম মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ তথা নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান আসন্ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন এমন নিশ্চয়তা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বার্তা দিচ্ছেন তার অনুসারীরা। কেউ কেউ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন যে তিনি ছাড়া ভিন্ন কেউ পাচ্ছে না নির্বাচনের টিকেট। অথচ একই আসনে লড়তে আগ্রহী সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল ও সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন তথা ফতুল্লা সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলে বিএনপির মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন শাহ আলম এমন বার্তায় সয়লাব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। একই সাথে একই বার্তা দিয়ে সরগরম আছেন মামুন মাহমুদের অনুসারীরা। কয়েকমাস পূর্বে একই ভাবে সরগরম ছিলেন গিয়াস উদ্দিনের অনুসারীরা। যদিও গিয়াস উদ্দিনের অনুসারীরা আগের তুলনায় অনেকটাই নীরব। কিন্তু মনোনয়ন পাচ্ছেন শতভাগ এমন বার্তা দিয়ে যাচ্ছেন শাহ আলম ও মামুন মাহমুদের অনুসারীরা।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন তথা সদর বন্দরে বিএনপির গ্রীন সিগন্যাল নিয়ে নেমেছেন ব্যবসায়ী মাসুদুজ্জামান মাসুদ এমন বার্তা দিচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে প্রার্থীতার শেষ হাসি হাসবেন আবুল কালাম এমন নিশ্চয়তাও দিচ্ছেন তার অনুসারীরা।
তৃনমূলের কর্মীরা বলছেন, নেতাদের অনুসারীদের এমন অবস্থান স্বাভাবিক ভাবেই নেতার প্রতি আনুগত্য এবং তার প্রতি বাকিদের আকর্ষণ বৃদ্ধির চেষ্টা। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই প্রার্থিতা ঘোষণা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে। সেই সাথে কোন কারনে তাদের মনোনয়ন না দেয়া হলে দিনশেষে তা প্রার্থীর সুনাম হানি করবে। ফলে অতি উৎসাহী আচরণ পরিত্যাগ করে দলের জন্য কাজ করাই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে নেতাকর্মীদের জন্য।
আপনার মতামত লিখুন :