News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই, ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

হামলার শিকার হচ্ছে জামায়াত-ইসলামী আন্দোলন


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ০৩:৪৮ পিএম হামলার শিকার হচ্ছে জামায়াত-ইসলামী আন্দোলন

নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে বিএনপির পরে শক্তিশালী দল হিসেবে সুসংগঠিত হয়ে উঠেছে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন। ধর্মভিত্তিক দল দুটির রয়েছে বেশ বড় কর্মীবাহিনী। প্রতিটি উপজেলার পাশাপাশি ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়েও তাদের কমিটি রয়েছে। আগামী নির্বাচনে জোটগত ভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে এমন গুঞ্জন চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। আর তাতেই যেন বিএনপির কোন কোন নেতাকর্মীদের প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন তারা। সুযোগ পেলেই মারধর করে নিজেদের ক্ষমতা জানান দিচ্ছেন। 

সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ইসলামী আন্দোলনের বন্দর থানা উত্তরের সভাপতি ডা. আবদুল্লাহ আল মামুনের উপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। মাদক বেচাকেনায় নিষেধ করায় এই হামলা চালায় সেখানকার সক্রিয় মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যরা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বিবাদী করা হয় ১৩ জনকে। এদের মধ্যে ৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। তারা হলেন, সুজন (২৮), নাজির (২১), ইমন (৩০), বিকি (২২) এবং মেঘলা (৩৫)। এদের মধ্যে বিকি স্থানীয় ভাবে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। 

মহানগর ইসলামী আন্দোলনের নেতা মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘যারা হামলা চালিয়েছে তাদের দলীয় পদ পদবীর বিষয়ে জানা না থাকলেও হামলার শিকার আমাদের নেতা জানিয়েছেন, এই হামলাকারীরা বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে দেখিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে। বিশেষ করে বিকি বিএনপির রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। এই প্রভাবের বলেই তারা আমাদের নেতাকে রক্তাক্ত জখম করার দুঃসাহস দেখিয়েছে। 

এই ঘটনায় ইসলামী আন্দোলন যেমন নিন্দা জানিয়েছে, তেমনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। গত বৃহস্পতিবার দলটির জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন ও মহানগর সমন্বয়ক নাইমুর রশীদ বিপ্লব এই বিবৃতিতে এই হামলার নিন্দা জানান। একই সাথে এই হামলার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।

এর আগেও আড়াইহাজারে জামায়াতে ইসলামীর উপর দুই দফায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। আহত করা হয়েছে জামায়াত কর্মীদের। অভিযোগের তীর বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম আজাদের অনুসারী বিএনপি নেতাকর্মীদের দিকে। গত ১৪ জুন আড়াইহাজারের গহরদী এলাকায় জামায়াতের গণসংযোগে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠে মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অন্তত ৫ জন আহত হয়।

স্থানীয় জামায়াত নেতারা জানান, দুপুরে গহরদী এলাকায় দলীয় প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ চলছিল। হঠাৎ করেই স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা কর্মসূচিতে বাধা দেন। প্রথমে তর্কবিতর্কের পর জামায়াত কর্মীদের ওপর হামলা চালান বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির মোতাহার হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় বিএনপি নেতা শাহজাহান শিকারি ও ইউসুফ শিকারির নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়। এদের মধ্যে শাহজাহান শিকারি মাহমুদপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি বলে জানতে পেরেছি। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত পাঁচজন আহত হয়। দুজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হয়েছে।’ 

২৫ জানুয়ারি আড়াইহাজারের সাতগ্রাম ইউনিয়নে জামায়াতের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, জামায়াত নেতারা একটি চায়ের দোকানে বসায় সেই দোকানও বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। সাতগ্রাম ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মোবারাক হোসাঈন সোহান জানান, ২৫ জানুয়ারি টেকপাড়া গ্রামে একটি সভা শেষে নেতাকর্মীরা বাড়ি ফেরার পথে আওয়ামী লীগ থেকে সদ্য যোগদানকৃত বিএনপি নেতা মালেক মাস্টার ও তার সমর্থকরা বাধা দেয় এবং কয়েকজন কর্মীকে মারধর করে। এ সময় ৪ আহত হন। পরে জামায়াত নেতারা একটি চায়ের দোকানে বসলে বিএনপির কর্মীরা সেই দোকানও বন্ধ করে দেয়।

দলগুলোর নেতারা বলছেন, ইসলামী দলগুলোর উপর এমন আক্রমন ও নেতাকর্মীদের আহত হবার ঘটনা স্পষ্টভাবেই পরিস্কার করে যে তাদের প্রতিপক্ষ ভাবতে শুরু করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এমনকি তাদের সাংগঠনিক কাজের বিস্তারে নিজেদের সক্ষমতা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে শুরু করেছেন। তাই প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে এই ধরনের হামলা ও বাঁধার ঘটনা ঘটছে। তবে আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছরে যেমন দমিয়ে রাখতে পারেনি, তেমনি কোন শক্তির কাছেই ইসলামী দলগুলো নত হবে না।

Islam's Group