News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই, ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

সেন্ট্রাল ঘাটে টোল আদায় : দুই নেতার রেষারেষি বন্দরবাসীর গলায় চাপ


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২৫, ১০:২০ পিএম সেন্ট্রাল ঘাটে টোল আদায় : দুই নেতার রেষারেষি বন্দরবাসীর গলায় চাপ

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ১৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি দিদার খন্দকার ও মহানগর যুবদলের ১নং সদস্য রাফিউদ্দিন রিয়াদের প্রতিযোগিতায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এবার বন্দরের লাখ লাখ মানুষ। ১ জুলাই থেকে ট্রলারের ২টাকা টোলের সাথে এবার নৌকা যাত্রীদের ২টাকায় টোলের আওতায় বাসা হয়েছে। যার কারণে সকাল থেকে ঘাটে প্রতিনিয়ত তর্কে জড়িয়ে পড়েছে টোল আদায়কারী ও যাত্রীরা। এনিয়ে যে কোন সময়ে বড় ধরনের ঘটনা হওয়ার আশংকা করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘাটের ছাউনি থেকে হকার উঠে পুরোটা টোল প্লাজা করা হয়েছে। যাত্রীরা নৌকা বা ট্রলারে যেতে হলে ২টাকা টোল দিতে হচ্ছে। এতে নৌকায় জনপ্রতি ৫/১০ টাকা ও বিনা খরচে ট্রলারে মাধ্যমে নদী পারাপার করতে হচ্ছে। এদিকে যারা প্রতিনিয়ত নৌকায় ভাড়া ভাড়া দেয়া পরও যাত্রীরা ২টাকা টোল না দেয়ার প্রতিবাদ করছে সকাল থেকে। এতে যাত্রীদের রোষানলে পড়ছেন টোল আদায়কারীরা।

ক্ষোভ প্রকাশ করে হোসিয়ারি শ্রমিক জাহানারা খানম বলেন, নৌকা ৫টাকা ভাড়া দিয়েও আবার টোলে ২টাকা দিতে হয়েছে। এতে মাসে আমাদের আরো ৫০০টাকা খরচে সংখ্যা বাড়লো। ট্রলারে চলাচলে ভয় করার কারণে নৌকা দিয়ে ৩৫ বছর যাবৎ পারাপার করি।

একই সুরে মিস্ত্রি হাসেম মিয়া জানান, ট্রলারে ২টাকা টোল নেয়া ঠিক আছে। এখন আবার নৌকা যাত্রীদের কাছ থেকে টোল আদায় করা নেয়া ঠিক হচ্ছে না। ঘাটে ব্যানারে জাকির খানে নির্দেশে পারাপারে মালামালের জমা নেওয়া হবে না জানালেও নৌকা টোল নেয়া কতুটুকু মিলে।

জানা গেছে, বিগত আওয়ামীলীগ সরকার আমলে সেলিম ওসমান এমপি সুবাদে বন্দর মানুষের জন্য ১ কোটি টাকা কম ইজারায় ঘাট পরিচালনা করাতেন। এক সময়ে বিএনপি নেতা দিদার খন্দকার দায়িত্ব নিয়ে বিগত সময়ে ঘাট নিয়ন্ত্রণ করা হয়। গত বছর ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের মাধ্যমে থাকা সেন্ট্রাল খেয়াঘাটটি জাকির খানের নামে দিদার খন্দকার নিয়ন্ত্রণ নেয়। ওই সময়ে ইজারাদার ছিলেন যুবলীগ নেতা রিয়েল। এক পর্যায়ে রিয়েল ও দিদারদের মতানৈক্য কারণে পুনরায় টেন্ডারের মাধ্যমে যুবদল নেতা রাফিউদ্দিন রিয়াদ ইজারা পান। এতে জাকির খান জেলে থাকা অবস্থায় রিয়াদ ও দিদারদের সমঝোতা পরিচালনা দায়িত্ব নেন তারা।

গত ৩০ এপ্রিল টেন্ডার অনুষ্ঠিত হয় সেখানে ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরে সেন্ট্রাল ফেরিঘাট ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত মূল্যে একটি দরপত্রে ২ কোটি ৬ লাখ ১ হাজার টাকায় ইজারা পান নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ১৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি দিদার খন্দকার। মাত্র ১ লাখ ১ হাজার টাকায় ছিটকে পড়েন মহানগর যুবদলের আহবায়ক কমিটি ১নং সদস্য রাফিউদ্দিন রিয়াদ। তাদের কোটি টাকার প্রতিযোগিতা বন্দরবাসী পারাপার চরম দুর্ভোগের বার্তা বয়ে আনে। তারই প্রতিফলনে ১ জুলাই প্রথম প্রহর থেকে শুরু হয়েছে বলে মন্তব্যে যাত্রীদের।

ফেসবুকে এক যাত্রী লিখেছেন, এই হলো আজকে সকালে বন্দর ঘাটের অবস্থা! ট্রলার দিয়ে মানুষ পার হওয়ার মতো অবস্থা নেই, টাকা তুলার লোকদের গলার জোর এতোই বেড়েছে মানুষের গায়ে হাত দিয়ে টাকা তুলছে, স্টুডেন্টদের ফ্রি পারাপার বন্ধ তার মধ্যে স্টুডেন্টরা গেলেই কটূক্তি করছে। হঠাৎ করে কিসের এতো ক্ষমতা আসলো তাদের?? এভাবে নৌকা দিয়ে পার হলেও নৌকা ভাড়া ৫-১০টাকা দেওয়ার পরেও ঘাটে আরও অতিরিক্ত ২ টাকা ঘাট ভাড়া নিচ্ছে। বন্দরবাসী কি কারো কাছে জিম্মি হয়ে গেছে?? কেন অতিরিক্ত টাকা দিবো?? এইসব ইজারাদাররা যা বলবে তাই হবে নাকি? প্রত্যেক জন থেকে ২ টাকা করে যে নিচ্ছে বন্দরবাসির কি উপকারে আসছে তারা?? যথাযথ ব্যবস্থা যদি না নেওয়া হয় এরা আরও জুলুম করবে।

বিগত এক যুগ পর ঘাট টেন্ডারে জাতীয় পার্টি এমপি ও আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের অনুপস্থিতিতে বিশাল অঙ্কের ইজারা সম্পূর্ণ হয়। বিগত সরকার আমলে জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি সেলিম ওসমান দুইটি ফেরিঘাটে ইজারা নেয়া হত স্বল্প মূল্যে। দুইটি ইজারা কখনো সর্ব্বোচ্চ মূল্যে যায়নি বলে জানা যায়। প্রতিনিয়ত জনগণের সুবিধার্থে কম প্রাক্কলিত মূল্য ধার্য করে তিনি তার আস্থাভাজনকে দিয়ে পরিচালনা করতেন। এবারই বিএনপি ও যুবদলের নেতারা সব্বোর্চ রেট দিয়ে আলোচনা সৃষ্টি করেছেন।

Islam's Group