News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

মুকিতের ভয়ঙ্কর তৎপরতা!


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ০৯:৫১ পিএম মুকিতের ভয়ঙ্কর তৎপরতা!

আজমেরী ওসমানের অন্যতম সহযোগী ছিলেন মুকিত। শহরের ব্যবসায়ীদের জিম্মী করে চাঁদাবাজি, বিরোধ-পূর্ণ জমি দখল, কমিশনের বিনিময়ে ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা আদায় করা ও ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় ছিলো মুকিতের প্রধান কাজ। এছাড়া শহরে ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাও করতেন তিনি। আজমেরী ওসমানের আরো একাধিক সহযোগী ছিলেন শহর ও শহরের বাহিরে। তবে তাদের চেয়েও দুর্ধর্ষ ও চালাক ছিলেন মুকিত। গত বছর ৫ আগষ্টের পর আওয়ামীলীগ সরকার পতন হলে আজমেরী ওসমান পরিবারসহ পালিয়ে গেলে তার অন্যান্য সহযোগীদের মতো মুকিতও পালিয়ে যায়। তবে এরপর এখনো পুলিশ মুকিতকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ফলে দূর থেকে বসে আজমেরী ওসমানের হয়ে এখনো মুকিতের মাধ্যমে নানান নীল নকশা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

জানা গেছে, গত মাসে নগরীর জিমখানা রেলওয়ে কলোনীর বেশ কয়েকজন অল্প বয়সী যুবকের নেতৃত্বে আজরেমী ওসমানের পক্ষ্যে মিছিল হয় কাশীপুর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায়। পরবর্তীতে এই ঘটনায় ফতুল্লা থানা পুলিশ জিমখানার বেশ কয়েকজনকে আটক করে। নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, মুকিতের নির্দেশেই ওই যুবকরা আজমেরী ওসমানের ব্যানারে মিছিলে অংশ নেন। এদিকে আটকের পর তাদের জামিন করতে আর্থিক সহায়তা দেন বলেও একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এদিকে জানা গেছে, আওয়ামীলীগ আমলে আজমেরী ওসমানের অধিকাংশ অপরাধের নেপথ্যের কারিগর ছিলো তার অনুসারীরা। লাখ লাখ টাকা চুক্তিতে যে কোনো সমস্যা সমাধান করে দেয়া, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায়, পরিবহন সেক্টর থেকে চাঁদা নেওয়া, মাদক ব্যবসাসহ নানান কাজে আজমেরীর প্রায় ১০ জনেরও বেশি অনুসারী জড়িত ছিলো। যাদের স্থানীয় লোকজন খলিফা নামে ডাকতেন। মোশাইদ রহমান মুকিত তাদেরই একজন।

আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে এই মুকিত নারায়ণগঞ্জ শহরের ১ নং খেয়াঘাট, দুইনং রেলগেট, নিতাইগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় একাধিক কিশোর গ্যাং পরিচালনা করতেন। এই গ্যাং সদস্যরা দিনে মাদক ব্যবসা এবং রাতে চুরি ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত ছিলেন। শহর বন্দরের অসংখ্য ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নির্যাতন করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে মুকিতের বিরুদ্ধে। আজমেরী ওসমান শহরে যেই হোন্ডা বাহীনি নিয়ে ভীতি ছড়াতো সেই বাহীনিরও সক্রিয় সদস্য ছিলো মুকিত। অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই নারায়ণগঞ্জ শহরে শামীম ওসমান যেই অস্ত্রের মহড়া দেন সেখানে উপস্থিত ছিলো তার ভাতিজা আজমেরী ওসমান। আজমেরী ওসমানের সাথে মুকিতকে দেশীয় অস্ত্রসহ দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আন্দোলন চলাকালে বন্দরের রেললাইন এলাকায় গুলি করে ছাত্র জনতাকে ধাওয়া করেছিলো মুকিত। তবে মুকিতের বিরুদ্ধে অসংখ্য গুরুত্বর অভিযোগ থাকলেও বর্তমানে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। এখন প্রায়ই তাকে ফেইসবুকে লাইভে আসতে দেখা যাচ্ছে। লাইভে এসে আবারো আগের রূপে ফিরে আসার কথাও বলতে শোনা গেছে তাকে।

বন্দরের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া আরিফ হোসেন নামে এক কলেজ ছাত্র বলেন, মুকিত আমাদের রেললাইন এলাকায় প্রকাশে গুলি করেছে। ওর লোকজনের হাতে অস্ত্র ছিলো, সেগুলো নিয়ে ওরা আমাদের বারবার ধাওয়া দিয়েছে। এমন একজন সন্ত্রাসী কিভাবে এখনো প্রকাশ্যে চলে তা আমাদের জানা নেই আমরা চাই ওকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক।

এদিকে মুকিতকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জ শহরের নয়ামাটি ও রিভারভিউ শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, বিগত সরকারের আমলে এই বাণিজ্যিক এলাকাগুলোর ব্যবসায়ীদের নানা ভাবে হয়রানি করে ও আজমেরী ওসমানের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করতো মুকিত।

Islam's Group