News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

আদালতপাড়ার রাজনীতিতে গিয়াস-সাখাওয়াত মুখোমুখি


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ০৯:৫৮ পিএম আদালতপাড়ার রাজনীতিতে গিয়াস-সাখাওয়াত মুখোমুখি

আগামী ৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। একই মাসের শেষের দিকে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন ও মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান মুখোমুখি অবস্থান করছেন। যার ফলে এবারের নির্বাচনে সমিতির বর্তমান সভাপতি সরকার হুমায়ুন কবির ও সাধারণ সম্পাদক এইচএম আনোয়ার প্রধানের বিনা ভোটে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। ভোটের লড়াইয়ে হুমায়ুন ও আনোয়ার প্রধানের জয়ের সম্ভাবনা একেবারেই কম।

আইনজীবীরা জানান, আদালতপাড়ায় বিএনপির আইনজীবীদের একটি অংশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন এবং অপর অংশের পক্ষে আছেন সাখাওয়াত হোসেন খান। রেজাউল করিম খান রেজাকে সভাপতি ও এসএম গালিবকে সাধারণ সম্পাদক পদে রেখে আইনজীবী সমিতির এবারের নির্বাচনে প্যানেল নির্ধারণ করেছেন গিয়াসউদ্দীন।

ওদিকে গত নির্বাচনে বিনা ভোটে বিজয়ী সরকার হুমায়ুন কবিরকে সভাপতি ও আনোয়ার প্রধানকে আবারো সাধারণ সম্পাদক পদে রেখে প্যানেল গঠনের প্রস্তুত নিয়েছেন সাখাওয়াত ও তার অনুগামীরা।

একইভাবে নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেল ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত ইসলামীর আইনজীবী নেতারা। হাফিজ মোল্লাকে সভাপতি ও মাঈনুদ্দীন আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক পদে রেখে পূর্ণ প্যানেল গঠনের আভাস দিয়েছে জামায়াত ইসলামীর আইনজীবীরা। শেষতক জামায়াত ইসলামীর আইনজীবীরা বিএনপির একটি অংশের সঙ্গে সমঝোতায় গেলেও বিএনপিতে দুটি প্যানেল হতে যাচ্ছে সেটা প্রায় নিশ্চিত।

অন্যদিকে গত ১৫ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতিতে পৃথকভাবে গিয়াসউদ্দীন বলয়ের আইনজীবীরা এবং সাখাওয়াত বলয়ের আইনজীবীরা একই সময়ে দুটি কর্মস‚চি পালন করেছেন যেখানে একাংশের অনুষ্ঠানে গিয়াস প্রধান অতিথি, অপর অংশের অনুষ্ঠানে সাখাওয়াত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে গিয়াস যোগদানের কারনে তার সঙ্গে সাখাওয়াত হোসেন খানের মৃদু বাদানুবাদের ঘটনা ঘটেছে। ১৫ জুলাই আইনজীবী সমিতির নিচ তলায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গিয়াস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেজাউল করিম খান রেজা ও পরিচালনায় ছিলেন এসএম গালিব। সেদিন একই সময়ে সাখাওয়াত পন্থীরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। একই সময়ে দুটি কর্মস‚চি চলতে থাকে।

প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে সমিতির নিচ তলার টেবিলে বসে থাকা গিয়াসের সামনে গিয়ে গিয়াসউদ্দীনকে উদ্দেশ্য করে সাখাওয়াত বলতে থাকেন, ‘আপনি এভাবে আইনজীবী সমিতিতে কোনো অনুষ্ঠানে আসলে বিএনপির আইনজীবীদের মাঝে বিভক্তির সৃষ্টি হয়। এতে বিএনপির আইনজীবীরা ডিভাইডেট হয়ে যায়। আপনি আইনজীবী সমিতির কোনো অনুষ্ঠানে আসলে আমাদের জানানো উচিত।’

গিয়াসউদ্দীন বলেন, আপনারা তো আমাকে কখণও ডাকেন না, তারা আমাকে ডেকেছেন, আমি এসেছি। আপনারা ডাকলেও আমি আসবো।’

সমিতির সভাপতি সরকার হুমায়ুন বলেন, আপনি এভাবে আসলে আমরা আপনাকে যথাযথ সম্মান করতে পারি না। কারণ আজকে যেমন আমাদের আলাদা কর্মসূচি আছে।’ এসব কথা বলেই সাখাওয়াত সহ অন্যান্যরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে গিয়াসউদ্দীন অনুষ্ঠানের আয়োজকদের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

আইনজীবীরা আরো জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর আওয়ামীলীগের শীর্ষ আইনজীবী নেতারা আড়ালে চলে যান। এমন পরিস্থিতিতে আইনজীবী সমিতির গত নির্বাচনে রেজাউল করিম খান রেজা সভাপতি পদে এবং এসএম গালিব সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চেয়েছিলেন। তাদের মাঝে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন ফরম, এমনকি সমিতির নির্বাচন কমিশন থেকেও মনোনয়ন ফরম পাননি। উল্টো সাখাওয়াত পন্থী আইনজীবীদের দ্বারা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন রেজা খান, গালিব সহ তাদের সাথে থাকা আইনজীবীরা। ওই নির্বাচনে এসএম গালিব মিডিয়াতে বলেছিলেন, সাখাওয়াত হোসেন খান শামীম ওসমানের মত গডফাদারের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। শেষতক রেজা খান ও এসএম গালিব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। পরবর্তীতে সাখাওয়াত পন্থী সরকার হুমায়ুন কবির ও আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে পুরো প্যানেল বিনা ভোটে নির্বাচিত হোন।

Islam's Group