News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ফতুল্লাতেই লড়বেন গিয়াসউদ্দিন


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম ফতুল্লাতেই লড়বেন গিয়াসউদ্দিন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি যতই জমে উঠছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে এখনো সবচেয়ে দৃশ্যমান ও মাঠের সক্রিয় নেতা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। কেন্দ্রীয় বিএনপি এই আসনের প্রার্থী ঘোষণা না করলেও, দিনের পর দিন ফতুল্লা-বক্তাবলীর অলিগলি চষে বেড়াচ্ছেন জেলা বিএনপির এই সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য। তার গণসংযোগ, প্রচার-সংলাপ আর অনুসারীদের কর্মসূচি দেখে মনে হচ্ছে, মনোনয়ন না পাওয়া পর্যন্ত তিনি রাজপথ ছাড়তে প্রস্তুত নন।

নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে সোনারগাঁ উপজেলার নেতা আজহারুল ইসলাম মান্নানকে মনোনয়ন দেওয়ার পর বহু রাজনৈতিক বিশ্লেষকই ভেবেছিলেন গিয়াস উদ্দিন হয়তো এবার মন্থর হবেন। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে উল্টো। দুই আসনের সীমানা পরিবর্তন, মনোনয়ন নিয়ে জটিলতা এবং কেন্দ্রীয় ঘোষণার গতি কমে যাওয়া সব মিলিয়ে তিনি আরও দৃঢ়ভাবে ফিরে গেছেন নিজের রাজনৈতিক ঘর নারায়ণগঞ্জ-৪ এ। নতুন করে শুরু করেছেন এলাকায় এলাকায় উপস্থিতি, ঘরোয়া বৈঠক, ইউনিয়ন ওয়ার্ড পর্যায়ের কর্মীদের সক্রিয়তা বাড়ানো।

ফতুল্লা ও বক্তাবলীর মাঠে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তার অনুসারীরা যে ধারাবাহিক মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও গণমিছিল করে আসছেন, তা স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন কর্মসূচিতে বারবার উচ্চারিত হচ্ছে “গিয়াস ভাইকে প্রার্থী চাই”, “ধানের শীষ চাই গিয়াসের হাতে” এমন স্লোগান।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বিএনপির অনেক কর্মী অভিযোগ করেন, যারা রাজনৈতিক উত্তাপ দেখলেই এলাকা ছাড়তেন, যারা বিদেশে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতেন, বা যাদের হঠাৎ দেখা যায় শুধু মনোনয়ন ঘোষণার সময় তারা এখন নেতৃত্ব দাবি করছেন। এক বক্তা বলেন, “ফতুল্লার প্রতিটি ঘরে গিয়াস ভাইয়ের জন্য দোয়া হয়। আন্দোলনের কঠিন দিনে যাদের খুঁজে পাওয়া যেত না, গিয়াস ভাই তখনও রাজপথে ছিলেন।”

অন্যজন বলেন, “আমরা কারাগারে থেকেছি, নির্যাতিত হয়েছি কিন্তু পাশে পেয়েছি একজনই মানুষকে, তিনি গিয়াস উদ্দিন। যারা তখন বলেছিলেন আন্দোলন করে শেখ হাসিনাকে নামানো যাবে না, তারা এখন নমিনেশন চায় এটা কর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা।”

স্থানীয় নেতাকর্মীদের বহু দাবি-আবেদন সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় বিএনপি এখনো নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি। আর এই ‘অপেক্ষার সময়টাকেই’ সুযোগ হিসেবে দেখছেন গিয়াস উদ্দিন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে তার দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক প্রভাব, রাজনীতিতে ভূমিকা, এবং ফতুল্লা সিদ্ধিরগঞ্জের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক তাকে এখনও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী পর্যায়ে রেখেছে।

বিশেষ করে বিএনপির জন্য এ আসনটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এখানে বিরোধমুখী জনভিত্তি ঐতিহাসিকভাবে শক্তিশালী। ফলে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগেই মাঠের চিত্র স্পষ্ট হয়েছে গিয়াসউদ্দিনকে ঘিরে কর্মীদের আবেগ, উপস্থিতি ও প্রত্যাশা অন্য সবার চেয়ে অনেক বেশি।

গিয়াস উদ্দিনের ঘনিষ্টরা জানাচ্ছেন, তিনি ধৈর্য্য ধরে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন। তবে মাঠের প্রতিটি কর্মসূচি দেখলেই বোঝা যায় তিনি এখনই থামছেন না। রাজনীতির মাঠে তার সক্রিয়তা এবং অনুসারীদের চাপ তাকে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এনেছে।

চূড়ান্ত মনোনয়ন যিনিুই পান না কেন, একটি বাস্তবতা এখন পরিষ্কার ফতুল্লা ও বক্তাবলীর রাজনীতিতে মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এখনো সবচেয়ে দৃশ্যমান মুখ। আর স্থানীয় কর্মীদের দাবি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির ধানের শীষ হাতে তোলার মতো নেতা একজনই আর তিনি হচ্ছেন মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। তবে সময়ই বলে দিবে শেষ পর্যন্ত গিয়াস উদ্দিন বিজয়ী হবেন নাকি রাজনীতির ময়দানে পরাজয় শিকার করবেন। 

Islam's Group