শুক্রবার বিকেল থেকে শনিবার দিনভর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলো ইনকিলাব মঞ্চের আহবায়ক ওসমান হাদীর উপর হামলার ঘটনা। প্রকাশ্যে গুলি করার ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জে জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তার বিষয়টি। তবে বিএনপি, জামায়াত সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে বিভাজন তৈরী হয়েছে। তাতে ফ্যাসিবাদী শক্তির ফিরে আসা অসম্ভব কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।
ওসমান হাদীর উপর গুলিবর্ষণের পরেই পলাতক নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগ নেতারা উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে। এমনকি, গুলি ঠিকমত করতে পারেনি কেন এনিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে ছাত্রলীগ নেতাদের। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময় নারায়ণগঞ্জে জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া নেতাদের ফোনে নানান হুমকি দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের আগে নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন প্রার্থীদের উপরে হামলা হতে পারে এমন শংকাও প্রকাশ করছেন কেউ কেউ।
বিএনপির অভ্যন্তরীন বিভাজন দেখা দিয়েছে প্রকট ভাবে। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে প্রার্থীতা নিয়ে কয়েকভাগে বিভক্ত হয়ে পরেছে দলের রাজনীতি। একদিকে নজরুল ইসলাম আজাদ। অন্যদিকে সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর, মাহমুদুর রহমান সুমন এবং নারী নেত্রী পারভীন আক্তার। নিজেদের বিভাজনের কারণে আনাগোনা বেড়েছে নজরুল ইসলাম বাবুর অনুসারীদের। গত ১৩ নভেম্বর আড়াইহাজার বাজারে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বাবুর অনুসারীরা। যা ইঙ্গিত দেয় এই সন্ত্রাসীদের আনাগোনার উপস্থিতি।
সোনারগাঁয়ে বিএনপির নিয়ন্ত্রণ ভেঙ্গে পড়েছে অনেক আগেই। আজহারুল ইসলাম মান্নানকে মনোনয়ন দেয়ার পর আরও সাতজন বিপক্ষে দাঁড়িয়ে গেছেন। আন্দোলন করেছেন মান্নানের বিপক্ষে। যা শক্তিশালী করেছে জামায়াতকে। তবে জামায়াত এবং বিএনপি বর্তমানে প্রতিপক্ষ। এই দুর্বলতার সুযোগে প্রায়ই সোনারগাঁ এলাকায় মহাসড়কে মিছিল করছে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ধানের শীষ প্রতীক তুলে দেয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে মনির কাসেমীর কাছে। কিন্তু এর ফলে কয়েক ভাগে বিভক্ত হতে পারে বিএনপি। বিশেষ করে গিয়াস উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী এবং শাহ আলম যদি স্বতন্ত্র নির্বাচন করে তাহলে পৃথক হবার পাশাপাশি সহিংসতা হবার শংকাও এড়িয়ে যাওয়া যায়না। পাশাপাশি এই আসনে নির্বাচন করা এনসিপির প্রার্থীর ব্যানার ফেস্টুন টার্গেট করে ছিঁড়ে ফেলা এবং তার কর্মীদের উপর হামলা চাঞ্চল্য তৈরী করেছে ইতোমধ্যেই।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিএনপির নেতাদের কারণে কর্মীরা বহু ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। সেই সাথে আলাদা হয়েছে অতীত বিএনপি জামায়াত জোট। বিভক্ত রাজনীতির কারনে প্রতিটি নেতাই তার মাসল পাওয়ার বাড়াচ্ছেন। মাই ম্যান রাজনীতি বা আমার পেছনে কতজন কর্মী সেই রাজনীতি করছেন তারা। নিজেদের শক্তিমত্তা বাড়াতে যুক্ত করে নেয়া হচ্ছে সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, আওয়ামী লীগের কর্মী সহ নানান শ্রেনীর বিতর্কিতদের। এর ফলে সহজেই ভিড়ের মধ্যে মিশে যাচ্ছে ফ্যাসিবাদী শক্তি। যা দিনশেষে মানুষের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলছে প্রতিনিয়ত।



































আপনার মতামত লিখুন :