News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২

সাখাওয়াতের কম্পনে সিরিয়াস মাসুদ


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২২, ২০২৫, ০৭:০০ পিএম সাখাওয়াতের কম্পনে সিরিয়াস মাসুদ

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী নির্ধারণকে ঘিরে রাজনীতির মাঠে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বলে হঠাৎ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে পরে ফের নির্বাচনে থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া মাসুদুজ্জামান মাসুদ এখন আবার পুরোদমে মাঠে নেমেছেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই সক্রিয়তার পেছনে মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের সাম্প্রতিক তৎপরতা।

নির্বাচনে না থাকার ঘোষণা দিয়ে মাত্র তিন দিনের মাথায় সিদ্ধান্ত পাল্টানো মাসুদের অবস্থানকে ঘিরে যখন নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি, ঠিক তখনই অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান নিজেকে এই আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরতে শুরু করেন। দলীয়ভাবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না থাকলেও মনোনয়ন পেয়েছেন এমন দাবি করে বিভিন্ন মহল ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান তিনি। তার এই তৎপরতার পরই নড়েচড়ে বসেন মাসুদুজ্জামান মাসুদ।

নেতাকর্মীদের ভাষ্য, সাখাওয়াত রাজপথে নামার পর থেকেই মাসুদও আর চুপ থাকতে পারেননি। কয়েকদিনের নীরবতা ভেঙে গত ২১ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগে অংশ নেন তিনি। এতে করে আসনটিতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ‘বিএনপি বনাম বিএনপি’ লড়াইয়ের চিত্র।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে বড় ধরনের ভুল করেছেন মাসুদুজ্জামান মাসুদ। নিরাপত্তা ঝুঁকির অজুহাতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা শুধু নেতাকর্মীদের হতবাক করেনি, দলীয় হাইকমান্ডকেও বিব্রত করেছে। এরপর অনুসারীদের চাপের মুখে নাটকীয়ভাবে ফের নির্বাচনে থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তার রাজনৈতিক অবস্থান আরও দুর্বল হয়েছে।

এদিকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। শনিবার নগরীতে ফিরে তিনি মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু ও প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবু জাফর আহম্মেদ বাবুলের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর নিজেই দাবি করেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ব তাকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে নির্বাচনের নির্দেশনা দিয়েছেন। এই দাবির পরপরই জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গুঞ্জন ধানের শীষ হয়তো মাসুদের হাতছাড়া হয়ে সাখাওয়াতের দিকেই যাচ্ছে। যদিও দলীয়ভাবে এ বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত ঘোষণা আসেনি। ফলে অনিশ্চয়তা আরও ঘনীভূত হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে কোনো পূর্ব আলোচনা ছাড়াই সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন মাসুদ। হাইকমান্ডের অনুমতি ছাড়া এমন সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অসন্তুষ্ট হয়। এমনকি বিষয়টি নিয়ে তারেক রহমানও বিরক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র দাবি করেছে। দলটির দায়িত্বশীল নেতাদের মতে, এই পদক্ষেপ দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী। মাসুদের ঘোষণার পর তার অনুসারীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ১৮ ডিসেম্বর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। পরদিন নগরীর খানপুর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ওইদিনই তল্লায় নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে নির্বাচনে থাকার ঘোষণা দেন মাসুদ। তিনি বলেন, নেতাকর্মীরাই তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। তবে এই ঘোষণার দলীয় গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেছে।

মাসুদের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে তিনি মানসিকভাবে চাপে ছিলেন এবং দলের ভেতরের একটি অংশের প্রভাব তাকে দুর্বল করে ফেলে। বিষয়টি হাইকমান্ডকে জানানো হলেও কার্যকর সমাধান না আসায় তিনি হঠকারী সিদ্ধান্ত নেন, যার খেসারত এখন তাকে দিতে হচ্ছে।

Ad Placement 1
Ad Placement 2
Islam's Group