নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, আমাকে দল মনোনয়ন দিয়েছেন। এটা নিয়ে আর কোন বিভ্রান্তির সুযোগ নাই। আমি ইতোমধ্যে মাঠে নেমে গেছি। সর্বোচ্চ জায়গা হতে নিশ্চিত হয়েই আমি মাঠে নেমেছি। এখন আমার লক্ষ্য বিএনপির সকলস্তরের নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করা। ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করা বিএনপি ও এর সহযোগি সংগঠনের সকলের লক্ষ্য।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে সাখাওয়াত এসব কথা বলেন। তিনি ২০১৬ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষ নিয়ে লড়েছিলেন। আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় আলোচনায় আসা সাখাওয়াত ২০ ডিসেম্বর রাজধানীর গুলশানে বিএনপির এমপি প্রার্থীদের প্রশিক্ষণে উপস্থিত ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির প্রাথমিক তালিকাতে মাসুদুজ্জামানের নাম ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকে নিয়মিত প্রচারণা শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ করেই ১৬ ডিসেম্বর জানিয়ে দেন নির্বাচন করবেন না। এ অবস্থায় ২০ ডিসেম্বর মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান দাবী করেন তাঁকে দল মনোনয়ন দিয়েছেন। সে কারণেই তিনি সেদিন গুলশানে বিএনপির এমপি প্রার্থীদের প্রশিক্ষণে যোগ দেন। বিপরীতে মাসুদুজ্জামানও বলছেন কেন্দ্র থেকে এখনো মনোনয়ন পরিবর্তনের কোন নির্দেশনা দেননি। তিনিই নির্বাচন করবেন। ফলে সাধারণ ভোটার ও নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে সংশয়। প্রশ্ন উঠবে প্রকৃত মনোনয়ন কে পেয়েছেন।
সাখাওয়াত বলেন, ‘সারাদেশের মত নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনেও একজনের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি হঠাৎ করেই বলেছেন নির্বাচন করবেন না। যেহেতু তিনি নির্বাচন থেকে সরে গেছেন সেহেতু দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সবুজ সংকেত পেয়েই আমাকে প্রশিক্ষণে ডাকা হয়েছে। এবং সেদিন আমাকে নিশ্চিত করা হয়েছে মনোনয়নের ক্ষেত্রে। যারা প্রশিক্ষণে গিয়েছে তারাই চূড়ান্ত তালিকাভুক্ত। সুতরাং এখানে বিভ্রান্তির কোন সুযোগ নাই।’
১৬ ডিসেম্বর মাসুদ ঘোষণা করেন নির্বাচন করবেন না। তবে অনুসারীদের মিছিল ও চাপের মুখে তিনদিনের নাটকীয়তার পর ১৯ ডিসেম্বর ফের নির্বাচনে থাকার সিদ্ধান্ত নেন মাসুদ যা দলীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি আরও গভীর করেছে। এই পরিস্থিতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, যিনি শহরে ফিরে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু এবং প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল সঙ্গে বৈঠক করেন।
তিনদিনের এই রাজনৈতিক নাটকীয়তার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিব্রত অবস্থায় পড়ে গেছে। মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও দ্বিধাগ্রস্ত কার হয়ে তারা কাজ করবেন তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। দলের কোনো সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এই বিভ্রান্তি অব্যাহত থাকবে। নেতাকর্মীরা আশঙ্কা করছেন, শেষ পর্যন্ত আবার অন্য কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এই প্রার্থীর দ্বন্দ্ব ও নাটকীয়তা শুধু মনোনয়ন প্রসঙ্গের সীমায় সীমাবদ্ধ নয়। এটি স্থানীয় রাজনৈতিক কৌশল, নেতাকর্মী ভেতরের সম্পর্ক, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রভাব এবং নির্বাচন-পরবর্তী জনমতকে কেন্দ্র করে এক জটিল প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে। মাসুদের নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করে হঠাৎ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন, দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে সাখাওয়াত হোসেনের ভূমিকা সব মিলিয়ে নির্বাচনী উত্তেজনার একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।


































আপনার মতামত লিখুন :