অগ্নিদগ্ধে নিহতদের স্বজনদের আর্থিক সহায়তায় জেলা প্রশাসক

সিদ্ধিরগঞ্জে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে নিহতদের স্বজনদের পাশে দাঁড়িয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। একই সাথে অগ্নিদগ্ধ হয়ে যারা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেঁচে আছেন তাদেরও পরিবারের সদস্যদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বজনদের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দিয়েছেন। সেই সাথে এই ঘটনার যেন সুষ্ঠু তদন্ত হয় এবং প্রকৃত দোষীদের যেন বিচারের আওতায় আনা হয় সেই ব্যবস্থা গ্রহণেরও আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

এসময় অগ্নিকান্ডে নিহত হাসান (৪০), তার স্ত্রী সালমা বেগম (৩৫), মেয়ে জান্নাত (৪) ও ছেলে ইমামুদ্দিন (১ মাস); এই চার জনের জন্য হাসানের ছোট ভাই রাকিবুল ইসলামের কাছে ১ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। সেই সাথে হাসানের ১০ বছরের কন্যা সন্তান মুনতাহা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। তার চিকিৎসার জন্যও আরও ১৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।   

পাশাপাশি নিহত গার্মেন্টস শ্রমিক আসমা (৩৫) ও তাদের কলেজ পড়–য়া কন্যা তানজিনা আক্তার তিষা (১৭), শাশুড়ী তাহেরা বেগমের (৬০) জন্য স্বামী তানজীলুল ৭৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। সেই সাথে তাদের সন্তান আরাফাত (১৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন তার জন্য ১৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।

মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম রাজীব বলেন, অগ্নিকান্ডে আমাদের সরকারি তোলারাম কলেজের একজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে হারিয়েছি। এই ঘটনায় আমরা সুষ্ঠু তদন্ত চাই। সেই সাথে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি চাই। এখানে অবহেলার কারণে ৭টি তাজা প্রাণ ঝরে গেছে। আমরা আর কাউকে হারাতে চাই না সে লক্ষ্যে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। যেখানে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিলো ফ্রিজের গ্যাস বিস্ফোরণ হয়ে আগুন লাগে এবং ৯ জন অগ্নিদগ্ধ হয়। আমরা অত্যন্ত দুঃখিত অগ্নিদগ্ধ ৯ জনের মধ্যে ৭ জন মারা গেছে। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলে এই বিষয়ে কাদের গাফলতি আছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া যাবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে পরিবারের যে সকল সদস্য বেঁচে আছেন তাদের খোঁজ খবর নিয়েছি। তাদের পাশে থেকে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে ২ লক্ষ ৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছি। আমরা বলবো ঘরের ব্যবহার্য যে ইলেক্ট্রিক লাইন আছে যে গ্যাস লাইন আছে ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিজেদের সতর্ক থাকতে হবে। কখনও যেন অসতর্কভাবে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রাণ হারাতে না হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২২ আগস্ট রাত সাড়ে ৩ টায় সিদ্ধিরগঞ্জে আচমকা বিস্ফোরণে পাশাপাশি দুটি ঘরের একই পরিবারের ৯ সদস্য দগ্ধ হন। বর্তমানে তাদের মধ্যে দুইজন চিকিৎসীন অবস্থায় বেঁচে আছেন এবং বাকীরা সকলেই মারা গেছেন।