News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ০৯ মে, ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

ওসমানদের বিশ্বস্ত এজেন্ট


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | বিশেষ প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৫, ১০:১৯ পিএম ওসমানদের বিশ্বস্ত এজেন্ট

বুলবুল আহমেদ। শুরুটা করেন জমি ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে। সে জগতে তিনি অল্প দিনেই আলোচনায় চলে আসেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের বিশ্বস্ততা অর্জন করায় তাঁর হাত দিয়েই কেনা হয় শত শত বিঘা জমি। বাদ পড়েনি অনুসারীরাও। শামীম ওসমানের ডান হাত খ্যাত ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত শাহ নিজামেরও কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিতি পান তিনি। দিনরাত আড্ডা জমান দখলকৃত জমির উপর নির্মিত নম পার্কে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সেক্টরে টাকা প্রদানের কাজটিও করা হতো বুলবুলের হাত দিয়েই। ৫ আগস্টের পর ওসমান ভ্রাতৃদ্বয়রা পলাতক ও আত্মগোপনে থাকলেও দিব্যি রয়েছেন বুলবুল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, শামীম ওসমান যেসব স্থানে জমি ক্রয় করেছেন তার পুরো হিসেব রয়েছে বুলবুলের কাছে। ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিকেলে শহরের চাষাঢ়ায় বিএনপির মিছিল বের হওয়ার সময়ে জিয়া হলের সামনে কালো গাড়িতে বসেছিলেন শামীম ওসমান। পাশের সিটেই ছিলেন বুলবুল। তারা বেশ কিছুক্ষণ সেখানে অবস্থান করেন। পরে গাড়ি চলে যায় চাষাঢ়ার ভেতরে। সেখানে রামবাবুরপুকুরপাড় এলাকাতে সেলিম ওসমানের যে বাড়ি ছিল সেটা ইতোপূর্বে বিক্রি হয়ে গেছে। ফকির গ্রæপ ওই বাড়ি ক্রয় করেছে এ মর্মে সেখানে সাইনবোর্ডও সাটানো আছে। এ ফকির গ্রুপের সঙ্গেও রয়েছে বুলবুলের গভীর সখ্যতা।

সেলিম ওসমানেরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন বুলবুল। বন্দরের বিভিন্ন এলাকাতে সেলিম ওসমানের যে জমি রয়েছে সেগুলোও কেনা হয়েছে বুলবুলের মাধ্যমে। দলিল, পর্চা সহ জমি সংক্রান্ত নথিপত্র ভালো আয়ত্বে নেওয়ার কারণে ওসমানদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হন তিনি।

শুধু জমি বিক্রি না বরং প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক টাকার লেনদেনও এ বুলবুলের হাত ধরেই হতো। শ্যামল কান্তি ভক্ত নামের শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন সেলিম ওসমান। পরে তাঁর পক্ষে মাঠে নামেন হেফাজতের নেতারা। শহরের ডিআইটি মসজিদের সামনে সমাবেশ করেন হেফাজত। ওই সমাবেশের পর হেফাজতকে দেওয়া টাকাও বুলবুলের হাত দিয়েই প্রদান করা হয়।

সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে শহরের চাষাঢ়ায় সমাবেশ করে তার হাত পা ভেঙে শীতলক্ষ্যায় ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল হেফাজত। কথিত সেই সমাবেশের পুরো খরচ সহ নেতাদের হাদিয়ার টাকাও বুলবুলের হাতেই লেনদেন ঘটে।

সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান ছাড়াও শাহ নিজামের খুব কাছের ছিলেন বুলবুল। নিজামের সহযোগি মীর সোহেল, শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটু সহ সকলের জমির কাজগুলো বুলবুল করতেন। তবে সংশ্লিষ্টদের দাবী, বুলবুল এক সময়ে নিজামের নম পার্কেই বেশী অবস্থান করেন। পাগলা ও আলীগঞ্জ এলাকাতে বেশ কয়েকজনের বিরোধপূর্ণ জমিতে হানা দেয় নিজাম।

সম্প্রতি ফতুল্লায় মিছিল করতে গিয়ে মীর সোহেল আলীর ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদেরকে নম পার্কের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিজাম দেশ ছাড়লেও নিয়মিত তার এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। দেশে অনুসারীদের কাছে পাঠানো হচ্ছে অঢেল টাকা। এসব টাকায় আওয়ামী লীগের নামধারীরা বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করতে পারেন।  সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে বুলবুলের বিরুদ্ধেও তদন্ত চেয়েছেন অনেকে।

এ নিয়ে সম্প্রতি কথা হয় বুলবুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘অনেকেই আমাকে তাদের জমির কাগজপত্র দেয় দেখার জন্য। আমি কদাচিৎ সেগুলো দেখে পরামর্শ দেই। ওসমান পরিবারও আমাকে দিয়ে কিছু কাজ করিয়েছে সত্য কিন্তু আমি কোন অন্যায়ে জড়িত না।’

Islam's Group