নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির দুই যুগ্ম আহবায়কের কারিশমা সর্বত্র আলোচনার সৃষ্টি করেছে। তাঁরা হলেন জেলা মাসুকুল ইসলাম রাজীব (ভিপি রাজীব) ও মহানগরের আবুল কাউসার আশা। তারা দুইজনই ছাত্র-ছাত্রী সংসদের ভিপি দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তরুণ রাজনীতিবিদ হওয়ার সুবাধে বর্তমান সমর্থক ও ভক্তদের মধ্যে নজর পড়েছে। এরই মধ্যে আগামী বিএনপির রাজনীতিতে এই দুই আহবায়ক যুগ্ম পোক্ত অবস্থান বার্তা দিয়ে মহড়া দিয়ে যাচ্ছে দিনে দিনে।
এই দুই যুগ্ম আহবায়ক বিগত ১৬ বছর আওয়ামীলীগ সরকার আমলে একাধিবার গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘ সময়ে জেল খেটেছেন। বিভিন্ন কর্মসূচীতে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে লাগাতার বক্তব্যে মাধ্যমে রাজীব ও আশাকে ভবিষ্যত বিএনপি কান্ডারী ঘোষণা করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপিতে একাই লড়েছেন রাজীব ও আশা। জেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক দায়িত্ব পালন শেষে পরবর্তিতে আহবায়ক কমিটিতে ঠাঁই হয়নি রাজীবের। এমনকি ২০২৩ সালে জেলা বিএনপির সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়ে ছাড়তে হয় তাঁকে। এই নিয়ে স্বয়ং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্মেলনের ভিপি রাজীবকে নিয়ে প্রশংসা করেন। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর চলতি বছরের ২ ফেব্রæয়ারি জেলা বিএনপি আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ৫ সদস্যের মধ্যে দ্বিতীয় যুগ্ম আহবায়ক হন ভিপি রাজীব। তার দায়িত্ব নেয়া পর থেকে পুরো জেলা জুড়ে ক্লিন ইমেজে রাজনীতি চলমান রয়েছে।
বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতার সময় সরকারী তোলারাম কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়ে এখনো ক্লিন ইমেজে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন মাসুকুল ইসলাম রাজীব। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের ছয় মাসের মাথায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক হয়ে পুরো জেলাজুড়ে তৎপরতা শুরু করেছেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক ও জেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
রাজীব বলেছেন, আমরা আগে দেখেছি মানুষের সাথে জুলুম করার রাজনীতি। মানুষকে হুমকি ধামকি দিয়ে ভয় দেখিয়ে সমাজে একটি বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করা হত। এগুলোর বিন্দু পরিমাণও আগামীতে এই দেশের রাজনীতিতে হবে না। এলাকার নিরীহ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের উপর গত ১৬-১৭ বছর ধরে নির্যাতন চালানো হয়েছে। কিন্তু এখন আমরা আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, যারা এই এলাকায় বসবাস করেন কিংবা কর্মের জন্য আসেন, তাদের বিপদে জাতীয়তাবাদী দলের নেতাকর্মীরা আপনাদের পাশে থাকবে। বিএনপি নেতাকর্মীরা দেশের মানুষের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করবে, মানুষের প্রয়োজনেই তারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করবে। তাদের মনোভাব হবে জনগণের জন্য ভালোবাসা এবং কাজের মাধ্যমে সমাজে প্রভাব ফেলবে। সবার আগে দেশ এবং দেশের জনগণ। বিএনপির নেতাকর্মীদের দায়িত্ব থাকবে জনগণের পাশে দাঁড়ানো।
অন্যদিকে বাবা সাবেক এমপি ও মহানগর বিএনপি সভাপতি আবুল কালাম ক্লিন ইমেজে সাজিয়ে তুলেছেন ছেলে আবুল কাউসার আশা। ছাত্রদলের রাজনীতিতে ধাপে ধাপে আজ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নিয়ে হাজারো নেতাকর্মী ও সমর্থক সৃষ্টি করেছে। নারায়ণগঞ্জ কলেজ ছাত্রদল শাখার সভাপতি হয়ে ভিপি আশা রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠে। শহর ও মহানগর ছাত্রদলের একাধিক পদে শক্তিশালী রূপ নেন তিনি। নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হয়েও মহানগর বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক দায়িত্ব পান জনপ্রিয়তা কারণে। বর্তমান মহানগর বিএনপি আহবায়ক ও সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে একক রাজনীতিতে প্রশংসিত অবস্থানে রয়েছেন আশা। ইতোমধ্যে মহানগর ও বন্দর থানা বিএনপি একাধিক কর্মসূচী বিরুদ্ধে একাই লড়েছেন আশা। এতেও নারায়ণগঞ্জে সর্বস্থ মানুষের কাছে প্রশংসায় ভেসেছেন।
আশা বলেছেন, শহীদ জিয়া স্বাধীনভাবে রাজনীতি করতে সুযোগ করে দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক দলগুলো নেতাদের স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার চর্চা করা সুযোগ দিয়েছিলেন। আর বিগত ১৬ বছর বাকশাল সরকার গণমাধ্যম জিম্মি করে রেখেছিলেন। যারা ভিন্ন দলের রাজনীতি করতে তাদের বিরুদ্ধে হামলা মামলা গুম করা হয়েছে। আজকে নতুন বিপ্লব হয়েছে ৫ তারিখে, সেটা হলো ছাত্র-জনতার বিপ্লব। এর মাধ্যমে নতুন স্বাধীন রাষ্ট্র রূপ নিয়েছে, আমরা সবাই বৈষম্যমুক্ত থাকবো। আমরা এখন কি দেখতে পারছি, আওয়ামীলীগের জয়েন্ট করা অনেক লোক এখন নব্য বিএনপি লুটতরাজে আখড়া চালিয়ে যাচ্ছে। এমন ঘটনাগুলো নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। বিগত সরকার পুলিশ দিয়ে হামলা মামলা দিয়ে যেভাবে আমাদের হয়রানী করেছে। ১৭ বছর লড়াই করেছি, প্রয়োজনে আরো ১৭ দিন লড়াই করবো।
আপনার মতামত লিখুন :