ফের উত্তপ্ত বন্দর, ক্ষোভ বাড়ছে অনুসারীদের

আধিপত্য বিস্তার ও ইজিবাইক স্ট্যান্ড দখল নিয়ে ডাবল মার্ডারের পর বিএনপির সাবেক বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুলকে মারধর করে বিবস্ত্র করার ঘটনায় ফের উত্তপ্ত বন্দর উপজেলা। এবার বিদ্যুতের টেন্ডার নিয়ে এই মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মুকুলকে উদ্ধার করে। এদিকে এ ঘটনায় মুকুলের অনুসারীদের মধ্যে ক্ষোভ কাজ করছে।

তাদের দাবি, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বজলুর রহমান ওরফে ডন বজলুর নেতৃত্বে ৪০-৫০ জন অতর্কিতভাবে মুকুলের উপর হামলা চালিয়ে হেনস্তা করেন। এর আগে গত ২১ জুন রাতে বন্দর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার ও ইজিবাইক স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিএনপির দুই গ্রæপের সংঘর্ষে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বন্দর উপজেলায় দুদিন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অ্যাকশনে পরিস্থতি স্বাভাবিক হয়।

এদিকে, হামলার বিষয়ে স্থানীয়রা জানায়, ৪১২ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন হরিরামপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংস্কারে শ্রমিক নিয়োগের টেন্ডার পেয়ে দুপুর ১টার দিকে সেখানে কয়েকজন পুলিশসহ সাবেক চেয়ারম্যান মুকুল ও তার লোকজন যায়। এসময় তারা গাড়ি থেকে নামার পরপরই সেখানে থাকা সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বজলুর রহমানসহ লোকজন তাকে গালমন্দ করে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা তাকে বিবস্ত্র করে। এসময় সেখানে থাকা পুলিশ তাদের বাধা দিয়ে মুকুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করায়। এরপর তাকে শহরের সিলভার ক্রিসেন্টে নামের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

আহত আতাউর রহমান মুকুল বলেন, মদনপুরের হরিপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে টেন্ডার (দরপত্র) দাখিলের সিডিউল ছিল। সে কারণে তিনি সেখানে যান। এসময় সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বজলুর রহমান ওরফে ডন বজলুর নেতৃত্বে অতর্কিতভাবে তার উপর হামলা চালিয়ে তাকে হেনস্তা করা হয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করেন তিনি।

এর আগে তাকে মারধর একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি আতাউর রহমান মুকুলকে "আওয়ামী লীগের দোসর" আখ্যা দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছেন। তার পাঞ্জাবি প্যান্ট খুলে বিবস্ত্র করা হয়েছে। পরনে ঝুলন্ত ছেঁড়া জামা ধরে এক ব্যক্তি তাকে টেনে হেঁচড়ে কোথাও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এসময় পুলিশ তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে একটি অটো রিকশায় তুলে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়।

অভিযোগের ব্যাপারে সোনারগাঁ থানা বিএনপির সহসভাপতি বজলুর রহমান বলেন, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের দোসর আলাউদ্দিন একটি ঠিকাদারি নিয়েছে। তার পক্ষ নিয়ে মুকুল এসেছে কাজ করতে। এতে বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে হেনস্তা করেছে। আমার এ বিষয়ে কিছু জানা নেই।

এ বিষয়ে বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, সাবেক চেয়ারম্যান মুকুলসহ কয়েকজন সেখানে গেলে তারা উত্তেজিত হয়ে তাকে আওয়ামী লীগের দোসর বলে আখ্যা দিয়ে হামলা করে বিবস্ত্র করে। হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

হেনস্তার শিকার আতাউর রহমান মুকুল ইতিপূর্বে বন্দর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতিও ছিলেন। গত ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে তৎকালিন নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য এ কেএম সেলিম ওসমানের বিভিন্ন রাজনৈতিক জনসভায় অংশ গ্রহণ করার অভিযোগে আতাউর রহমান মুকুলকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।