জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) ৬ নং ওয়ার্ডে বিএনপির দু'পক্ষ ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়েছে। সংঘর্ষকালে ৬ রাউন্ড গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। তবে,গুলিবর্ষণের বিষয়টি উভয় পক্ষের পাশাপাশি প্রশাসনও অস্বীকার করেছেন। দলটির নেতাকর্মীদের এহেন কর্মকান্ডে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সংঘর্ষে জড়ানো দু'গ্রুপই জেলা বিএনপির আহবায়কের অনুসারী বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার ৩১ জুলাই রাত ৮ টায় সুমিলপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূনরায় অস্ত্রের মহড়া দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে ওই ওয়ার্ডের মানুষজন ভীত হয়ে আছেন।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক শাহ আলম মানিক ও বিএনপি সমর্থক রুহুল আমিনের সহযোগীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে বাবলু নামের এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। মূলত মারামারিতে জড়ানো উভয় পক্ষই পূর্বের দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটান।
এদিকে সংঘর্ষের পর হতে সুমিলপাড়া এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছেন। জনগণের সেবক না হয়ে নিজেদের অন্ত:কোন্দলে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, রুহুল আমিনসহ অন্তত ৫০-৬০ জনের একটা দলকে বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র হাতে মানিক মিয়ার বাড়ির দিকে আসতে দেখিছিলাম। আসামাত্রই দেখলাম ভাংচুর হয়। রুহুল আমিনের অনুসারীদের বলতে শুনেছি যে তাদের কোনো এক লোকককে শাহ আলম মানিক মারধর করেছে।
তিনি আরও বলে, বিগত সময়ে আমরা উভয় পক্ষকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলতে দেখেছিলাম। কাউন্সিলর মতির সঙ্গে দুজনেরই ভালো সম্পর্ক ছিল।
মারধরে আহত হওয়া বাবলু জানান, জমি নিয়ে আমাদের সঙ্গে শাহ আলম মানিকের ঝামেলা চলছিল। জমি উদ্ধারের জন্য মানিক ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া বৃহস্পতিবার বিকেলে জালকুড়ি এলাকা মানিকসহ তার সহযোগীরা আমাকে একদফা মারধর করে। তাদের সঙ্গে থাকা অস্ত্র দিয়ে আমাকে মারা হয়। এরপর একপর্যায়ে সেখান থেকে সুমিলপাড়া নিয়ে এসে একটি ট্রলারে উঠিয়ে হত্যা করে শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দিবে বলে জানান।
বিএনপি সমর্থক রুহুল আমিন বলেন, শাহ আলম মানিক জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বাবলু নামের এক লোকের উপর হামলা করেছিল। নিরীহ লোকটাকে আজকে বিকেলে পিস্তল দিয়ে মারধর করে রক্তাক্ত করায় আমরা তার কাছে এটার বিষয়ে জানতে গিয়েছিলান। তবে আমরা যাওয়ার খবর পেয়ে মানিক পালিয়ে যায়। আমি কারো উপর হামলা চালায়নি। মানিক মতির লোক সে আমাকে ফাঁসাতে এই কাহিনী করছে।
অন্যদিকে জেলা বিএনপির সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক শাহ আলম মানিক বলেন,আমি আমার বাড়ির সামনে বসে থাকা অবস্থায় রুহুল আমিন তার ৫০-৬০ জন সহযোগীদের নিয়ে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। তবে,কি কারণে এই ঘটনা ঘটেছে আমি নিশ্চিত নই। আর আমি লোকমুখে শুনেছি রুহুলের লোকজন গুলিবর্ষণ করেছে। তবে এটি আমি নিশ্চিত নই। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গেছে। আমার কাছে হামলার সিসি টিভি ফুটেজ রয়েছে।
জমি সংক্রান্ত বিরোধে এই ঘটনা কিনা জানতে চাইলে তিনি বলে, আমার সঙ্গে রুহুলের জমি নিয়ে কোনে বিরোধ নেই। জমি নিয়ে যার সঙ্গে বিরোধ সে আ:লীগের লোক সেটা সবাই জানে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, মারামারির ঘটনার পর আমি টিম পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।
গুলিবর্ষণ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলে, গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেনি এবং কোনো পক্ষ এখন পর্যন্ত মামলা কিংবা অভিযোগ করতে আসেনি।
আপনার মতামত লিখুন :