নারায়ণগঞ্জ শহরের হোসিয়ারী পল্লী হিসেবে পরিচিত পালপাড়া ও দেওভোগ এলাকাটি নারায়ণগঞ্জ-৫ সংসদীয় এলাকাতে। গত শনিবার ভোরে সেখানে অগ্নিকাণ্ডে ৩০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ব্যবসায়ীদের আর্তনাদে পুরো এলাকা এখনো থমথমে। হৃদয় পুড়ে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের, চোখের নোনা জ্বল এখনো ঝরছে। কিন্তু সেটা ছুঁতে পারেনি এ আসনের এমপি প্রার্থী মাসুদুজ্জামানকে। তিনদিনেও তিনি খবর নেননি দৃশ্যমানভাবে। পৌঁছায়নি কোন ধরনের সহায়তার আশ্বাস। ন্যুনতম পাশে দাঁড়ায়নি বিএনপির কোন পর্যায়ের নেতাও।
এর আগে কালীরবাজার ও হকার্স মার্কেটে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় তাৎক্ষনিক প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন মাসুদুজ্জামান। পরে হকারদের মাঝে অনুদানও দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু কিছুটা রহস্যজনক কারণেই পালপাড়ায় পৌছাতে পারেনি মাসুদুজ্জামান। তিনি দেশেই আছেন এবং গত তিনদিন ধরে বিভিন্ন এলাকাতে কর্মসূচীতেও যোগ দিচ্ছেন।
শনিবার ভোরে আগুন লেগে উকিলপাড়ার সমীকর মার্কেটের ৩০ টি দোকান পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫ টি ইউনিট কয়েক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এই মার্কেটে সুতা থেকে কাপড় তৈরির কারখানা (নিটিং), থানকাপড়ের দোকান ও বেশ কয়েকটি ছোট হোসিয়ারী কারখানা ছিলো।
আঞ্জুমান বেগম তাদেরই একজন। এই নারী পুড়ে যাওয়া একটি হোসিয়ারী কারখানায় কাজ করতেন। তিনি বলেন, সকালে মালিকের ফোন পাইয়া ঘুম ভাঙসে। সে কোনো সময় ফোন দেয়না। আজকে ভোরে যখন ফোন দিসে তখনই বুকটা চিপ দিসে। ফোন ধরসি পরে কয় আগুনে সব শেষ। আমরা তো কাম করি। এক দোকানে না হইলে আরেক দোকানে যামু। তবে মালিক মহাজন তো সেইটা পারবো না। আমার মালিকের ছোট একটা দোকান আছিল, সেটাই পুড়ে গেসে।
ফরহাদ নামে আগুনে পুড়ে যাওয়া সমীকর মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যবসায়ীর ছোট ভাই এ বিষয়ে বলেন, এমনও দোকান পুড়ে গেছে যেই দোকানে ৩০ লাখ টাকার মালামাল ছিলো। আরো যাদের দোকান পুড়েছে তাদেরও অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমার দোকান ছোট কিন্তু তারপরও আমার কয়েক লাখ টাকার মাল পুড়ে গেছে। এখন তো ভাই ব্যবসার মৌসুম চলছে, তাই এরমধ্যেই এতোবড় ধাক্কা খাবো সেটা ভাবতে পারিনি। দেখি এখন যদি কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন এ বিষয়ে বলেন, ২০ হাজার লিটার পানি ধারন ক্ষমতার বিশেষ একটি গাড়ি আছে আমাদের। আগুন নেভাতে আমরা সেই গাড়ি নিয়ে গেছি। কিন্তু যেখানে আগুন লেগেছে সেই এলাকায় তো ছোট গাড়িও প্রবেশ করতে পারেনা। তাদের নিজস্ব পানির কোনো রিজার্ভ নেই। আমরা সাথে সাথে ফোন পেয়ে সেখানে গিয়ে আনেক কষ্টে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। এতে আনুমানিক ৩ কোটি টাকা বা এর বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও আমরা প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছি।








































আপনার মতামত লিখুন :